সাংবাদিকতার সাথে মুক্ত গণতন্ত্রও বিনষ্ট হয়ে গেছে
জনগণের বেঁচে থাকাটাই এখন কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে: মির্জা ফখরুল
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৬:২৮
বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, দেশে কোনো গণতন্ত্র ও নিয়ন্ত্রণ নেই। সরকারি কর্মকর্তারা কী করছেন, তাদের হিসাব-নিকাশও নেই। বর্তমানে যারা এমপি, চেয়ারম্যান আছেন, তাদের কাজের কোনো জবাবদিহিতা নেই। তারা যা খুশি তা করছেন। ফলে আজ গোটা সিস্টেম ধ্বংস হয়ে গেছে। অত্যন্ত পরিষ্কার করে বলছি, দেশের জনগণের বেঁচে থাকাটাই এখন কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে ঠাকুরগাঁও নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য যা যা করা দরকার সে কাজগুলো করে যাচ্ছে। জনগণের যে স্বার্থ, সেটাকে তারা বিবেচনা করছে না। এজন্য তারা মুক্ত গণতন্ত্রকে বহু আগেই বিনষ্ট করে ফেলেছে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, এই সরকারের অধীনে আমরা কোনো নির্বাচনে যাব না, যাচ্ছি না। এটা আমাদের অপরিবর্তনীয় সিদ্ধান্ত। একটি নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নই উঠে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, পুলিশের নতুন আইজিপি নিয়োগের ব্যাপারে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই। তত্ত্বাবধায়ক সকারের অধীনে নির্বাচন হলে বিএনপি এবং বিরোধী দলীয় যারা আন্দোলন করছে, তারা বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, মুক্ত সাংবাদিকতা বহু আগেই আওয়ামী লীগ ধ্বংস করেছে। তারা বিভিন্ন আইন করেছে, এর মধ্যে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন দিয়ে সাংবাদিকদের কণ্ঠ রোধ করা হয়েছে। সাংবাদিক হত্যা, নিপীড়ন চলছে। কেউ সাহস করে কিছু বলছে না, লিখছে না। যারা সুবিধাবাদী তারা ওই জায়গাগুলো থেকে সরতে চায় না।
তিনি আরও বলেন, আসল কথা গণমাধ্যমে উঠে আসবে না। আপনারা (সাংবাদিক) যারা লেখার চেষ্টা করেন তারাও জানেন, মূল বিষয় বাদ দিয়ে প্রচার হবে। ফলে সাংবাদিকতার সাথে সাথে মুক্ত গণতন্ত্রও বিনষ্ট হয়ে গেছে। গণমাধ্যমের পাশাপাশি সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাও সত্য বলার চেষ্টা করত। কিন্তু তাদের মধ্যে এক শ্রেণির সুবিধাভোগী তৈরি করা হয়েছে। যাদের সরকার অর্থ দিচ্ছে, জমি দিচ্ছে, বাড়ি-গাড়ি দিচ্ছে। এসব দিয়ে তাদের মুখ বন্ধ করে রাখছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশের জনগণের বেঁচে থাকাই এখন কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম তো আকাশচুম্বি হয়েছেই, সেই সাথে শিক্ষা ব্যয় অনেক বেড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচ অনেক বাড়ার সাথে শিক্ষার উপকরণের দাম অনেকাংশে বেড়ে গেছে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে একটা পণ্যে পরিণত করা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, রোগীরা হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা পাচ্ছে না। ওষুধের দাম বেড়েছে। কয়েকদিন আগে প্রায় ৫০টি ওষুধের দাম ৫৪ থেকে ১৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এটা মানুষের জন্য একটা ভয়ঙ্কর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ৪২ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করছে। সেখানে বাংলাদেশ উন্নত দেশ কীভাবে করবেন, মধ্যম আয়ের দেশ কীভাবে করবেন। এগুলো সম্ভব না। এখানে তো কারও কোনো নিরাপত্তা নেই। বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করা হয়েছে। ইউনিভার্সিটিকে, পুলিশকে ও প্রশাসনকে দলীয়করণ করা হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে ১২ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে। তাহলে শিক্ষাক কীভাবে শিক্ষা দেবেন।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।