শরীফ-শরীফার গল্পে অসংগতি বাদ দেওয়ার সুপারিশ কমিটির

সুজন হাসান | প্রকাশিত: ১৭ মে ২০২৪, ১৭:৫৬

ছবি: সংগৃহীত

কমিটির সদস্য ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর মুফতি কফিলউদ্দিন সরকার সালেহী বলেন, আমরা অনেকগুলো অসংগতি পেয়েছি গল্পটিতে। সে কারণে এটি বাদ দিতে সুপারিশ করেছি।

দীর্ঘ পর্যালোচনার পর সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের আলোচিত শরীফার গল্প বাদ দিতে সুপারিশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি।

এই গল্পে অসংগতির চিত্র তুলে ধরে মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠিয়েছে কমিটি। এখন পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবে মন্ত্রণালয়।
কমিটির সদস্য ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর মুফতি কফিলউদ্দিন সরকার সালেহী বলেন, আমরা অনেকগুলো অসংগতি পেয়েছি গল্পটিতে। সে কারণে এটি বাদ দিতে সুপারিশ করেছি। পাঠ্যবই থেকে যেন বিষয়টি বাদ দেওয়া হয়, আমাদের সে সুপারিশ আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি।

মানুষে মানুষে সাদৃশ্য ও ভিন্নতা বিষয়ে ধারণা দিতে সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে জায়গা পেয়েছিল শরীফার গল্প। বইয়ের ৩৯ ও ৪০ নম্বর পৃষ্ঠায় অন্তর্ভুক্ত ওই পাঠে শিক্ষার্থীরা পড়বে নারী-পুরুষের বাইরে তৃতীয় লিঙ্গের’ মানুষ বা হিজড়াদের জীবনের কথা। পাঠ্যপুস্তকটির পাঠের এ অংশ নিয়েই চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তুমুল বিতর্ক চলে দেশজুড়ে, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

এ বিতর্কের সূচনা করেন আসিফ মাহতাব, যিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক ছিলেন।
রাজধানীতে নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে এক আলোচনায় সমকামিতার উসকানির’ অভিযোগ তুলে তিনি পাঠ্যবইয়ের ওই অংশের পাতা ছিঁড়ে ফেলেন তিনি। সেই ভিডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

বইটি সম্পাদনার সঙ্গে যুক্তরা বলেন, সেখানে হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের কথা বলা হয়েছে, ট্রান্সজেন্ডার শব্দটি কোথাও লেখা হয়নি। সুতরাং এ পাঠকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা দেওয়ার সুযোগ নেই।

শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, হিজড়াদের অধিকার বাংলাদেশে আইনিভাবে স্বীকৃত। তারাও এ দেশের নাগরিক। তারপরও শরীফার পাঠ নিয়ে যদি কোনো বিষয় থাকে, সেটা পর্যালোচনা করার সুযোগ আছে।

তবে সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের রচনা ও সম্পাদনার দায়িত্বে থাকা আবুল মোমেনের দাবি, ট্রান্সজেন্ডার, থার্ড জেন্ডার- এসব বিষয়ে নানা তর্ক-বিতর্ক থাকলেও শিশুরা যতটুকু বুঝতে পারবে, ততটুকু জানানোর কাজটি পাঠ্যবইয়ে করা হয়েছে।

আবুল মোমেন বলেছিলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে অন্তর্ভুক্তি। সমাজে ধর্মীয় সংখ্যালঘু বা প্রান্তিক পর্যায়ের যারা আছেন বিভিন্ন পেশার মানুষ, তাদের অন্তর্ভুক্ত করা।

বিতর্ক আলোচনার মধ্যে শরীফার গল্প পর্যালোচনায় পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কমিটি গঠনের পাঁচমাস পর তারা সুপারিশ পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে।

ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুর রশীদ এই কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন-ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর কফিল উদ্দীন সরকার, এনসিটিবির সদস্য মোহাম্মদ মশিউজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআরের পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল হালিম এবং ঢাকা আলীয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রশিদ।

তবে গল্পটির কোথায় কি ধরনের অসংগতি মিলেছে, তা জানতে কমিটির তিনজন সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা মন্তব্য করতে রাজি হননি। সূত্র: বিডিনিউজ ২৪




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top