রোকেয়া হলের মেয়েদের মুখে ‘রাজাকার’ স্লোগান, দুঃখ লাগে : প্রধানমন্ত্রী
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৫ জুলাই ২০২৪, ২১:০৭
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের মেয়েদের মুখ রাজাকার স্লোগান শুনে দুঃখ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, দুঃখ লাগে যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের মেয়েরাও 'রাজাকার' স্লোগান দিচ্ছেন৷ তারা কী ১৯৭১ সালে এ হলের ইতিহাস জানেন?
সোমবার (১৫ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সরকারের মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি এবং শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সরকারপ্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নই আমাদের লক্ষ্য৷ দুঃখ লাগে যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের মেয়েরাও শুনি 'তারা রাজাকার' স্লোগান দিচ্ছেন৷ তারা কী ৭১ এ এ হলের ইতিহাস জানেন? শিক্ষার্থীরা কী জানেন, কী পাশবিক নির্যাতন পাকিস্তানি হানাদাররা রোকেয়া হলেই করেছিল! রাস্তায় রাস্তায় লাশ পড়ে থাকতো সে সময়৷ এসব শিক্ষার্থীরা সেসব দেখেননি৷ কী শিক্ষা তারা নিলো...আসলে এসব জানে না বলেই শিক্ষার্থীরা, নিজেদের রাজাকার বলতে লজ্জা পাচ্ছে না৷
তিনি বলেন, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ যেমন গড়তে চাই, তেমনি কর্মকর্তাদের এ দিকটাও দেখতে হবে৷ যেখানে অনিয়ম হবে আপনারা যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন৷ সমাজটাকে আরও শুদ্ধ করতেই দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে না সরকার৷ যে যেখানে যাই করুক না কেন, দুর্নীতির দায় চাপানো হয় সরকারের ওপর৷ তবে দুর্নীতি বিরোধী অভিযান মানে প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে৷
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেকের ওপর যা যা দায়িত্ব আছে, তা পালনে সচেষ্ট থাকতে হবে৷ পরিকল্পিত ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যেতে পারলে দেশ এগিয়ে যাবে৷ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে সরকার অনেক দূর এগোতে পেরেছে৷ সরকারের কাজগুলোতে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে৷ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তো বটেই, জাতির পিতার মেয়ে হিসেবেও বলছি, দেশবাসীর কষ্টলাঘব করাই আমাদের লক্ষ্য।
সব মন্ত্রণালয়ে নিচের দিকেও যাতে দুর্নীতি-অনিয়ম না হয়, সেটি কর্মকর্তাদের নজরদারিতে রাখতে হবে৷ সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে, অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করতে পারলে দেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে৷ বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি এটি সরকারি কাজে গতিশীলতার পাশাপাশি আস্থা তৈরি হয় মানুষের মাঝে৷ পাশাপাশি জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়। দুর্নীতি দমনে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করা হয়েছে এবং তা বাস্তবায়ন করতে হবে বলেও জানান তিনি।
কেউ যেন চক্রান্ত করে খাদ্যের দাম বাড়াতে না পারে, সেজন্য নজরদারি ও তদারকি বজায় রাখতে হবে-এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণেও নজরদারি জরুরি৷ এবার আবার বন্যা হতে পারে৷ টানা খরায় হিমালয়ের বরফ গলেছে বেশি৷ এবার বন্যা দীর্ঘায়িত হতে পারে৷ তা মোকাবিলার প্রস্তুতি এখন থেকেই থাকতে হবে, যাতে কারও কাছে হাত পাততে না হয়৷
বঙ্গবন্ধুকন্যা আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা প্রকল্পগুলো বছরের পর বছর টানবে না সরকার, সেগুলো নিষ্পত্তিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করতে হবে৷ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন৷ পত্র-পত্রিকায় কী লিখলো, তা দেখে কাজ করবেন না, ঘাবড়ে যাবেন না৷ বিবেক ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করে যাবেন৷ তবে খোঁজ নেবেন অভিযোগটি সত্য কি-না৷ মাটি-মানুষের রাজনীতি করেই আজকের অবস্থানে এসেছে আওয়ামী লীগ সরকার৷
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।