শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

বাংলাদেশের সঙ্গে বৈঠক ছিল সৌহার্দ্যপূর্ণ: পাকিস্তানের বিবৃতি

Nasir Uddin | প্রকাশিত: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৯:৫১

ফাইল ছবি

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে ষষ্ঠ পররাষ্ট্রসচিব-স্তরের দ্বিপাক্ষিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকায়। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকায় অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে নেতৃত্ব দেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিন। এই বৈঠক সৌহার্দ্যপূর্ণ ছিল বলে শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বৈঠকে দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার অভিন্ন অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে বলেও বিবৃতিতে জানিয়েছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, দুই পক্ষ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষাগত এবং কৌশলগত সহযোগিতা নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেছে, যা উভয় দেশের জনগণের অভিন্ন ইতিহাস, সাংস্কৃতিক সাম্য এবং অভিলাষ দ্বারা প্রভাবিত। নিউইয়র্ক, কায়রো, সামোয়া ও জেদ্দায় সাম্প্রতিক উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করেছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বৈঠকে উভয় পক্ষ নিয়মিত প্রাতিষ্ঠানিক সংলাপ, বিলম্বিত চুক্তিগুলোর দ্রুত চূড়ান্তকরণ এবং বাণিজ্য, কৃষি, শিক্ষা ও সংযুক্ততার ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছে। পাকিস্তান তার কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একাডেমিক সুযোগের প্রস্তাব দিয়েছে, আর বাংলাদেশ মৎস্য ও সামুদ্রিক অধ্যয়নে কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে প্রদত্ত বৃত্তির প্রস্তাবগুলোর প্রশংসা করা হয়েছে এবং শিক্ষা খাতে গভীরতর সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, কানেক্টিভিটি বা সংযোগ তৈরিকে অগ্রাধিকার দিয়ে উভয় দেশ করাচি ও চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি শিপিং চালুর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে এবং সরাসরি বিমান চলাচল পুনরায় শুরু করার গুরুত্ব তুলে ধরেছে। ভ্রমণ ও ভিসা সুবিধার অগ্রগতিতেও সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, সংযোগকে অগ্রাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ওই বৈঠকে দুই পক্ষ করাচি ও চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি নৌযান চলাচল শুরুর বিষয়টিকে স্বাগত জানায়। দুই পক্ষ সরাসরি আবার আকাশপথে যোগাযোগ চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করে। ভ্রমণ ও ভিসা সহজীকরণে অগ্রগতির প্রতিও উভয় পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছে।

ক্রীড়া, গণমাধ্যম ও সংস্কৃতিতে বড় পরিসরে সহায়তায় বিভিন্ন সমঝোতা স্মারক নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

এতে আরও বলা হয়েছে, বৈঠকে উভয় দেশ সার্কের কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করার পক্ষে মত দিয়েছে। এ সময় কাশ্মীর ইস্যুতে জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুসারে শান্তিপূর্ণ সমাধানের ওপর জোর দিয়েছে পাকিস্তান। এ ছাড়া বৈঠকে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ও সেখানে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা জানানো হয়েছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব বাংলাদেশের অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। তার সঙ্গে বৈঠকে আঞ্চলিক সম্পৃক্ততা ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে বাহ্যিক চাপমুক্ত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। শিগগিরই পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুহাম্মদ ইসহাক দারের বাংলাদেশ সফরের প্রত্যাশার কথা জানানো হয়।

দুই দেশের মধ্যে পরবর্তী বৈঠক ২০২৬ সালে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top