আমি বাবাকে ভালোবাসি, বাংলাদেশে থাকতে চাই: লায়লা লিনা

রাজিউর রাহমান | প্রকাশিত: ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০৭:০৪

লায়লা লিনার সাথে তার বাবা

বাবা ইমরান শরীফের সঙ্গে বাংলাদেশে থাকতে চায় নাকানো লায়লা লিনা। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার নিম্ন আদালত প্রাঙ্গণে ৯ বছর বয়সী লিনা সাংবাদিকদের একথা জানায়।

বাংলাদেশি বাবা আর জাপানি মায়ের মধ্যে দুই শিশুর কাস্টডি নিয়ে বহুল আলোচিত মামলা চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। আজ সকালে বাবা-মা দুজনই আদালতে হাজির হয়েছেন মেয়েদের নিয়ে।

বাবার সঙ্গে থাকা লায়লা লিনা বলেছে, আমি বাবাকে ভালোবাসি। বাবার সঙ্গে বাংলাদেশে থাকতে চাই। মায়ের কাছে যাবো না।

এ সময় তার বাবা ইমরান শরীফ বলেন, লায়লা লিনা আমার কাছে থাকতে চায়। মায়ের কাছে যাবে না। ওর মা ওর ওপর চাপ সৃষ্টি করছে নিয়ে যাবার জন্য। কিন্তু ও যেতে রাজি না। আমি বিষয়টা নিয়ে উদ্বিগ্ন।

এদিকে, মা নাকানো এরিকো আদালতে এসেছেন বড় মেয়ে ১১ বছর বয়সী নাকানো জেসমিন মালিকাকে নিয়ে। ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচার দুরদানা রহমানের আদালতে ছোট মেয়ে লিনাকে মায়ের হেফাজতে নেওয়ার আবেদনের বিষয়ে শুনানি হবার কথা রয়েছে।

এরআগে, ২৯ জানুয়ারি বিকেলে ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান বাবা ইমরান শরীফের করা মামলা খারিজ করে জাপানি বংশোদ্ভূত ওই দুই শিশু মায়ের জিম্মায় থাকবে মর্মে রায় দেন।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, নাবালক বা নাবালিকা হেফাজত নির্ণয়ে তাদের মঙ্গল হবে এ বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। শারীরিক, মানসিক ও পারিপার্শ্বিক বিষয় তাদের বাবা নাকি মায়ের কাছে নিশ্চিত হবে মামলাটি নিষ্পত্তিতে এ বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জাপানি দুই সন্তান বাবার কাছে থাকা মঙ্গল হবে বিষয়টি প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।

বিচারক আরও বলেন, নাবালিকা দুই শিশুর সর্বশেষ বসবাসের স্থান জাপান। তাদের মা জাপানের চিকিৎসক। তাই মায়ের হেফাজতেই শিশুরা শারীরিক-মানসিক নিরাপত্তায় থাকবে বলে মনে করেন আদালত।

মা জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকোর সঙ্গে বাংলাদেশি প্রকৌশলী ইমরান শরীফের বিয়ে হয় ২০০৮ সালে। দাম্পত্য কলহের জেরে ২০২০ সালের শুরুতে বিচ্ছেদের আবেদন করেন এরিকো। এরপর ইমরান স্কুলপড়ুয়া বড় দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। ছোট মেয়ে জাপানে এরিকোর সঙ্গে থেকে যান। মেয়েদের জিম্মা পেতে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে গতবছর জুলাইয়ে বাংলাদেশে আসেন ওই জাপানি নারী।

জাপানি নারী নাকানো এরিকো দুই মেয়েকে ফেরত পেতে হাইকোর্টে রিট আবেদন করলে তাদের সমঝোতায় আসতে বলেন বিচারক। কিন্তু ওই দম্পতি সমঝোতায় না আসায় কয়েক মাস শুনানির পর হাইকোর্ট দুই সন্তানকে বাবার হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত দেয়। পাশাপাশি মা যাতে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে বাবাকে খরচ দিতে বলা হয়।

এদিকে, গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি ওই দুই শিশুর বিষয়ে আপিল বিভাগ সিদ্ধান্ত দেয় যে, তারা জিম্মায় থাকবে- তার নিষ্পত্তি হবে পারিবারিক আদালতে হবে এবং তার আগ পর্যন্ত শিশুরা মায়ের কাছেই থাকবে। এরপর আপিল বিভাগ থেকে মামলাটি পারিবারিক আদালতে আসে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top