অন্তর্বর্তী সরকারে ড. ইউনূসের ১৬ সঙ্গীর পরিচয়
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৯ আগষ্ট ২০২৪, ১৪:১৩
সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ : বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নবম গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদের জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার শ্রীরামপুর (দরিশ্রীরামপুর) গ্রামে। ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ১৯৬৩ সালে এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৬৫ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে যথাক্রমে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ (অনার্স) পাস এবং ১৯৬৯ সালে একই বিষয়ে এমএ পাস করেন। ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। তৎকালীন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় প্রশাসনে সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান (সিএসপি) ক্যাডারে যোগ দেন। ১৯৭৮ সালে কানাডার ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। সালেহউদ্দিন ২০০৫ সালের ১ মে থেকে ২০০৯ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ছিলেন।
অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে’ শুরু থেকেই সরব ছিলেন তিনি। অধ্যাপনা ছাড়াও তিনি লেখক, ঔপন্যাসিক, রাজনীতি-বিশ্লেষক, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও কলামিস্ট হিসেবে খ্যাত। টিভি টকশো ও তার কলামে সাহসী রাজনীতি বিশ্লেষণের জন্য বরাবরই আলোচনায় তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ১৯৮৬ সালে স্নাতক ও ১৯৮৭ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন এই অধ্যাপক। ১৯৯৯ সালে সোয়াস (স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ) ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। পরে জার্মানির বন শহরের ইনভায়রনমেন্টাল ল সেন্টার থেকে পোস্ট ডক্টরেট ফেলোশিপ এবং স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজে একজন কমনওয়েলথ ফেলো হিসেবে কাজ করেছেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন : ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের জন্ম ১৯৪৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বরিশালে। ১৯৬৬ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন এবং দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রায় দুই বছর পাকিস্তানের বন্দিশিবিরে কাটিয়ে ১৯৭৩ সালে দেশে ফেরেন এবং ১৯৭৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় ৪৬ ব্রিগেডে স্টাফ অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
সাখাওয়াত হোসেন ১৯৭৯-৮১ সালে ঢাকায় সেনাসদরে গুরুত্বপূর্ণ পদে অপারেশন ডিরেক্টরেট নিয়োজিত হন। পরে তিনি ব্রিগেডের অধিনায়ক হিসেবে দুটি ইনফেনট্রি ব্রিগেড ও একটি আর্টিলারি ব্রিগেডের অধিনায়ক ছিলেন। বাংলাদেশের ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ থেকে প্রথম এবং দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিখ্যাত ইউএসএ কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ জেনারেল কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে গ্র্যাজুয়েশন করেন। তিনি পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডিফেন্স এডিসি ইসলামাবাদ ইউনিভার্সিটির তত্ত্বাবধানে স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে মাস্টার্স এবং ২০১১ সালে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস, ঢাকা থেকে এমফিল ডিগ্রি লাভ করেন। ২০০৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ বছর তিনি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আ ফ ম খালিদ হোসেন : দেশের ইতিহাসে প্রথম আলেম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন। তার পুরো নাম আবুল ফয়েজ মুহাম্মদ খালিদ হোসেন। তবে তিনি ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন নামে পরিচিত। তিনি ১৯৫৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার মাদার্শা ইউনিয়নের মক্কার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ একজন ইসলামি পণ্ডিত ছিলেন।
সুন্নি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত খালিদ হোসেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির ছিলেন। বর্তমানে তিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শিক্ষা উপদেষ্টা, মাসিক আত তাওহিদের সম্পাদক, বালাগুশ শরকের সহকারী সম্পাদক এবং আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের কোরআনিক সায়েন্সেস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অতিথি শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। এ ছাড়া তিনি ওমরগণি এমইএস কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের খণ্ডকালীন অধ্যাপক এবং নেজামে ইসলাম পার্টির ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসমাজের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন।
আদিলুর রহমান খান : আদিলুর রহমান খান মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকারের’ প্রতিষ্ঠাতা। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলের এ ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। তিনি এরশাদবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ২০১৩ সালে রাজধানীর শাপলা চত্বরে বিক্ষোভের সময় নেতাকর্মীদের অপসারণের অভিযানে নিহতের সংখ্যা সম্পর্কে ‘বিভ্রান্তি ছড়ানোর’ অভিযোগে আদিলুরের বিরুদ্ধে ঢাকায় একটি মামলা হয়। একই বছরের ১০ আগস্ট রাতে গোয়েন্দা পুলিশ তাকে আটক করে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬-এর ৫৪ ধারায় তাকে আটক করা হয়। পরে অক্টোবরে হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়ে কারামুক্ত হন তিনি।
আদিলুর রহমান ২০১৪ সালে রবার্ট এফ কেনেডি মানবাধিকার পুরস্কার, মানবাধিকারের জন্য গোয়াংজু পুরস্কার (২০১৪), ইন্টারন্যাশনাল বার অ্যাসোসিয়েশন (আইবিএ) হিউম্যান রাইটস অ্যাওয়ার্ড এবং মার্টিন এনালস অ্যাওয়ার্ড ফাইনালিস্ট (২০১৪) পুরস্কার লাভ করেন।
এএফ হাসান আরিফ : হাসান আরিফ সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। তার জন্ম ১৯৪১ সালে কলকাতায়। তিনি সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ কলকাতা থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা হাইকোর্টে ১৯৬৭ সালে আইনজীবী হিসেবে কাজ করেন। এরপর ঢাকায় এসে বাংলাদেশ হাইকোর্টে কাজ শুরু করেন।
এফ হাসান আরিফ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ, নির্মাণ সালিশ, বাণিজ্যিক সালিশ, অর্থ, ব্যাংকিং এবং সিকিউরিটিজ বিষয়, করপোরেট, বাণিজ্যিক ও ট্যাক্সেশন বিষয়, সাংবিধানিক আইন বিষয়, আরবিট্রেশন এবং বিকল্প বিরোধ সমাধানের অন্যান্য পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছেন।
সৈয়দ রিজওয়ানা হাসান : বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের পৈতৃক নিবাস হবিগঞ্জে হলেও তার জন্ম ১৯৬৮ সালের ১৫ জানুয়ারি ঢাকায়। তিনি ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পাস করেন। এরপর হলি ক্রস কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমে লোকপ্রশাসন বিভাগে ভর্তি হলেও আইনের প্রতি আগ্রহ থেকে পরে বিভাগ পরিবর্তন করে আইন বিভাগে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে স্নাতক ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯৩ সালে এলএলএম ডিগ্রি লাভের পর বিদেশে বেশ কয়েকটি ফেলোশিপ কোর্স করেন। ২০০৭ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে আইজেনহাওয়ার ফেলোশিপ কোর্স করেন।
ফরিদা আখতার : বেসরকারি সংস্থা উবিনীগ (উন্নয়ন বিকল্পের নীতিনির্ধারণী গবেষণা)-এর নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে পড়াশোনা করেছেন। তার জন্ম চট্টগ্রামের চন্দনাইশ থানার হারলা গ্রামে। দেশের গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের অবস্থা জানা এবং পরিবর্তনের জন্য নীতিনির্ধারণী গবেষণা ও লেখালেখিই তার কাজের প্রধান জায়গা। তিনি নারী উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, কৃষি, মৎস্য সম্পদ, তাঁত শিল্প, গার্মেন্টস শিল্প ও শ্রমিক, জনসংখ্যা এবং উন্নয়নমূলক বিষয়ে প্রায় তিন দশক ধরে কাজ করছেন।
দরিদ্র মানুষের অবস্থা জানা এবং পরিবর্তনের জন্য নীতিনির্ধারণী গবেষণা ও লেখালেখিই তার কাজের প্রধান জায়গা। বাংলাদেশের নারী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে জড়িত সম্মিলিত নারী সমাজের সদস্য তিনি। লেখক ও কলামিস্ট হিসেবেও তার পরিচিতি আছে।
নূরজাহান বেগম : নূরজাহান বেগম ২০১০ সালে গ্রামীণ ডিস্ট্রিবিউশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। তিনি নোবেল বিজয়ী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছ থেকে এ দায়িত্ব পেয়েছিলেন।
নূরজাহান বেগম গ্রামীণ পরিবারের একটি অলাভজনক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গ্রামীণ শিক্ষার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৭৬ সালে যখন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রকল্প শুরু হয়, তখন তিনি ইউনূসের প্রথম সারির সহযোগীদের একজন ছিলেন। তিনি অনেক দেশে ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্পের পরামর্শদাতা, প্রশিক্ষক এবং মূল্যায়নকারী হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি ওয়ার্ল্ড সামিট মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলস অ্যাওয়ার্ড ২০০৯ এবং ভিশন অ্যাওয়ার্ড ২০০৯-এ ভূষিত হন।
নূরজাহান ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে ‘ফরচুন মোস্ট পাওয়ারফুল উইমেন’ সামিটে অংশ নেন। একই বছর স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ায় ফাউন্ডেশন ফর জাস্টিস পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতি হন।
শারমিন মুরশিদ : ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন মুরশিদ বাংলাদেশসহ বিশে^র বিভিন্ন দেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি শেখ হাসিনা সরকারের সময় নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার ও নানা অনিয়ম নিয়ে কথা বলেন। দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে তার মতামত ও পরামর্শ গুরুত্ব সহকারে প্রচার হয়। সর্বশেষ ৭ জানুয়ারি ২০২৪-এর নির্বাচন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘আমি এই নির্বাচনকে নির্বাচন বলি না।’ বিষয়টি ব্যাপক আলোচিত হয়।
তৌহিদ হোসেন : ১৯৫৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মো. তৌহিদ হোসেনের জন্ম। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন। ১৯৯৯ সালের জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি ২০০০ পর্যন্ত ফরেন সার্ভিস একাডেমির প্রিন্সিপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার ছিলেন। ২০০৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর থেকে ২০০৯ সালের ৮ জুলাই পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব ছিলেন। ২০০৯ সালের জুলাই থেকে ২০১২ সালের জুলাই পর্যন্ত ফরেন সার্ভিস একাডেমির প্রিন্সিপাল ছিলেন। ২০১২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার নিযুক্ত হন।
মো. নাহিদ ইসলাম : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। তার বাবার নাম বদরুল ইসলাম জামির। নাহিদ ইসলামের স্থায়ী ঠিকানা ঢাকার বাড্ডা এলাকার বেরাইদ ইউনিয়নে। বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে থাকেন রাজধানীর দক্ষিণ বনশ্রী এলাকায়। তিনি গণতান্ত্রিক ছাত্র শক্তির সদস্য সচিব।
আসিফ মাহমুদ : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া (আসিফ মাহমুদ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। নাখালপাড়া হোসাইন আলী হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। বাবার নাম মো. বিল্লাল হোসেন। আসিফ মাহমুদের স্থায়ী ঠিকানা কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায়। তিনি গণতান্ত্রিক ছাত্র শক্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক।
ডা. বিধান রঞ্জন : অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলি হাই স্কুল থেকে ১৯৭৯ সালে এসএসসি ও ১৯৮১ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৮৮ সালে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন। এর আগে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ছিলেন।
ফারুক-ই আজম : নৌ-কমান্ডো ফারুক-ই-আজম মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য পেয়েছেন বীরপ্রতীক খেতাব। তার বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র সমন্বিত যুদ্ধাভিযান ‘অপারেশন জ্যাকপট’। চট্টগ্রামের বন্দর আক্রমণের জন্য এ আভিযানিক দলের উপঅধিনায়ক ছিলেন তিনি। সারা দেশের সব বন্দরে একই সময়ে একযোগে আক্রমণ চালানো হয়।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সূচনাকালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন ফারুক-ই-আজম। সে সময় খুলনায় ছিলেন তিনি। যুদ্ধ শুরু হলে অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে চট্টগ্রামে পৌঁছান। ৬ মে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের হরিণা ইয়ুথ ক্যাম্পে আশ্রয় নেন। পলাশীতে দুই মাসের প্রশিক্ষণ শেষে ১৯৭১ সালের ১ আগস্ট অপারেশনের জন্য তাকে মনোনীত করা হয়।
সুপ্রদীপ চাকমা : সুপ্রদীপ চাকমা গত বছর ২৭ জুলাই পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব পদমর্যাদা) হিসেবে যোগ দেন। তিনি ১৯৮৫ ব্যাচের বিসিএসের (এফএ) সদস্য ছিলেন। সুপ্রদীপ চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রামের নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী থেকে প্রথম ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন এবং পরে সচিব পর্যায়ে প্রথম চাকমা হিসেবে অধিষ্ঠিত হন। দেশে-বিদেশে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে চাকরি করার পর সর্বশেষ মেক্সিকো সিটি, বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত পদ থেকে ২০২১ সালে তিনি অবসর নেন।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।