হলুদ ফুলকপিতে কৃষকের মুখে রঙিন হাসি

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২৯ জানুয়ারী ২০২৪, ১৪:৪৭

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বায়নের যুগে গোটা পৃথিবী এখন হাতের মুঠোয়। ফলে এক দেশের ভাষা, সংস্কৃতি, জীবনযাত্রা সহজেই অন্য দেশের জীবনযাত্রার সাথে একাট্টা হয়ে যায়। ভিনদেশের অনেক খাবার এখন নিজেদের খাবার বলেই মনে হয়। যেমন ধরুন, হলুদ ফুলকপি। 

সাদা ফুলকপির চেয়ে পুষ্টিগুণ বেশি। দেখতেও সুন্দর। শুধু জৈব সার ব্যবহার করেই এই ফুলকপি চাষ করা যায়। চীনে এ জাতের ফুলকপি সালাদ হিসেবে খাওয়া হয়। অন্য ফুলকপির চাষের যে পদ্ধতি, একই পদ্ধতিতে চাষ করা হয়। খরচ ও সময় একই। পাশাপাশি শুধু জৈব সার ব্যবহার করেই এই ফুলকপি চাষ করা যায়। স্থানীয় হাটবাজার রয়েছে এর ব্যাপক চাহিদা।

কিশোরগঞ্জ পাকুন্দিয়া উপজেলা কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার চন্ডিপাশা ব্লক এ এই রঙ্গিন ফুলকপিটা আবাদ করেছি এই রঙিন ফুলকপিটা অত্যন্ত সুন্দর ও কালারফুল হওয়ায় বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শনার্থীরা এসে ভিড় করছে, ছবি ওঠাচ্ছে।

এই ফুলকপিটা এ বছর অনেক কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলছে। এই ফুলকপিটা বাজারে অনেক চাহিদা। এছাড়া এলাকার অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করছে আগামীতে এই ফুলকপিটা তারা আবাদ করবে। এই ফুলকপিটা অন্যান্য কপির মতোই আবাদ করা যায়।

জৈব সার ব্যবহার করে ও কম পরিমাণে রাসায়নিক সার দিয়ে এটি আবাদ করা হয়েছে। আমি মাঠ থেকে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কিভাবে সুন্দরভাবে চাষাবাদ করা যায় সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এই ফুলকপিটা কালারফুল হওয়ার কারণে বাজারে এটার আকর্ষণ আছে।

বিঘা প্রতি কৃষকরা যদি এটা আবাদ করতে পারে তাহলে দুই লাখ থেকে আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবে। বিশেষ করে কম সময়ে এই ফুলকপিটা আবাদ করা যায় মানে উত্তোলন করা যায়। বিষমুক্ত হওয়ায় এই ফুলকপিটা খেতেও খুব সুস্বাদু।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ নূরে আলম জানান, শীতকালে অত্যন্ত জনপ্রিয় সবজি পাকুন্দিয়া উপজেলার চলতি মৌসুমে ২শ হেক্টর জমিতে ফুলকপি আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৮ হেক্টর জমিতে আমরা রঙিন ফুলকপির আবাদ করেছি।

রঙিন ফুলকপি দেখতে অত্যন্ত সুন্দর এবং ভোক্তা পর্যায়ে অত্যন্ত জনপ্রিয় পাশাপাশি সাদা কপির চেয়ে পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। আমাদের কৃষি বাজারে সাধারণ ফুলকপি যেখানে ৪০ টাকা ৫০ টাকা বিক্রি হয় এই ফুলকপিটি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে।

অধিক দাম পাওয়ার কারণে কৃষক পর্যায়ে এই ফুলকপি অধিক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আমরা আশা করছি আগামী বছর আমরা প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে এই ফুলকপি আবাদ বৃদ্ধি করতে পারব।

চলতি মৌসুমে আমরা পরিবেশবান্ধব উপায়ে নিরাপদ ফসল উৎপাদনের আওতায় চন্ডীপাশায় আমরা একটি প্রদর্শনী করেছিলাম। আমরা ইতোমধ্যেই রঙিন ফুলকপি বাজারে বাজারজাত করা শুরু করেছি। আশা করছি আমাদের সমগ্র উপজেলাতে কৃষক পর্যায়ে দ্রুত এই কপি জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। 

কৃষকরা বলছেন, কৃষি অফিস থেকে নতুন ‘ক্যারোটিনয়েড’ জাতের হলুদ ফুলকপির বীজ সংগ্রহ করে চারা করা হয়েছে। এরপর জৈব সার, পোকাদমনে বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। চারা রোপণের ৬৫ থেকে ৭০ দিনের মধ্যে জমিতে পূর্ণাঙ্গভাবে ফসল পাওয়া যায়। এই ফুলকপি বাজারে নেওয়া মাত্রই বিক্রি হয়ে যায়। দামও ভালো পাওয়া যায়।

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top