টানা ৯ দিন ধরে স্বাস্থ্য সহকারীদের কর্মবিরতি, কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের অনির্দিষ্টকালীন আন্দোলন

নিয়োগবিধি সংশোধন, বেতনবৈষম্য দূরীকরণ ও টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদানের দাবিতে টানা ৯ দিন ধরে রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে দেশের ৬৪ জেলার স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শক এ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।

গত বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ঢাকায় সমবেত হওয়ার পর কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সদস্য সচিব ফজলুল হক চৌধুরী আন্দোলনকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতিতে রূপ দেওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি জানান, স্বাস্থ্য সহকারীদের প্রস্তাবিত দাবি প্রজ্ঞাপন (জিও) আকারে প্রকাশ না হলে আন্দোলন চলবে।

২৯ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতি প্রথমে তিন দিন শহীদ মিনারে চললেও পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে স্থানান্তরিত হয়। এ কারণে সারা দেশের ১ লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে, যা মা ও শিশুকে টিকা গ্রহণে ব্যাহত করছে। গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবাতেও গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে, যা সংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্য তাদের নেই; তবে ২৭ বছর ধরে বারবার আশ্বাস পাওয়া সত্ত্বেও কোনো বাস্তব অগ্রগতি না হওয়ায় আন্দোলনে বাধ্য হয়েছেন। তারা অভিযোগ করেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরই তাদের দাবির বাস্তবায়নের প্রধান অন্তরায়।

দাবির মধ্যে রয়েছে—নিয়োগবিধি সংশোধন করে স্নাতক বা সমমানের যোগ্যতা যুক্ত করে ১৪তম গ্রেড প্রদান, ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমাধারীদের ১১তম গ্রেড ও টেকনিক্যাল পদমর্যাদা নিশ্চিত করা, ধারাবাহিক পদোন্নতি, প্রশিক্ষণ ছাড়াই স্নাতক স্কেলে অন্তর্ভুক্তি, বেতনস্কেল পুনর্নির্ধারণে টাইম স্কেল যুক্ত করা এবং ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা (এসআইটি) সম্পন্নকারীদের সমমান স্বীকৃতি।

ফজলুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবির ফাইল ইতিমধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রজ্ঞাপন জারি হলেই তারা কর্মস্থলে ফিরে যাবেন।