• ** জাতীয় ** আমরা জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করেছি : শেখ হাসিনা ** আবারও তিন দিনের ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি ** চুয়াডাঙ্গায় হিট স্ট্রোকে দুই নারীর মৃত্যু ** ইউআইইউ ক্যাম্পাসে ‘কৃত্রিম বৃষ্টি’ নিয়ে তোলপাড় সারাদেশ ** সিলেটে মসজিদে যাওয়ার পথে বজ্রপাতে ইমামের মৃত্যু ** নরসিংদীতে হিট স্ট্রোকে যুবকের মৃত্যু ** সব ধরনের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন : https://www.newsflash71.com ** সব ধরনের ভিডিও দেখতে ভিজিট করুন : youtube.com/newsflash71 ** লাইক দিন নিউজফ্ল্যাশের ফেসবুক পেইজে : fb/newsflash71bd **


জাতির সূর্যসন্তানদের স্মরণের দিন

জাতির সেই সূর্যসন্তানরা বেঁচে থাকবেন হৃদয়ে শ্রদ্ধার সঙ্গে

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬:৫৭

ছবি: সংগৃহীত

১৪ ডিসেম্বর, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র দুই দিন আগে ঘটেছিল এক মর্মান্তিক হত্যাযজ্ঞ। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের পরাজয় নিশ্চিত জেনে লিপ্ত হয়েছিল ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে। স্বাধীনতাকামী বাঙালি জাতি যেন মেধা-মননে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে, সে জন্য তারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যায় মেতে ওঠেছিল। এই হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের এদেশীয় দালালরা চেয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধবংস করতে।

যুদ্ধের শুরু থেকেই পাকহানাদার  বাহিনী যে নৃশংস হত্যাযজ্ঞের সূচনা করেছিল, শেষদিকে এসে পরাজয়ের আগ মুহূর্তে তা রূপ নেয় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডে। হানাদাররা তাদের এদেশীয় দোসর আলবদর, আলশামস ও রাজাকারদের সহযোগিতায় হত্যা করেছিল শিক্ষক, লেখক, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও চিকিৎসকদের। বিজয়ের চূড়ান্ত মুহূর্তে বাঙালি মেধার এই নৃশংস নিধনযজ্ঞ গোটাবিশ্বকেই হতবিহ্বল করে তোলে।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে রয়েছেন- অধ্যাপক মুনির চৌধুরী, ডা.আলিম চৌধুরী, অধ্যাপক মুনিরুজ্জামান, ড. ফজলে রাব্বী, সিরাজ উদ্দিন হোসেন, শহীদুল্লাহ কায়সার, অধ্যাপক জিসি দেব, জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা, অধ্যাপক রশীদুল হাসান, ড.আবুল খায়ের, ড.মুর্তজা, সাংবাদিক খন্দকার আবু তাহের, নিজামউদ্দিন আহমেদ, এসএ মান্নান (লাডু ভাই), এ এন এম গোলাম মোস্তফা, সৈয়দ নাজমুল হক, সেলিনা পারভিনসহ অনেকে।

মুক্তিযুদ্ধকালীন পাকিস্তান রাষ্ট্রশক্তি এখানে একটি দীর্ঘ পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যমূলক অপরাধ সংঘটিত করেছে। এই অপরাধের নাম জেনোসাইড। জেনোসাইডের উদ্দেশ্য থাকে একটা জনগোষ্ঠীর পরিচয় মুছে ফেলা আর এই উদ্দেশ্যের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে জেনোসাইড কালে বুদ্ধিজীবী নিধনের কারণ।

বাঙালি বুদ্ধিজীবীরা তাঁদের সৃষ্টিশীলতা দিয়ে জাতির পরিচয় নির্মাণে অনুঘটক হয়ে উঠেছিলেন, যে পরিচয় পাকিস্তান রাষ্ট্রের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছিল। জাতি পরিচয় মুছে ফেলার ধ্বংসযজ্ঞ ‘জেনোসাইড’-এ তাই নিধনের শিকার হয়েছিলেন বুদ্ধিজীবীরা।

বিশ্বাসঘাতকের অনেকেই পঁচাত্তর পরবর্তী স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হয়েছে। কেউ কেউ মন্ত্রী হয়ে গাড়িতে উড়িয়েছে বাংলাদেশের পতাকা। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের হত্যার বিচারের দাবি ওঠে স্বাধীনতার পরপরই। কিন্তু ’৭৫ পরবর্তী শাসকরা বিচার দূরে থাক, খুনিদের প্রতিষ্ঠিত করেছে সর্বত্র।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসেই বিচারকাজ শুরু করেন। একাত্তরে যারা হত্যাযজ্ঞ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনে জড়িত ছিল, তাদের বিচার প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে শেষ হয়েছে। এরইমধ্যে কাদের মোল্লা, কামারুজ্জামান, সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদ, নিজামী, মীর কাশেম আলীর মতো ঘাতকদের দেশের সর্বোচ্চ আদালতের চূড়ান্ত রায়ে ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।

তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধীদের অপতৎপরতা ও অপকর্ম আজও শেষ হয়নি। স্বাধীনতাবিরোধী নানা ষড়যন্ত্র এখনও চলছে দেশ ও বিদেশে।

তাই বিজয়ের মাসে শপথ নিতে হবে। রুখে দিতে হবে দেশবিরোধী অপতৎপরতাকারীদের। উপড়ে ফেলতে হবে তাদের হিংস্র বিষদাঁত। বুদ্ধিজীবীদের হত্যাযজ্ঞে যারা জড়িত ছিল, তাদের শাস্তি নিশ্চিত করার মাধ্যমেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা নিবেদন সম্ভব।

আলোকবর্তিকা হয়ে শোষিত আর বঞ্চিত বাঙালিকে মুক্তির পথে নিয়ে গিয়েছিলেন যারা, অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছেন নিজের প্রাণ, জাতির সেই সূর্যসন্তানরা বেঁচে থাকবেন হৃদয়ে শ্রদ্ধার সঙ্গে।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top