ঢাবির নতুন ভিসিকে নিয়ে রনির তীব্র সমালোচনা
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২৮ আগষ্ট ২০২৪, ২০:২৯
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ৩০তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। গতকাল সোমবার ভিসি হওয়ার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর তাকে নিয়ে অফলাইন ও অনলাইনে চলছে নানা আলোচনা। বেশিরভাগ মানুষই তার যোগ্যতার কারণে তাকে সমর্থন জানিয়েছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে অভিনন্দন জানিয়ে অনেকেই স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। তারা বলছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একজন যোগ্য ভিসি পেল। কেউ কেউ বলছেন, ঢাবি সুযোগ্য স্বৈরাচারমুক্ত ভিসি পেল। আবার কেউ কেউ তিনি ঢাবির শিক্ষার্থী নন, রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নেই, সাম্প্রতিক আন্দোলনে ভূমিকা নেই- ইত্যাদি বলে এ নিয়োগের সমালোচনা করছেন।
এই তালিকায় রয়েছেন আওয়ামী লীগ আমলের সাবেক সংসদ সদস্য ও কলামিস্ট গোলাম মওলা রনি। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বেলা ১১টা ২৯ মিনিটে তিনি এ নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। পাঠকদের জন্য তার পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো- ‘আইয়ুব খানের সাহস হয়নি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বনাশ করার। ইয়াহিয়া - টিক্কা খান সাহস করেননি আমার প্রানের বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে চোখ তুলে তাকাতে। স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু কিংবা শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যে হাত দেননি !
আর স্বৈরশাসক এরশাদ তো কোনদিন বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার মধ্যে ঢুকতেই সাহস পাননি । অথচ আজ সেই অগ্নিগর্ভ বিশ্ববিদ্যালয়ের শত বছরের ঐতিহ্য পদদলিত করে নতুন ভিসি নিয়োগ দেয়া হয়েছে । আমি এই নিয়োগ মানিনা। আমি প্রতিবাদ করছি এবং ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি সেই অপচেষ্টাকে যারা রমনার ঊর্ধ্বমুখী কৃষ্ণ চুড়ার ছায়াঘেরা আমার প্রানের বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থির করার চেষ্টা করছেন।’
রনির এমন স্ট্যাটাসে ক্ষোভে ফেটে পড়েন নেটিজেনরা। কমেন্টবক্সে তারা রনির মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন। অনেকেই তাকে স্বৈরাচারের দোসর বলে অভিযুক্ত করেন। কেউ কেউ বলেন, রনি লীগের সাবেক এমপি, মানুষ সেটা ভালো করে জানে। তিনি আসলে দলত্যাগ করলেও আদর্শ ত্যাগ করতে পারেননি। অনেকেই বলেছেন, রনি আওয়ামী লীগই রয়ে গেলেন। মানুষ হতে পারেনি। অনেকেই আবার রনিকে ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
রাকিবুল আহসান মিনার নামের এক ব্যক্তি বলেন, অক্সফোর্ডসহ বিশ্ববিখ্যাত সব ইউনির্ভাসিটি ও ইনস্টিটিউট থেকে শিক্ষা লাভকারী ও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদানকারী মানুষটা অযোগ্য, আর দলীয় চাটুকারদের নিয়োগ দেওয়া ছিল যোগ্যতার পরিচয়? আপনার এ মায়াকান্নার অদৃশ্য পানিতে আপনার মুখোশই ধুয়ে যাচ্ছে! আপনার মানসিক সেই আওয়ামী নগ্নতা প্রকাশিত হতে শুরু করেছে।
মোহাম্মদ শফিকুল্লাহ বলেছেন, আগের চা-সমুচা আর সিঙ্গারা বিক্রেতা যারা ভিসি ছিল তাদের নিয়ে কোনো মুখ খুলেননি! আজকে স্বাধীনভাবে মুখ খুলছেন। জাহিদুল ইসলাম বলেন, আপনার রাগ অভিমানের জন্য অতীতেও কারো ক্ষতি হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না।
আতিকুল্লাহ হিল আশরাফি বলেছেন, ঢাকা ভার্সিটিতে গণহত্যায় এরকম হম্বিতম্বি করে কথা বলার তো দুঃসাহস দেখি নাই ভাই আপনার। সোহেল রানা বলেছেন, উনাকে অ্যানালাইসিস করে দেখছি উনি নেতা হতে চান। বৃষ্টির দিকে ছাতা সর্বদাই প্রস্তুত রাখেন তিনি। তিনি প্রতি মুহূর্তে নিজের বক্তব্য পরিবর্তন করেছেন।
মোহাম্মদ জিয়াউর রাহমান লিখেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি থেকে নিয়ে সরকারের কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা সবাই গণভবনে যাত্রা করতেন। তখন আপনার ঐতিহ্য কোথায় ছিল। সোলায়মান হোসাইন লিখেছেন, এই মুখোশ পরা লীগটাকে বিএনপি থেকে আলাদা করা দরকার।
মমিনুর রশিদ লিখেছেন, যতকিছুই হোক, রনি ভাই কিন্তু আওয়ামী লীগকে মিস করেন। কারণ তিনি কট্টর আওয়ামীপন্থি। নুরুদ্দিন রিয়াজ বলেছেন, দেশ স্বাধীন করেছেন ছাত্র-জনতা, তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন কে ভিসি পদে থাকবে আর কে নিয়োগ পাবে। আপনি মানার কে? আর না মানারই বা কে? আপনি আওয়ামী লীগই রয়ে গেলেন। মানুষ আর হতে পারলেন না।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।