আল্লাহর কাছে বিচার দিলাম: কক্সবাজারের জেলা জজ

হাইকোর্টে ক্ষমা চাইলেন কক্সবাজারের জেলা জজ, কিন্তু কেন

রাজিউর রাহমান | প্রকাশিত: ২১ জুলাই ২০২৩, ০০:১৩

ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈলকে উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেছেন, আপনি একজন সিনিয়র জেলা জজ। দীর্ঘদিন বিচারকাজ করেছেন। আপনি আদালতের আদেশ টেম্পারিং করেছেন। এতে আপনার বুক কাঁপল না? টেম্পারিং করে আপনি ভুল করেননি, জেনে-বুঝে আপনি ক্রাইম করেছেন। বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেল সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

এদিন, শুনানিতে জেলা জজের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, আমরা কনটেস্ট করতে চাই না। আমরা আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইছি। আমরা খুবই অনুতপ্ত।

এ পর্যায়ে হাইকোর্ট জেলা জজকে ডায়াসের সামনে ডেকে আদেশ টেম্পারিংয়ের বিষয়ে জানতে চান। তখন জেলা জজ বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে বলেন, ‘ভুলে এটা হয়েছে’। তখন আদালত বলেন, ‘আপনি ভুল করেননি, জেনে-বুঝে ক্রাইম করেছেন।’

এ সময় তার আইনজীবীরা আবারও ক্ষমা চাইলে হাইকোর্ট বলেন, ‘আপনারা ক্ষমা চাইছেন। অনুতপ্ত হচ্ছেন। কিন্তু জেলা জজের মধ্যে তো কোনো অনুশোচনা নেই। তিনি অনুতপ্তও নন। মন থেকে অনুশোচনা আসতে হয়।’

শুনানি শেষে আদালত কক্ষ থেকে বের হলে সাংবাদিকরা তার বক্তব্য জানতে চান। তখন তিনি বলেন, ‘আল্লাহ পাকের কাছে বিচার দিলাম। যা করার আল্লাহ পাক করবেন। আল্লাহ পাক ভালো বোঝেন।’

চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন নামঞ্জুর হওয়া আসামিদের আইন ভঙ্গ করে আদেশে মিথ্যা তথ্য লিখে একইদিনে জামিন দেওয়ার ঘটনায় কক্সবাজারের জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈলের বিরুদ্ধে আদেশের জন্য আগামী ২৭ জুলাই দিন ধার্য করেন আদালত।

জমি দখল নিয়ে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটনোর অভিযোগে মিঠাছড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ ভুট্টোসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে একই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান খোদেস্তা বেগম রিনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ১ ও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী দ্রুত বিচার আদালতে নালিশি মামলা করেন।

এ মামলায় ১১ এপ্রিল আসামিদের ছয় সপ্তাহের জামিন দিয়ে কক্সবাজারের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের সেই নির্দেশে ২১ মে আসামিরা আত্মসমর্পণ করে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে জামিন চান। আদালত ৯ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।

একই দিন আসামিরা কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। তখন জেলা ও দায়রা জজ তাদেরকে জামিন দেন। এ জামিন আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন চেয়ারম্যান খোদেস্তা বেগম রিনা। তার আবেদনের শুনানি নিয়ে ব্যাখ্যা জানাতে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top