ড. ইউনূস পদত্যাগ করলে কোন সংকটে পড়বে দেশ, সেদিকে দৃষ্টি সবার

রাজীব রায়হান | প্রকাশিত: ২৪ মে ২০২৫, ১৩:৩০

ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদ ছাড়ার ইচ্ছা জানিয়ে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে দেশের রাজনৈতিক মহলে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। ১০ মাস পার করার আগেই মারাত্মক সংকটের মধ্যে পড়েছে ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। আর ড. ইউনূসের পদত্যাগের ভাবনায় নড়বড়ে হয়ে পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এটা জনতার ভাবনা।

এর আগে, জানাক নেতা নাহিদ ইসলাম এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, জনগণের সমর্থন না থাকলে কাজ করা অসম্ভব। শুধু সরকার পরিবর্তনের জন্য জনগণ আন্দোলন করেনি। জনগণ আন্দোলন করেছিল গোটা সিস্টেম বদলানোর জন্য। সংস্কার ছাড়া নির্বাচন করার কোনও মানে হয় না।

ক্ষোভ ও হতাশা থেকে ড. ইউনূস পদত্যাগ করতে চাইছেন, এমন খবর পুরো দেশে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এ নিয়ে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকেই আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে। গণমাধ্যম সূত্র জানিয়েছে, অধ্যাপক ইউনূস পদত্যাগ করুন, কোনো দলই সেটা চায় না। তবে দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময় চায়।

যখন ড. ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে জোর আলোচনা চলছে। তখন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন—এ সিদ্ধান্ত দেশের জন্য ভয়াবহ সংকট ডেকে আনতে পারে। সরকার এরইমধ্যে কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে। একদিকে সরকার বলছে, তাদের কাজ বাধার মুখে পড়ছে; অন্যদিকে সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা নিয়ে অভিযোগ তুলেছে বিএনপি ও এনসিপি।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সংকট কাটাতে হলে সরকারকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসতে হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে জনভিত্তিসম্পন্ন দলগুলোর মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি সরকারের কাঠামোয় পরিবর্তন আনতে হবে। এবং সেখানে ফ্যাসিবাদবিরোধী ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের যুক্ত করে অগ্রসর হতে হবে।

এদিকে ১০ মাস না যেতেই অন্তর্বর্তী সরকার কেন এই সংকটে পড়লো তা নিয়েও জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে এই সংকটের জন্য রাজনৈতিক চাপকেই প্রধান কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। এই রাজনৈতিক চাপ তৈরির জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকেই দায়ী করা হচ্ছে। আর সেটি হলো নির্বাচন প্রশ্নে সরকারের দৃশ্যমান পদক্ষেপ না থাকা।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এরপর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। এই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান দায়িত্ব একটি সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা করা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অভিযোগ, সরকার সেদিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নজর দিচ্ছে না।

যদিও প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের জুনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু সরকারের এই বক্তব্যে রাজনৈতিক দলগুলো আশ্বস্ত হতে পারছে না। কারণ এখন পর্যন্ত সরকার নির্বাচনের রোডম্যাপ ও সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করেনি। সরকারের দিক থেকে তেমন কোনো পদক্ষেপ দৃশ্যমান হয়নি। আর এর মধ্যেই সংকটে পড়লো অন্তর্বর্তী সরকার।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top