খাবারে অ্যালার্জি:সচেতন না হলে হতে পারে মারাত্মক বিপদ
ওলিউল্লাহ তুহিন | প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৩:৫০

আজকাল শরীরে অ্যালার্জির সমস্যা প্রায় সবার কাছেই পরিচিত একটি বিষয়। বিশেষ করে খাবার থেকে হওয়া অ্যালার্জি, বা ‘ফুড অ্যালার্জি’, দিন দিন বেড়েই চলেছে। অনেকেই এ সমস্যাকে সাধারণ হজমের সমস্যা ভেবে বসে থাকেন, কিন্তু আসলে এটি শরীরের জটিল এক প্রতিক্রিয়া।
দুধ খাওয়ার পর বমি, চিংড়ি খেলেই গায়ে র্যাশ, বেগুনে গলা চুলকানো বা ইলিশ খেলেই বুক জ্বলার মতো সমস্যাগুলো ফুড অ্যালার্জির লক্ষণ। এগুলো সাধারণ হজমের সমস্যা নয়, বরং অ্যালার্জিরই স্পষ্ট ইঙ্গিত। অনেকেই ভাবেন অ্যালার্জি মানেই শুধু হাঁচি-কাশি বা ত্বকের সমস্যা, কিন্তু ফুড অ্যালার্জির উপসর্গ অনেক গভীর এবং বৈচিত্র্যময় হতে পারে।
কোন খাবার থেকে হতে পারে অ্যালার্জি?
প্রায় সব ধরনের খাবার থেকেই অ্যালার্জি হতে পারে।একজনের জন্য পুষ্টিকর কোনো খাবার, অন্যজনের শরীরে মারাত্মক প্রতিক্রিয়ার কারণ হতে পারে। যেমন:
দুগ্ধজাত খাবার: অনেকেরই দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারে অ্যালার্জি থাকে, যাকে বলে ল্যাক্টোজ ইনটলারেন্স। এতে দুধ হজমের জন্য প্রয়োজনীয় উৎসেচক ল্যাক্টেজ শরীরে উৎপন্ন হয় না।
গ্লুটেন সেনসিটিভিটি: গম, আটা, ময়দা, বার্লি বা দানাশস্য জাতীয় খাবার থেকে হতে পারে অ্যালার্জি।
ফলমূল ও ফাইবারজাত খাবার: অনেকে ফল থেকে অ্যালার্জিতে ভোগেন, যাকে ফ্রুক্টোজ অনটলারেন্স বলা হয়।
ফুড অ্যালার্জির মারাত্মক দিক: অ্যানাফাইল্যাক্সিস
অ্যালার্জির সবচেয়ে বিপজ্জনক রূপ হলো অ্যানাফাইল্যাক্সিস। এটি এক ধরনের তীব্র অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া, যার ফলে দেখা দিতে পারে: শ্বাসকষ্ট,গলা বা মুখ ফুলে যাওয়া,হঠাৎ করে রক্তচাপ কমে যাওয়া,হৃদস্পন্দনের হার বেড়ে যাওয়া এবং জ্ঞান হারানোর মতো গুরুতর অবস্থা।
কী করণীয়?
ফুড অ্যালার্জি রয়েছে কি না, তা নির্ভরযোগ্যভাবে জানতে অ্যালার্জি টেস্ট করানো জরুরি। এতে ধরা পড়বে ঠিক কোন খাবারে শরীর প্রতিক্রিয়া জানায় এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব হবে।
অনেকে অ্যালার্জি আছে ভেবে প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবার এড়িয়ে চলেন, যা শরীরে ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি তৈরি করে। সঠিকভাবে পরীক্ষা না করিয়ে শুধু অনুমানের ভিত্তিতে খাবার বাদ দেওয়া ঠিক নয়।
অ্যালার্জি টেস্টের মাধ্যমে বোঝা যাবে — শ্বাসকষ্ট, চুলকানি, বারবার পেটের সমস্যা বা গ্যাস হওয়ার জন্য আদৌ কোনো অ্যালার্জি দায়ী কি না। এতে অপ্রয়োজনীয় ওষুধ সেবন বা ভুল চিকিৎসার ঝুঁকিও কমে যাবে।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।