শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

যুক্তরাজ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর সম্পদের পাহাড়, আল জাজিরার চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩:৪৫

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। চট্টগ্রামের জনদরদি এমপি হিসেবে পরিচিত। নিজেকে পরিচয় দেন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে। তবে দেশের বাইরে তার সম্পদের পরিমাণ দেখলে পিলে চমকে যায়। থার্ড ওয়ার্ল্ডের একজন এমপির এমন সম্পদ দেখে রীতিমতো অবাক লন্ডন, দুবাই ও আমেরিকার ধনকুবেরও।

যুক্তরাজ্যে ২৫০ মিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা) খরচ করে ৩৬০টি বিলাসবহুল বাড়ি কিনেছেন। নিজের রিয়েল স্টেট ব্যবসাকে সম্প্রসারণ করেছেন দুবাই, নিউইয়র্ক, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়ায়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার দীর্ঘ অনুসন্ধানে এমন তথ্য উঠে এসেছে। সামান্য সরকারি বেতন পেয়ে ভিনদেশে কীভাবে সাম্রাজ্য গড়ে তুললেন এই মন্ত্রী, তা এখন টক অফ দ্য কান্ট্রি।

দ্য মিনিস্টারস মিলিয়ন্স শিরোনামে অনুসন্ধানী ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত বছর বিনিয়োগকারীর ছদ্মবেশে সাইফুজ্জামানের ১৪ মিলিয়ন ডলারের বাড়িতে যান আল জাজিরার সাংবাদিক। ওই সময় ছদ্মবেশী সাংবাদিকদের সাইফুজ্জামান বড়াই করে জানান, তিনি কুমিরের চামড়ার হাতে তৈরি জুতার ওপর হাজার হাজার ডলার খরচ করেন।

এবং লন্ডনের সবচেয়ে দামি দোকান থেকে ইতালিয়ান স্যুট তৈরি করে পরেন। এ সময় সাইফুজ্জান লন্ডনের নিজের বাড়িও ঘুরিয়ে দেখান তাকে। যেটিতে রয়েছে সিনেমা হল, জিম, ব্যক্তিগত এলিভেটর এবং নতুন রোলস রয়েলস গাড়ি রাখার নিরাপদ আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং এরিয়া।

আল জাজিরার কাছে সাইফুজ্জামান দাবি করেছেন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও আরব আমিরাতে নিজের বৈধ ব্যবসার মাধ্যমে এই সম্পদ কিনেছেন তিনি। তবে অন্তর্র্বতী সরকার তার বিরুদ্ধে এখন অর্থপাচারের অভিযোগ এনে তদন্ত শুরু করেছে। ইতোমধ্যে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ এবং তার পরিবারের মালিকানাধীন ইউসিবিএল ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। আল জাজিরার ইউটিউব অ্যাকাউন্ট ও ওয়েবসাইটে সাইফুজ্জামানকে নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

২০১৪ সালে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে সাইফুজ্জামান বলেছিলেন, আমি শূন্য হাতে এসেছি এবং শূন্য হাতেই যাব। ২০১৯ সালে ভূমিমন্ত্রী হিসেবে পদোন্নতি পান সাইফুজ্জামান চৌধুরী। গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পাঁচ বছর ভূমিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। গত নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে পুনর্র্নিবাচিত হলেও মন্ত্রিসভায় জায়গা পাননি। তবে সংসদীয় ভূমি-সংক্রান্ত কমিটির সভাপতির পদে ছিলেন।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের নির্বাহী কমিটি চেয়ারম্যান ছিলেন। বাংলাদেশের শিল্প প্রতিষ্ঠান আরামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি চট্টগ্রাম চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রির তিনবারের নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন। ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মুখে যখন শেখ হাসিনা ভারতে চলে যান তখন সাইফুজ্জামানও দেশ ছেড়ে চলে যান।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top