বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে আজ

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৮ আগষ্ট ২০২৪, ১৪:৩২

ছবি: সংগৃহীত

আজ থেকে খুলছে বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গত বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত এক আদেশ জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। সেখানে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশনা দেয়া হয়।

এদিকে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এরইমধ্যে অন্তত ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদত্যাগ করেছেন। অনেক শিক্ষক, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টর ও রেজিস্ট্রারও পদত্যাগ করেছেন। অনেকেই আসছেন না ক্যাম্পাসে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বিশেষ করে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

গত ১৫ আগস্ট মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মোসাম্মৎ রহিমা আক্তারের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে আজ রোববার (১৮ আগস্ট) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথা জানানো হয়।

এদিকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা স্কুলে স্কুলে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। স্কুলের গেটে অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আইডি কার্ড ছাড়া কোনো শিক্ষার্থী স্কুলে যেন প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও স্কুলের শিক্ষার্থী পরিবহনে যানবাহনগুলোকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। অভিভাবকদের সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় তার সন্তানকে স্কুলে পাঠানোর জন্য এসএমএস দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে আজ রোববার খুললেও ক্লাস হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। কারণ শীর্ষ পদগুলো শূন্য থাকায় ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্তই নিতে পারেনি কিছু বিশ্ববিদ্যালয়। আবার ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করাসহ শিক্ষার্থীদের সব দাবি দাওয়া পূরণ না হাওয়ায় তারা ক্লাসে ফিরবেন কি না তা নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। যদিও অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শিক্ষাকার্যক্রম শুরুর নির্দেশনা দিয়েছেন।

তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হবে কি না তা নিয়ে কোনো নির্দেশনা আসেনি। উপাচার্যের পদত্যাগের পর মূলত স্থবির রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম। একই অবস্থায় বিরাজ করছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

সর্বজনীন প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে শিক্ষকদের আন্দোলনে ১ জুলাই থেকে বন্ধ হয়ে যায় দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্লাস-পরীক্ষা। আর কোটা সংস্কার আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নিলে জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে কার্যত অচল হয়ে পড়ে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরপর ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ৭ আগস্ট থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথা জানায় আইএসপিআর।

তবে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম ছিল। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) জানায়, গত ৭ আগস্ট থেকে অনেক প্রতিষ্ঠানে ক্লাস হচ্ছিল। তবে উপস্থিতি কম ছিল। অনেকের মধ্যে আতঙ্ক ও নিরাপত্তার শঙ্কা ছিল। পরিস্থিতি ক্রমে স্বাভাবিক হয়ে আসায় রোববার থেকে স্কুল-কলেজে যথারীতি ক্লাস হবে।

মাধ্যমিক স্তরের মাদ্রাসা, কামিল ও ফাজিলে যথারীতি ক্লাস চালু হবে বলে জানিয়েছে মাদ্রাসা অধিদপ্তর এবং ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। একই নির্দেশনা দিয়েছে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরও।

কোটা সংস্কার ঘিরে গড়ে ওঠা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। এরপর গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর ৬ আগস্ট থেকেই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার নির্দেশনা আসে। সে আলোকে বেশির ভাগ স্কুল-কলেজ খুলেছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হল খুলেছে। আবার কিছু প্রতিষ্ঠান বন্ধও ছিল। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই আদেশের ফলে আজ রবিবার থেকে সব মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কার্যক্রম পুরোপুরিভাবে শুরু হবে।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top