ভারত বাঁধের মুখ খোলেনি, একা একা খুলে গেছে : নয়াদিল্লি

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২২ আগষ্ট ২০২৪, ১৬:৫৮

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের পূর্ব সীমান্তে বন্যার জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ডুম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। নয়াদিল্লি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বাঁধটি খুলে দেওয়া হয়নি; বরং অতিরিক্ত পানির চাপের কারণে বাঁধটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে গেছে।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকালে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে নয়াদিল্লি। বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশন আজ বৃহস্পতিবার নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা বাংলাদেশে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখেছি যে, ত্রিপুরার গোমতী নদীর উজানে ডুম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ার কারণে বাংলাদেশের পূর্ব সীমান্তের জেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তবে বাস্তবে এটি সঠিক নয়।’

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা উল্লেখ করতে চাই যে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদীর অববাহিকা (ক্যাচমেন্ট) এলাকায় কয়েক দিন ধরে এ বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশে এ বন্যা মূলত বাঁধের ভাটির দিকের বৃহৎ অববাহিকার পানির কারণে ঘটেছে।

আরও বলা হয়, বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে বেশ দূরে ১২০ কিলোমিটারেরও বেশি উজানে ডুম্বুর বাঁধের অবস্থান। এটা কম উচ্চতার (প্রায় ৩০ মিটার) একটি বাঁধ। এখানে উৎপাদিত বিদ্যুৎ একটি গ্রিডে যুক্ত হয় এবং ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে যায়। প্রায় ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদীর অববাহিকায় তিনটি জায়গায় (অমরপুর, সোনামুড়া ও সোনামুড়া–২) পানি পর্যবেক্ষণ স্টেশন রয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, গতকাল বুধবার (২১ আগস্ট) থেকে পুরো ত্রিপুরা এবং বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোয় ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে পানির চাপে বাঁধ থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পানি ছাড়ার ঘটনা দেখা গেছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, গতকাল দুপুর ৩টা পর্যন্ত পানিপ্রবাহ অত্যধিক বেড়ে যাওয়ার তথ্য বাংলাদেশকে পাঠানো হয়েছে। এরপর সন্ধ্যা ৬টার দিকে বন্যার কারণে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার জেরে যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটে। আমরা জরুরি তথ্য সরবরাহ নিশ্চিতে অন্যান্য মাধ্যমে যোগাযোগ বজায় রাখার চেষ্টা করছি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার অভিন্ন নদীগুলোতে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি একটি যৌথ সমস্যা। এটা উভয় দেশের মানুষের জন্য দুর্ভোগের জন্ম দেয়। এ সমস্যার সমাধানে ঘনিষ্ঠ পারস্পরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।

আরও বলা হয়, দুই দেশের মধ্যে ৫৪টি আন্তসীমান্ত নদী রয়েছে। এসব নদীর পানি নিয়ে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দ্বিপক্ষীয় পরামর্শ ও প্রযুক্তিগত আলোচনার মাধ্যমে পানিসম্পদ ও অভিন্ন নদীর পানি ব্যবস্থাপনা–সংক্রান্ত বিদ্যমান সমস্যা ও পারস্পরিক উদ্বেগের সমাধান করতে ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top