শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

১৫ আগস্ট’ ঘিরে ৩২ নম্বরে গিয়ে ফুল দেয়ার আহ্বান জয়ের

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১২ আগষ্ট ২০২৪, ১৫:১২

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতার চেতনা ও নিজের পরিবারের জন্য দেশের মানুষের কাছে দোয়া চেয়েছেন। তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘আগামী ‘১৫ আগস্ট’ শান্তিপূর্ণভাবে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে গিয়ে ফুল দিয়ে আসবেন। দোয়া করবেন- বঙ্গবন্ধুর জন্য, স্বাধীনতার চেতনার জন্য, আমার পরিবারের জন্য, এই হলো আপনাদের প্রতি আমার আহ্বান।’

রোববার (১১ আগস্ট) রাত সাড়ে ১১টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফাইড পেজে পোস্ট করে তিনি এই আহ্বান জানান। পোস্টে তিনি লিখেন, ‘আপনারা নিজের চোখে দেখতে পেরেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসা সেই ঐতিহাসিক ৩২-নম্বরকে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। যেখানে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়, আমার পুরো পরিবারকে হত্যা করা হয়, সেই বাসা ৭৫-এর খুনিরাও ধ্বংস করার সাহস পায়নি। এতদিন যে বাসায় উনার মিউজিয়াম ছিল, সেই বাসাটি তারা পুড়িয়ে ফেলেছে।’

বঙ্গবন্ধু দলীয় বিষয় নয় দাবি করে জয় লিখেন, ‘তিনি হচ্ছেন জাতির পিতা। বঙ্গবন্ধু না থাকলে আজকে আমরা বাংলাদেশ হতাম না, পাকিস্তান হয়ে থাকতাম। সামনে ১৫ আগস্ট, সেই কালো রাত, যেই রাতে বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে হত্যা করা হয়।

আমার আহ্বান বাঙালির জাতির কাছে, আপনারা যদি স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করেন, দেশকে ভালোবাসেন, যেই বাংলাদেশে বাস করছেন- এটাকে মেনে নেন, তাহলে শান্তিপূর্ণভাবে ৩২ নম্বরে গিয়ে ফুল দিয়ে আসবেন আর দোয়া করবেন বঙ্গবন্ধুর জন্য, স্বাধীনতার চেতনার জন্য এবং আমার পরিবারের জন্য।’

এদিকে, সরকার পতনের কারণে রাজনৈতিকভাবে ভেঙে পড়া আওয়ামী লীগকে আবারও চাঙা করতে এবং সকল নেতাকর্মীকে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দলের হাইকমান্ড। এ ক্ষেত্রে ১৫ আগস্ট শোক দিবস ঘিরে পরিকল্পনা সাজিয়েছে আওয়ামী লীগ। ঢাকা পোস্ট

পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ দিন ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু ভবন ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে দলটি। এ ছাড়া সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ এতে অংশ নেবেন বলে প্রত্যাশা আওয়ামী লীগের। শ্রদ্ধা জানানো হবে ১৫ আগস্টে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের প্রতি। গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধে বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে।

এদিকে, সম্প্রতি একটি অডিও বার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি সাম্প্রতিক সময়ের বলে নিশ্চিত করেছেন দলের একাধিক নেতা। অডিও বার্তায় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘সবাই ঢাকায় চলে আসবে, মৌনমিছিল নিয়ে বঙ্গবন্ধু ভবনে ফুল দিতে হবে। বাংলাদেশের সব এলাকা থেকে ঢাকায় এসে ফুল দিতে হবে। যাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে তাদের থানায় জিডি করতে হবে।’

সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে তীব্র গণ-আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। ফলে আওয়ামী লীগের টানা দেড় দশকের শাসনের অবসান ঘটে। ২০০১ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের কাছে পরাজয়ের পর ২০০৯ সালের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আবারও ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ সরকার। এরপর ২০১৪, ২০১৯ ও ২০২৪-এর নির্বাচনে জয়লাভ করে টানা চারবার সরকার গঠন করে দলটি। যদিও শেষ তিন মেয়াদের নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক রয়েছে দেশে-বিদেশে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ১৫ আগস্টের কর্মসূচি পালন করবেন। এ দিন কালো ব্যাজ ধারণ ছাড়াও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা, মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে। সরকারে না থাকলে যে দল থাকবে না, এটি ঠিক নয়।

আমরা আগামীতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামব। নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা হলে দেখবেন আওয়ামী লীগ নির্বাচনের মাঠ দখলে নিয়েছে। সাময়িক সময়ের জন্য আমরা রাজপথ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছি, তারপরও আমরা সক্রিয়। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে। ঢাকা পোস্ট 

এদিকে, দেশে গণবিক্ষোভের মুখে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। তার দাবি, অন্তর্র্বতীকালীন সরকার নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিলেই দেশে ফিরবেন তার মা। অন্যদিকে, ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিদেশি শক্তিকে দায়ী করেছেন।

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘আমি ক্ষমতায় থাকতে পারতাম যদি আমি সেন্ট মার্টিন ও বঙ্গোপসাগর আমেরিকার কাছে ছেড়ে দিতাম। আমি পদত্যাগ করেছি যাতে আমাকে লাশের মিছিল দেখতে না হয়। তারা আপনাদের (ছাত্রদের) লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল, আমি তা করতে দিইনি। হয়তো আজ যদি আমি দেশে থাকতাম তাহলে আরও প্রাণহানি হতো, আরও সম্পদ ধ্বংস হতো।’

আমি নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি, আমি আপনাদের সমর্থন নিয়ে এসেছিলাম। আপনারাই ছিলেন আমার শক্তি, আপনারাই যখন আমাকে চাননি, আমি নিজেই তখন চলে এসেছি, পদত্যাগ করেছি। আমার কর্মী যারা আছেন, কেউ মনোবল হারাবেন না। আওয়ামী লীগ বারবার উঠে দাঁড়িয়েছে’— বলেন ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top