যুদ্ধে থাকলে আমরা কী করতাম? বুকের ভিতর দুমড়ে-মুচড়ে যাচ্ছে

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২২ আগষ্ট ২০২৪, ১৭:৩৩

ছবি: সংগৃহীত

ভারী বর্ষণ আর উজানের ঢলে প্লাবিত হয়েছে দেশের আট জেলা। দেশের ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে ফেনী ও নোয়াখালীতেই বন্যাকবলিত ২২ লাখের বেশি মানুষ। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে ফেনী, নতুন করে পানি ঢুকতে শুরু করেছে সদর উপজেলাতেও। এতে চরম দুর্ভোগ ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো প্রতিদিনই উঠে আসছে স্থানীয় বাসিন্দাদের দুর্ভোগের নানা চিত্র। যা নাড়া দিয়েছে গোটা দেশের মানুষের হৃদয়। ইতিমধ্যেই বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে ত্রাণ নিয়ে ছুটে গেছে অনেকে। বসে নেই শোবিজ অঙ্গনের তারকা শিল্পীরাও। নানা ভাবে তারাও বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কেউ আবার সবর আছেন ফেসবুকে, এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছেন।

বরেণ্য নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘মনে করেন আমরা যুদ্ধে আছি। তাহলে কি করতাম? সবাই মিলে ঝাঁপাইয়া পড়তাম। তাহলে চলেন এখনও তাই করি। নৌসেনা-বিমানবাহিনীর ভাই-বোনেরা, লেটস স্টেপ আপ। রেসকিউ বোট-কার্গো বিমান যা কিছু আছে তা নিয়ে দ্রুত উদ্ধারের গতি বাড়াই চলেন।

কথা বলে যা জানলাম, মানুষের এই মুহুর্তে প্রয়োজন রেসকিউ বোট। কোনো রকম জানান না দিয়ে ভারতের দিক থেকে স্লুইস গেট খুলে দেওয়াতে অল্প সময়ে ফেনীসহ আশেপাশের অনেক জেলা তলিয়ে যাচ্ছে। লাখো মানুষ উদ্ধার করা একটা হারকুলিয়ান টাস্ক। বাট লেটস ডু ইট। দূর্গত এলাকার কাছে-দুরে যেখানে যত স্পিডবোট-ইঞ্জিন নৌকা আছে, সেগুলা নিয়া ঝাঁপাইয়া পড়ি চলেন। বিপদ আমাদের কেবল একতাবদ্ধই করবে। নো ওয়ান ক্যান ব্রেক আস।’

সংগীত পরিচালক প্রিন্স মাহমুদ লিখেছেন, ‘ফেনীর পরিস্থিতি ভয়াবহ। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস গতকাল বিকেল থেকে কাজ শুরু করেছে। স্রোতের কারণে উদ্ধার কাজ পরিচালনাও সম্ভব হচ্ছে না। এই সময় ভুল খবর/ পুরোনো ছবি শেয়ার করবেন না। ফেনীতেই প্রয়োজনের চেয়ে বেশি স্বেচ্ছাসেবক আছে।

শুধুমাত্র, উদ্ধার/ সেফটি সরঞ্জাম, ইঞ্জিনচালিত নৌকা/বোট এবং খাবার দরকার। দলবেঁধে যাবেন না। সাঁতার না জানা কেউ রেসকিউ করতে যাওয়ার প্রয়োজন নেই, এতে হিতে বিপরীত হবে। যাবেন কিন্তু এখনি দলবেঁধে যাবেন না। পানি নামার পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সংস্কার কাজ এবং স্বাস্থ্য সেবার জন্য প্রচুর ভলেন্টিয়ার প্রয়োজন হবে, সুতরাং প্রস্তুতি নেন।’

কণ্ঠশিল্পী ফাহমিদা নবী লিখেছেন, এই শিশুর দৃষ্টির আকুতি, সরলতা, বিস্ময় আর ভয় নেওয়া যাচ্ছে না। পুরো দেশের ভয়াবহ চিত্র এই শিশুর দৃষ্টিতে! বেদনা ভরা বিপর্যস্ত জন-জীবন বন্যাকবলিত অবস্থায় কী অসহায় দিনাতিপাত করছে, তা আল্লাহতাআলা জানেন! আর ভাবতে ও নিতে পারছি না। আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন। নিজ নিজ অবস্থান থেকে আমরা যে যেভাবে পারি এগিয়ে আসি অসহায় বিপদগ্ৰস্ত মানুষের পাশে। আল্লাহ আমাদের সাহায্য করুন।’

চিত্রনায়িকা শবনম বুবলী লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন জেলায় বন্যার পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। লাখ লাখ মানুষ এবং অবলা প্রাণীরা বিপদগ্রস্থ। যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি। আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুন।’

নির্মাতা আশফাক নিপুন লিখেছেন, ‘আর নিতে পারছি না। আমাদের যা কিছু আছে, আমাদের তাই নিয়ে শিশুসহ হাজার হাজার মানুষ যে ফেনি, কুমিল্লা, নোয়াখালী, পরশুরাম ও খাগড়াছড়িতে বন্যায় আটকে পড়েছে তাদের উদ্ধার করা উচিত। আল্লাহ তাদের সহায় হোন।’

চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি লিখেছেন, ‘এই মুহূর্তে যারা নৌকা, স্পিডবোটের ভাড়া চাইবে, এরা মানুষ না। এবার মানুষ হন দয়া করে, আপনার যা কিছু আছে তা দিয়ে একটা জান হলেও বাঁচান।’

চিত্রনায়িকা পরীমণি লিখেছেন, ‘আল্লাহ, কী করব আমি! বুকের ভিতর দুমড়ে-মুচড়ে যাচ্ছে। এই চোখের দিকে তাকিয়ে কি করে ঘুমাবো! আল্লাহ তুমি সহায় হও। কেউ নাই আর এখন আমি যাব। আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে, যা করার করব ইনশাআল্লাহ।’

চিত্রনায়িকা মিষ্টি জান্নাত লিখেছেন, ‘বন্যার্তদের সাহায্য এগিয়ে আসুন সবাই। আমি যতটুকু পারি সাহায্য করতে চাই। যেহেতু আমি একজন ডাক্তার এবং চিত্রনায়িকা আমার ব্যক্তিগত আয় থেকে ১ লক্ষ টাকা দিতে চাই। সবাই দেশটাকে সংস্কারে এগিয়ে আসুন। অভিনেতা ইরফান সাজ্জাদ লিখেছেন, ‘দক্ষ কোনো রেসকিউ টিম আছে যারা হেলিকপ্টার করে বন্যার্তদের উদ্ধার করতে পারবে? হেলিকপ্টার ভাড়া হতে শুরু করে যাবতীয় সাপোর্ট দিতে চাই।’ সূত্র: আমাদের সময়



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top