মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২

জলপাইগুড়ির ছোট্ট 'পুতুল' থেকে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬:২৫

সংগৃহীত

 

বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া—একজন অপ্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িতে জন্ম নেওয়া এই মহীয়সী নারীর শৈশব থেকে রাষ্ট্রনায়ক হয়ে ওঠার গল্পটি হার মানায় যেকোনো চলচ্চিত্রকেও।

ইস্কান্দার মজুমদার ও তৈয়বা মজুমদারের পাঁচ সন্তানের মধ্যে খালেদা জিয়া ছিলেন তৃতীয়। পরিবারের আদরের এই কন্যার ডাকনাম ছিল ‘পুতুল’। তবে চিকিৎসক ও স্বজনদের কাছে তিনি ‘শান্তি’ বা ‘টিপসি’ নামেও পরিচিত ছিলেন। তাঁর শৈশব ও কৈশোরের বড় একটি সময় কেটেছে দিনাজপুরের বালুবাড়ির পৈত্রিক নিবাসে। তিনি পড়াশোনা করেছেন দিনাজপুর গার্লস স্কুলে।

১৯৬০ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে তৎকালীন সেনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। বিয়ের পর স্বামীর নামের সঙ্গে মিল রেখে তিনি নিজের নাম রাখেন ‘খালেদা জিয়া’। বিয়ের পর দীর্ঘ সময় তিনি একজন নিভৃতচারী গৃহবধূ হিসেবে স্বামীর ছায়া হয়ে পাশে ছিলেন। তিনি দুই পুত্রসন্তান—তারেক রহমান ও প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর জননী।

১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আকস্মিক শাহাদাত বরণের পর বিএনপির অস্তিত্ব যখন সংকটে, ঠিক তখনই ১৯৮২ সালের ২ জানুয়ারি রাজনীতিতে যোগ দেন তিনি। রাজনীতির মাঠে তিনি হয়ে ওঠেন ‘আপসহীন’। ১৯৮৩ সালে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এবং ১৯৮৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়ে দলের হাল ধরেন। তাঁর এই অনড় ও সাহসী নেতৃত্বের ফলেই ১৯৯১ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিএনপি বিপুল বিজয় অর্জন করে এবং তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।

বেগম জিয়ার রাজনৈতিক জীবনের অন্যতম গৌরবোজ্জ্বল সাফল্য হলো দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন। তাঁর আমলেই সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার পুনরায় ফিরে আসে।

ব্যক্তিগত জীবনে বর্তমানে তাঁর ভাই শামীম ইস্কান্দার ও বোন সেলিনা ইসলাম জীবিত থাকলেও, বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে বেগম খালেদা জিয়া নিজেকে এমন এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন, যেখানে তিনি চিরকাল এক অপরাজেয় ও সাহসী নাম হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

 

 

এনএফ৭১/এসআর

 



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top