যে কারণে বাতিল হলো ১৫ আগস্টের ছুটি
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৪ আগষ্ট ২০২৪, ১৪:৪৮
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিল করা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) রাতে ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিল করার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে উপদেষ্টা পরিষদের সংলাপে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিল করার বিষয়ে ব্যাপক ঐক্যমত্য হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার দিনটি জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছিল। আওয়ামী লীগের দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে এ দিন সরকারি ছুটি ছিল।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর গত বৃহস্পতিবার ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্র্বতী সরকার গঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টাসহ এ সরকারের সদস্যসংখ্যা ১৭। গতকালই উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয়। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্য উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে একদিন অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছিল।
সোমবার অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে পৃথক বৈঠক হয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের। বিএনপি-জামায়াত ছাড়া গণতন্ত্র মঞ্চ, সিপিবি, বাসদ, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, এবি পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) ও গণ অধিকার পরিষদের দুই অংশের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হবে কি না, সে বিষয়ে আলোচনা হয়।
এর আগে সোমবার (১২ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা করেন। এসময় ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়েও আকারে-ইঙ্গিতে কথা বলেছে কোনও কোনও দল।
একই দিনে ঢাবির টিএসসি মিলনায়তনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রদল, ছাত্রশিবিরসহ ৩৫টি ছাত্র সংগঠন এক মতবিনিময় সভায় ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন না করার বিষয়ে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। উপস্থিত সব ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধি এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে লিখিতভাবে একমত পোষণ করেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়। সে সময় থেকে ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। পরে ২০০১ চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ২০০২ সালে জাতীয় শোক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে। এর ছয় বছর পর হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালে ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পুনর্বহাল করা হয়। এরপর থেকে ১৫ আগস্ট দিনটি জাতীয়ভাবে শোক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছিল।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।