টুকু, পলক ও ছাত্রলীগের সৈকত ১০ দিনের রিমান্ডে

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৫ আগষ্ট ২০২৪, ১৮:৫৯

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর পল্টনে কামাল মিয়া নামে এক রিকশা চালক হত্যা মামলায় সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল আলম এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বিকেলে টুকু, পলক ও সৈকতকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। তাদের প্রত্যেককে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেককে ১০ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

টুকু, পলক ও সৈকতের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। প্রত্যেককে মাথায় হেলমেট পরিয়ে, গায়ে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে আদালতের কাঠগড়ায় হাজির করা হয়।

রিমান্ড আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, এই আসামিদের ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনায় এবং তাদের নির্দেশে হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। এদেরকে কারা নির্দেশনা দিয়েছিল, এই হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য কী এবং এদের সহযোগী অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তার করার জন্য রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

এদিকে, গত মঙ্গলবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেফতার করা হয়। গতকাল বুধবার তাদের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

গত ৬ আগস্ট বিকেলে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দিল্লি যাওয়ার সময় জুনাইদ আহমেদ পলককে আটকে দেওয়া হয়েছিল। এদিকে ১৩ আগস্ট জুনাইদ আহমেদ পলক ও তার স্ত্রী আরিফা জেসমিন কনিকার ব্যাংক হিসাব জব্দ করে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

প্রসঙ্গত, গত ১৯ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর পল্টন থানা এলাকায় গুলিতে নিহত হন রিকশাচালক কামাল মিয়া (৩৯)। এ ঘটনায় রাজধানীর পল্টন থানায় অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীদের আসামি করে ২০ জুলাই একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন (৩৬)।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আমার স্বামী কামাল মিয়া (৩৯) পেশায় একজন রিকশাচালক। গত ১৯ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে প্রতিবেশীর মাধ্যমে জানতে পারি, আমার স্বামী রক্তাক্ত অবস্থায় পল্টন মডেল থানার বটতলা গলির মুখে পড়ে আছে। তখন আমি ও আমার মেয়ে তাকে উদ্ধার করে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এজাহারে আরও বলা হয়, ঘটনাস্থলের স্থানীয় লোকজনদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, ওই স্থানে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা রাস্তা অবরোধ করে আগুন দেয় এবং বিভিন্ন গাড়ি ভাঙচুর করতে থাকে। তখন কাকরাইল থেকে পল্টন থানায় আসার পথে একজন পুলিশকে দুষ্কৃতকারীরা আটক করে মারধর করে।

তার কাছে থাকা সরকারি পিস্তল ও গুলি, ওয়ারলেস সেট, মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ নিয়ে যায় এবং তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে ফেলে। তখন পল্টন থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে দুষ্কৃতকারীদের ধাওয়া করে। এ সময় দুষ্কৃতকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পুলিশ ও দুষ্কৃতকারীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার মাঝে পড়ে গুলিতে আহত হন রিকশাচালক কামাল মিয়া।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top