পাকিস্তানিদের মতো একই কায়দায় হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৬ জুলাই ২০২৪, ২৩:১১
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সোমবার একদিনে ছাত্রলীগ যা করেছেন তা পাকিস্তানিদের চেয়ে কোন অংশে কম? তারা হাসাপাতালে গিয়ে হামলা চালিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় কোটা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনাসহ দেশের অবস্থা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
দেশের বর্তমান অবস্থাকে ‘ভয়াবহ’ অভিহিত করে এর বিরুদ্ধে সকলকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে দেশের অবস্থা ভয়াবহ পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে আইনের শাসন নেই, গণতন্ত্র নেই। এখানে মানুষের ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার নেই। এমনকি কথা বলার কোনো অধিকার নেই। এখন কঠিন সময় আমরা অতিক্রম করছি। এই সময়ে যদি আমরা রুখে দাঁড়াতে না পারি তাহলে পুরো দেশ ও জাতির অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে।’
তিনি বলেন, ‘স্পষ্ট করে বলতে চাই, এদেশের মানুষ জেগে উঠছে। বিশ্বাস করি, জনগণ তাদের অধিকার আদায় করে নেবে। যে কথাটা সব নেতারা বলেছেন যে, আর সময় দেওয়া যাবে না। সকলকে উঠে দাঁড়াতে হবে, রুখে দাঁড়াতে হবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আমাদের অধিকার আমাদের আদায় করে নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর যে বর্বর হামলা হয়েছে তার নিন্দা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। আমি আন্দোলনকারী ও আহতদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাই।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বরাবরই বলছি, আওয়ামী লীগ আর সেই আওয়ামী লীগ নেই। আওয়ামী লীগ এখন একটা দেউলিয়া রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগের সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে আমলাদের ওপর এবং তাদের তথাকথিত বাহিনীর ওপর। যারা আজকে রাষ্ট্রকে পুরোপুরিভাবে একটা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।’
২০১৮ সালে সরকারি চাকরি ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি প্রধানমন্ত্রী বাতিল করেছিল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আবার আদালত দিয়ে সামনে এনে সেটাকে ইস্যু তৈরি করা হয়েছে। দুর্ভাগ্য তাদের শাসনকে স্থায়ী করতে দেশের আদালতকে ব্যবহার করা হচ্ছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জনগণের মূল যে দাবি একটা সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন চাই ,গণতন্ত্রকে ফেরত চাই, ভোটের অধিকার ফেরত চাই। এই দাবিগুলো পাশ কাটানোর জন্য তারাই (সরকার) একটার পর একটা ঘটনা ঘটিয়ে জনগণের যে দৃষ্টি শক্তিকে বিভ্রান্ত করতে চায়।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলায় গুরুতর আহতদের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আমার-আপনার সন্তান শিক্ষার্থীরা রক্তাক্ত অবস্থায় আহ্বান জানাচ্ছেন ‘‘আমাদের রক্ষা করেন, আমাদের পাশে দাঁড়ান, এই আন্দোলনের সঙ্গে থাকেন’’। এটাই আজকে বাংলাদেশের আবেদন, এই স্বৈরাচারকে যদি উৎখাত করতে হয়, এই নৃশংস শাসনের যদি অবসান করতে হলে তাহলে তার সঙ্গে দাঁড়াতে হবে। আমাদের সবাইকে এই লড়াইয়ের মধ্যে অংশ নিতে হবে।’
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।