বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২

ইউরোফাইটার, জে-১০সি, জেএফ-১৭ ও টি-১২৯ আসছে বাংলাদেশে

নিউজফ্ল্যাশ ডেস্ক | প্রকাশিত: ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:২০

ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘদিন ধরে পর্যাপ্ত আধুনিক যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টারের অভাবে সীমিত সক্ষমতায় পরিচালিত হচ্ছিল বাংলাদেশ বিমানবাহিনী। এবার সেই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে আধুনিকায়নের বড় উদ্যোগ নিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ইতালি, চীন, পাকিস্তান ও তুরস্ক থেকে উন্নত যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার কেনার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে শিগগিরই।

সূত্রমতে, ২০২৭ সালের মধ্যে ইতালি থেকে ১০টি ইউরোফাইটার টাইফুন (Eurofighter Typhoon) ও তুরস্ক থেকে ৬টি টি-১২৯ অ্যাটাক হেলিকপ্টার কেনার পরিকল্পনা রয়েছে। এই উদ্যোগের নীতিগত অনুমোদন ইতোমধ্যে হয়েছে এবং দুই দেশের সরকারের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করে চুক্তি চূড়ান্ত করার প্রস্তুতি চলছে।

এ লক্ষ্যে বিমান সদর একজন এয়ার ভাইস মার্শালকে সভাপতি করে ১২ সদস্যের আন্তমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করবে। এতে প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, ইআরডি, পররাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এবং বিমান সদরের বিশেষজ্ঞরা থাকবেন।
প্রতিনিধি মনোনয়নের শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে চলতি মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত।

যৌথ কমিটি প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে ইতালি ও তুরস্কের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনায় বসবে এবং ২০২৫–২৬ অর্থবছরের মধ্যে ক্রয়চুক্তি সম্পন্নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। চুক্তিতে থাকবে যুদ্ধবিমান সংরক্ষণ, প্রশিক্ষণ, খুচরা যন্ত্রাংশ সরবরাহ ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থার বিষয়গুলো। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া সরকার-টু-সরকার (G2G) ভিত্তিতে সম্পন্ন হবে।

এর পাশাপাশি, চীনের কাছ থেকে ২০টি জে-১০সি (J-10C) যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়ে আগেই আলোচনা চলছিল। এ জন্য প্রায় ২২০ কোটি মার্কিন ডলারের প্রস্তাব এসেছে। এছাড়া পাকিস্তানের জেএফ-১৭ (JF-17 Thunder) কেনার প্রক্রিয়াও চলছে; ১৬টি যুদ্ধবিমান কেনায় প্রায় ৭২০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় ধরা হয়েছে।

দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, চীন-ভারত ও পাক-ভারত সীমান্ত উত্তেজনা, মায়ানমার সংকট ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিবেচনায় বিমানবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধি এখন সময়ের দাবি। সামরিক আধুনিকায়নকে জাতীয় অগ্রাধিকারে রেখেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

বিমানবাহিনীর সাবেক সহকারী প্রধান এয়ার কমোডর (অব.) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন,

“বিমান ও হেলিকপ্টার কেনার এই উদ্যোগ বিমানবাহিনীর আধুনিকতার সূচনা। শুধু যুদ্ধবিমান নয়, সার্ভেইল্যান্স, কমিউনিকেশন, লাইভ ইনফরমেশন ও অবকাঠামো উন্নয়নেও জোর দিতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল—সে ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ এগিয়ে আছে।”

তিনি আরও বলেন,

“ইউরোফাইটার টাইফুন ও জে-১০সি উভয়ই বিশ্বমানের যুদ্ধবিমান। টাইফুন দ্বৈত ইঞ্জিনযুক্ত, দীর্ঘ রেঞ্জ ও নৌ-সমর্থন সক্ষম। অন্যদিকে জে-১০সি ৪.৫ প্রজন্মের, ব্যয়সাশ্রয়ী এবং তুলনামূলকভাবে সহজলভ্য।”

সব মিলিয়ে, ইউরোফাইটার টাইফুন, জে-১০সি, জেএফ-১৭ ও টি-১২৯ হেলিকপ্টার যোগ হলে বাংলাদেশের আকাশ প্রতিরক্ষা আরও শক্তিশালী হবে। এটি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সূত্র: কালের কণ্ঠ



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top