বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

রক্তে ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ এবং সচেতনতা

লাইফস্টাইল ডেস্ক | প্রকাশিত: ৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৩:০১

সংগৃহীত

লিউকেমিয়া হলো রক্তের এক ধরনের ক্যান্সার, যা মূলত হাড়ের মজ্জায় (Bone marrow) তৈরি হওয়া রক্তকণিকার বৃদ্ধিতে অস্বাভাবিকতা ঘটায়। এতে নতুন সাদা রক্তকণিকা (WBC) ঠিকভাবে পরিপক্ক না হয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং স্বাভাবিক রক্তকোষগুলোর জায়গা দখল করে নেয়। এর ফলেই দেখা দেয় নানা জটিল উপসর্গ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, লিউকেমিয়া শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ ক্যান্সার। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতিবছর প্রায় চার হাজার শিশু এ রোগে আক্রান্ত হয়। বাংলাদেশেও প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু এ রোগে ভোগে, যদিও সঠিক পরিসংখ্যান এখনো অজানা।

শিশুদের লিউকেমিয়ার সাধারণ লক্ষণ

লিউকেমিয়ার উপসর্গ ধীরে ধীরে কিংবা হঠাৎ দেখা দিতে পারে। প্রাথমিকভাবে এগুলো সাধারণ অসুস্থতা বলে মনে হতে পারে, তবে কিছু লক্ষণ নিয়মিত থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

১. অতিরিক্ত রক্তপাত ও সহজে দাগ পড়া:

লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুরা অল্প আঘাতেই রক্তপাত করতে পারে বা শরীরে নীলচে দাগ দেখা দেয়। নাক দিয়ে রক্ত পড়া এবং ত্বকে ছোট লালচে দাগ (পেটিচিয়া) সাধারণ লক্ষণ।

২. পেটব্যথা ও খিদে কমে যাওয়া:

লিউকেমিয়ার কোষ লিভার, প্লিহা বা কিডনিতে জমে সেগুলো বড় করে দেয়, ফলে পেটে ব্যথা, খিদে কমে যাওয়া ও ওজন হ্রাস ঘটে।

৩. শ্বাসকষ্ট:

থাইমাস গ্রন্থির আশেপাশে কোষ জমে গেলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। ফুসফুসে চাপ পড়লে কাশি বা শ্বাসকষ্ট বাড়তে পারে।

৪. বারবার সংক্রমণ:

অস্বাভাবিক সাদা রক্তকণিকা সংক্রমণ প্রতিরোধে অক্ষম হয়, ফলে শিশু ঘন ঘন ভাইরাল বা ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণে ভোগে।

৫. লিম্ফ নোড ফোলা:

গলার পাশে, বাহুর নিচে বা কোমরের অংশে লিম্ফ নোড ফুলে যেতে পারে। কারও কারও মুখ ও বুকে নীলচে ফোলাভাব দেখা দেয়।

৬. হাড় ও জয়েন্টে ব্যথা:

অস্বাভাবিক কোষের বৃদ্ধি হাড়ের ম্যারোতে চাপ সৃষ্টি করে, ফলে হাড় ও জয়েন্টে ব্যথা হয়।

৭. রক্তাল্পতা (অ্যানিমিয়া):

লাল রক্তকণিকা কমে যাওয়ায় শিশু ক্লান্ত, ফ্যাকাশে ও দুর্বল বোধ করতে পারে।

চিকিৎসা ও আশার বার্তা

বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধুমাত্র এসব লক্ষণ দেখা মানেই লিউকেমিয়া নয়, তবে সন্দেহ হলে দ্রুত রক্ত পরীক্ষা করানো জরুরি। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা শুরু হলে শিশুদের লিউকেমিয়ার অনেক ধরনই সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে এখন শিশুদের লিউকেমিয়া থেকে বেঁচে থাকার হার আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, সময়মতো রোগ শনাক্ত ও নিয়মিত চিকিৎসাই শিশুদের জীবন রক্ষার সবচেয়ে বড় উপায়।

 

 

নিফ্লা৭১/ওতু



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top