ত্ত্বাবধায়ক ফেরা প্রশ্নে আপিলের রায় আজ
স্টাফ রিপোর্টার: | প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৮
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংক্রান্ত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিল ও সংশ্লিষ্ট আবেদনের ওপর আজ রায় ঘোষণা করবেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এই রায়ের মধ্য দিয়েই নির্ধারিত হবে—১৪ বছর আগে বাতিল হওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরছে কি না, ফিরলে কোন কাঠামোয়, এবং কবে থেকে তা কার্যকর হতে পারে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ গত ১১ নভেম্বর শুনানি শেষে আজকের দিনটি রায়ের জন্য নির্ধারণ করেন। আজকের কার্যতালিকায় ১ ও ২ নম্বরে রাখা হয়েছে সংশ্লিষ্ট দুটি আপিল ও আবেদন।
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানসহ সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা প্রত্যাশা করছেন—সুপ্রিম কোর্ট এমন রায় দেবেন, যাতে চতুর্দশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা কার্যকর হতে পারে।
২০১১ সালে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করেন। রায়ে বলা হয়—তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর পরিপন্থী ও অগণতান্ত্রিক।
তবে ‘রাষ্ট্রীয় প্রয়োজন’ বিবেচনায় দশম ও একাদশ জাতীয় নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থায় আয়োজনের সুযোগ রেখে দেন আদালত।
পরবর্তীতে ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর খায়রুল হকের বিরুদ্ধে রায় পরিবর্তনের অভিযোগ ওঠে—যা দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দেয়। তারপর দলীয় সরকারের অধীনে ধারাবাহিকভাবে তিনটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
গত বছরের জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পুনর্বিবেচনার দাবিতে নতুন করে আলোচনায় আসে পুরনো রায়।
২০২৩ সালের আগস্টে 'সুজন' সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন রিভিউ আবেদন করেন। পরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনসহ আরও কয়েকজন আবেদন জমা দেন।
হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি ও সেন্টার ফর ল’ গভর্ন্যান্স অ্যান্ড পলিসি ইন্টারভেনার হিসেবে যুক্ত হয় মামলায়।
দুই দিন শুনানির পর আপিল বিভাগ ছয়টি আবেদনের মধ্যে একটিতে আপিলের অনুমতি দেয় এবং আরও চারটি আবেদন সেই আপিলের সঙ্গে যুক্ত করে। এরপর ২১ অক্টোবর থেকে শুরু হয় পূর্ণাঙ্গ শুনানি।
রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে সাধারণ জনগণ—সবাই নজর রাখছেন সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তের দিকে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার সম্ভাব্য প্রত্যাবর্তন কি দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা নতুন করে পুনর্গঠনের পথ খুলে দেবে—সেদিকেই এখন সবার দৃষ্টি।
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।