শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বদলে যাচ্ছে পুলিশের ইউনিফর্ম–লোগো

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১২ আগষ্ট ২০২৪, ১৩:২১

ছবি: সংগৃহীত

শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর সবচেয়ে বেশি জনরোষে পড়েছে পুলিশ সদস্য ও পুলিশের স্থাপনা। এতে ভেঙে পড়ে বাহিনীটির চেইন অব কমান্ড। এছাড়া অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠনের পরই বদলে ফেলা হয় পুলিশের আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনারকে। এর মধ্যেই নানা দাবি পূরণে কর্মবিরতি শুরু করেন পুলিশ সদস্যরা। পরে দাবি পূরণের আশ্বাসে রোববার থেকেই কর্মস্থলে যোগদানের ঘোষণা দেন তারা।

এছাড়া পুলিশের মনোবল চাঙা ও সংস্কারের লক্ষ্যে ইউনিফর্ম ও লোগো পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রোববার বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) এম সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে আন্দোলনরত পুলিশ সদস্যদের একটি প্রতিনিধিদলের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।

বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মশিউর রহমান, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম, বিজিবির মহাপরিচালক, পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে পুলিশের ১১ দফা দাবির কয়েকটি অল্প সময়ের মধ্যে পূরণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। অন্য দাবিগুলো পূরণ করা হবে দীর্ঘ মেয়াদে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে পুলিশের ওপর কোনো ধরনের হামলা চালানো যাবে না। পুলিশের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাতে হবে।

পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে বসার আগে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। গত কয়েক দিনের ঘটনায় পুলিশের মনোবল ভেঙে গেছে বলে বৈঠক শেষে জানান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, ‘তারা যে দাবিদাওয়া পেশ করেছে, সেগুলো যৌক্তিক। তাই আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছি যে আমরা স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে তাদের দাবিগুলো মেনে নেব। কিছু দাবি আমরা এখনই মেনে নেব।’

রাজনৈতিক সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘পুলিশের যতখানি না দোষ, তার চেয়ে বেশি দোষ তাদের যারা কমান্ড করেছে। তাদের দিয়ে অনেক রাজনৈতিক কাজ করানো হয়েছে। এসব বিষয়ে আমরা বিস্তারিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনা করব। পুলিশ সদস্যরা আমাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে এখন থেকে তাঁরা ঠিকমতো কাজ করবেন। এর আগে বিকেলে আমি ছাত্রদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। ছাত্ররা আমাকে বলেছে, পুলিশের সঙ্গে তাদের কোনো বিরোধ নেই। পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করবে।’

পুলিশ সদস্যদের জন্য স্বাধীন একটি কমিশন গড়ে তোলার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন জানিয়ে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘পুলিশ কমিশন হওয়া উচিত। সেই কমিশনের অধীনে পুলিশ পরিচালিত হবে। তারা কোনো রাজনৈতিক দলের অধীনে থাকবে না। পুলিশকে যেন রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার না করা হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’

বৈঠক শেষে পুলিশের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারী পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ক পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম ও কনস্টেবল শোয়েবুর রহমান। তাঁরা বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে যেসব দাবি জানিয়েছিলাম তার বেশির ভাগই মেনে নেওয়ার আশ্বাসে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিচ্ছি। আশা করি, সবাই সুন্দরভাবে নিজ নিজ দায়িত্বে ফিরবেন।’



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top