মেধাশ্রম দিয়ে বিশ্বজয়ের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে
রাজিউর রাহমান | প্রকাশিত: ৭ মার্চ ২০২৩, ০৩:৩২
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও মেধাকে দেশের মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করতে হবে। তিনি বলেন, মেধাশ্রম দিয়ে নিজেদের তৈরি হতে হবে এবং বিশ্বজয় করার লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে।
ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের এই পৃষ্ঠপোষক আরও বলেন, এরইমধ্যে আমরা শেখ হাসিনার হাত ধরে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছি। তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব দিয়ে ও বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপন করে তথ্য প্রযুক্তি বিকাশের ধারা শুরু করেছিলেন।
৭২ থেকে ৭৫-এর মধ্যে তথ্য প্রযুক্তির বিকাশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, ৯৭ থেকে ২০০১ এবং পরবর্তীতে ২০০৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত তথ্য প্রযুক্তি বিকাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ইতিহাসে যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটিয়েছেন।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে যে রূপান্তর ঘটিয়েছেন তার একটি পরিসংখ্যান দেন ডাক ও টেলিয়োগাযোগ মন্ত্রী। মোস্তাফা জব্বার বলেন, ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল মাত্র সাড়ে ৭ লাখ। অথচ আজকের দিনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ কোটিতে। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে আমরা ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করতাম ৮ জিবিপিএস এবং এখন ৪ হাজার ১৪০ জিবিপিএস।
মন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে। দেশে বর্তমানে চাহিদার শতকরা ৯০ ভাগ মোবাইল ফোন উৎপাদন করছি আমরা। বাংলাদেশের উৎপাদিত মোবাইল ফোন আমেরিকাসহ উন্নত বিশ্বে এখন রপ্তানী হচ্ছে। আশার কথা হচ্ছে, আমাদের দেশ ব্যান্ডউইথ এখন ভারতে রপ্তানী করছে। পার্শবর্তী কয়েকটি দেশ আমাদের ব্যান্ডউইথ নেয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে আমরা তথ্য প্রযুক্তিকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নেব।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, মানুষের সভ্যতা তৈরি করতে হলে দক্ষতা ও সৃজনশীলতা দিয়ে তাদেরকে মানবসম্পদে পরিণত করতে হবে। তিনি ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, জনদুর্ভোগকে জনশক্তিতে পরিণত করতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রটা তোমাদেরকেই এগিয়ে নিতে হবে। আর আমি মনে করি যারা আমার সামনে বসে আছে তারা বাংলার ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ মেধাবী প্রজন্ম। মন্ত্রী বলেন, আজকের ছাত্রছাত্রীরাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আগামি দিনের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। তিনি ফিজিক্স অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রীদের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ১৩তম ফিজিক্স অলিম্পিয়াড পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খ্যাতনামা শিশুসাহিত্যিক, সাইন্সফিকশন লেখক অধ্যাপক ড. মো. জাফর ইকবাল, ন্যাশনাল অলিম্পিয়াডের অন্যতম ফাউন্ডার অধ্যাপক ডঃ মুহাম্মদ কায়কোবাদ। অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক সুলতানা সফি, পদার্থবিভাগের বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সুপ্রিয়া সাহা এবং ডাচ বাংলা ব্যাংকের ডিএমডি এহতাসিমুল হক খানসহ অনেকে।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের উৎসাহ প্রদান করেন ড. জাফর ইকবাল। তিনি বলেন, ছোটবেলায় আমি পুরস্কার পাইনি। তবে বড় হয়ে বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করছি। তিনি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সকলকে আরও বেশি বই পড়ার পরামর্শ দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সুলতানা সাফী বলেন, প্রতিযোগিতা করে বিজয় অর্জন করা অত্যন্ত আনন্দের ব্যাপার। তবে কেউ হাল ছাড়বে না। প্রাণপণে চেষ্টা চালাতে হবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রবেশ করার।
প্রথম আলোর ম্যাগাজিন কিশোর আলো পত্রিকার সম্পাদক আনিসুল হক বলেন, সবচেয়ে সুন্দরভাবে নিজের কাজটা করতে পারলেই দেশের জন্য কাজ করা হয়ে যাবে।
পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বিজয়ী শিক্ষার্থীদেরকে ক্রেস্ট ও স্মারক প্রদান করে বাংলাদেশ অলিম্পিয়াড কমিটি। অসামান্য মেধার স্বীকৃতিস্বরূপ বিজয়ী ছাত্রছাত্রীদেরকে আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডগুলোতে বাংলাদেশকে উপস্থাপনের সুযোগ করে দেয়া হবে বলে আশ্বাস দেয় আয়োজক কমিটি।
বিষয়: মোস্তাফা জব্বার ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মেধাশ্রম বিশ্বজয় ফিজিক্স অলিম্পিয়াড ক্ষুদে শিক্ষার্থী স্মার্ট বাংলাদেশ News newsflash71
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।