বিদায় ঘণ্টা বাজিয়ে পদত্যাগ করলো আউয়াল কমিশন

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৬:১৭

ছবি: সংগৃহীত

বিদায় ঘণ্টা বাজল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশনের।বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এরপর ১২টা ১২ মিনিটে সাংবাদিকদের সামনে পদত্যাগ পাত্রে সই করেন।

হাবিবুল আউয়াল ছাড়া বর্তমান কমিশনের বাকি চার সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, বেগম রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর ও মো. আনিছুর রহমানও পদত্যাগ করছেন বলে জানান সিইসি।

হাবিবুল আউয়াল বলেন, দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমরা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। রাষ্ট্রপতির কাছে আমরা পদত্যাগপত্র জমা দেব। তাদের পদত্যাগকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশন এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আইডিকার্ড ছাড়া ভিতরে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞাজারি করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের সামনে আসার আগে বেলা ১১টায় ইসি সচিবালয়ের সব কর্মকর্তার সঙ্গে ‘সৌজন্য বিনিময়’ করছেন নির্বাচন কমিশন। এর আগে পদত্যাগের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সিইসি ও চার ইসি পদত্যাগের পর নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে তাদের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে পাঠাতে বলবেন।

হাবিবুল আউয়াল কমিশনের আড়াই বছর

২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি দেশের ত্রয়োদশ সিইসি হিসেবে নিয়োগ পান সাবেক আমলা হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন এই কমিশন। তাদের পরিচালনায় ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হয়। এছাড়া এই আড়াই বছরে দেড় সহস্রাধিক পদে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচন-উপনির্বাচন করেছেন তারা।

২০২২ সালে নতুন কমিশন গঠনের আগে আকস্মিকভাবেই আইন প্রণয়ন হয়, আর সেই আইনের অধীনে প্রথম নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নেন কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ পাঁচ জন। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সংস্কারের দাবি উঠেছে। সংস্কারের প্রতিশ্রুতির মধ্যে পদত্যাগের হিড়িক চলছে।

দেশের অন্যতম প্রধান বড় রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ ইসিতে নিবন্ধিত বেশিরভাগ দল হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশনকে মেনে নেয়নি। ইসির সংলাপের আহ্বানও প্রত্যাখ্যান করেছিল বিএনপিসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন দল ও জোট। এই কমিশনের আমলে গত জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনও বর্জন করে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল।

শুধু আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্র দলগুলো ওই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। জাতীয় নির্বাচনের আগে নামসর্বস্ব রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দেওয়া, বিতর্কিত বিভিন্ন সংস্থাকে পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে অনুমোদন দেওয়া, আইনে নিজেদের ক্ষমতা খর্ব করার প্রস্তাব দেওয়া, ইভিএম ব্যবহার নিয়ে সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলোর দেওয়া মত পাল্টানোসহ কমিশনের নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top