ব্যারিকেড ভেঙে বঙ্গভবনের দিকে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৪ জুলাই ২০২৪, ১৭:০৭
কোটা সংস্কারের দাবিতে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দিতে গণপদযাত্রা করছে আন্দোলকারীরা। পরে পদযাত্রাটি সচিবালয়ের সামনে আসলে পুলিশের বাধার সম্মুখীন হয়। এ সময় পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে বঙ্গভবনের দিকে রওনা হয় শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১৪ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে বঙ্গবভনের দিকে রওনা হন শিক্ষার্থীরা। পুলিশের দেয়া ব্যারিকেড ভেঙে হাজার হাজার শিক্ষার্থী ভেতরে প্রবেশ করেন। এ সময় পুলিশ বাধা দিতে আসলেও তা উপেক্ষা করেই এগিয়ে যান আন্দোলনকারীরা।
এর আগে দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে এ পদযাত্রা শুরু হয়। একইসঙ্গে আন্দোলনে থাকা ঢাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও এই গণপদযাত্রায় অংশ নিয়েছেন। কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে রাজু ভাস্কর্য-শাহবাগ-মৎস্য ভবন-হাইকোর্ট-বায়তুল মোকাররম হয়ে জিরো পয়েন্টে আসেন তারা।
অন্যদিকে বঙ্গভবন অভিমুখে বাহাদুর শাহ পার্কের সামনে দিয়ে, জজ কোর্ট এলাকা হয়ে রায়সাহেব বাজার মোড়, তাঁতিবাজার মোড় হয়ে জিরো পয়েন্ট মোড়ে গণপদযাত্রা নিয়ে আসেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যায় সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের দাবি রাষ্ট্রপতি বরাবর তুলে ধরতে বঙ্গভবনের উদ্দেশে গণপদযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণা দেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল।
ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বড় বিক্ষোভ হয়। কোটাব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ কোটা থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। পরে সে বছরের ৪ অক্টোবর কোটাপদ্ধতি বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
এর মাধ্যমে ৪৬ বছর ধরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে যে কোটাব্যবস্থা ছিল, তা বাতিল হয়ে যায়। পরে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করেন। সেই রিটের রায়ে চলতি বছরের ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
এরপর চাকরিপ্রত্যাশী সাধারণ শিক্ষার্থীরা মাঠে নামেন। টানা কয়েকদিন আন্দোলনের পর গত ৯ জুলাই কোটা পুনর্বহাল নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী।
পরেরদিন হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেন আপিল বিভাগ। এ আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে। তবে শিক্ষার্থীরা আপিল বিভাগের এই আদেশ প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।