কোটা আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে উত্তাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৬ জুলাই ২০২৪, ১৩:২৫

ছবি: সংগৃহীত

সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ আজ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করবে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে কর্মসূচি ডেকেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। অপরদিকে, আন্দোলনকারীদের হামলায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মী আহতের ঘটনায় কর্মসূচি পালন করবে ছাত্রলীগ।

দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ দুপুর ৩টায় বিক্ষোভ মিছিল করবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বাধা এলে কঠোর কর্মসূচিরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। অন্যদিকে হামলার অভিযোগ তুলে দুপুর দেড়টায় রাজু ভাস্কর্যে বিক্ষোভ সমাবেশ ডেকেছে ছাত্রলীগ।

গতকাল সোমবার (১৫ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টায় আন্দোলনকারীরা শহীদুল্লাহ হল ও কার্জন হলের মাঝামাঝি রাস্তায় সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।এদিকে গতকাল রাত ১১টার পর সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যে গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন জানান, মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুর দেড়টায় সারা দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে ছাত্রলীগ।

সোমবার দিনভর ক্যাম্পাসে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষ আর পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। এতে আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নেন প্রায় তিন শ জন। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে দুপক্ষের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। এ ছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুপক্ষের মধ্যে পাল্টাপল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। রাতে উপচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিলে ছাত্রলীগ আবারও হামলা করে বলে অভিযোগ করে শিক্ষার্থীরা।

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান বলছেন, ক্যাম্পাসের পরিবেশ ঠিক রাখতে মাঠে নেমেছে তারা। সংঘর্ষে শতাধিক কর্মী আহত হয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতে, সোমবার সন্ধ্যায় উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকে বসে প্রভোস্ট কমিটি। পরে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে কেউ জড়িত থাকলে বিশ্ববিদ্যালেয়ের বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলমের অভিযোগ, রাতেও তাদের ওপর হামলার চেষ্টা করা হয়। প্রয়োজনে সামনে আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। ক্যাম্পাসে নতুন করে উত্তেজনা ঠেকাতে রাতভর সতর্ক অবস্থানে দেখা যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের।

সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটা সংস্কারের দাবিতে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে গেল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভের সময় পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে অজ্ঞাত অনেককে আসামি করে মামলা হয়েছে শাহবাগ থানায়।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, তাদের ওপর হামলা পরিকল্পিতভাবে হয়েছে। সরকার এ আন্দোলন সহিংসভাবে বন্ধের চেষ্টা করছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তিনি নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেনে। এতে দেশের সাধারণ মানুষেরও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

 

 



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top