চাঁপাইনবাবগঞ্জ মুক্ত দিবস আজ
ডেস্ক রিপোর্ট | প্রকাশিত: ১৪ ডিসেম্বর ২০২০, ১১:৩৭
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে:
১৫ ডিসেম্বর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ মুক্ত দিবস। দীর্ঘ নয় মাস মরণপণ যুদ্ধে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে ১৯৭১ সালের এই দিনে দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জকে মুক্ত করেছিল বাংলার দামাল ছেলেরা। উড়িয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ৭নং সেক্টরের অধীন ২টি সাব সেক্টরের মধ্যে মোহদিপুর সেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর এবং দলদলি সাব সেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন লে. রফিক।
১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলার অন্যান্য এলাকা শত্রু মুক্ত হলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর থেকে যায় পাকিস্তানি সেনা ও তাদের অনুগত রাজাকারদের দখলে। ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা শহর দখলের জন্য মহানন্দা নদীর ওপারে বারঘরিয়ায় অবস্থান নেয়।
১৪ ডিসেম্বর ভোর রাতে ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর তার বিশাল বাহিনীকে তিন ভাগে ভাগ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর দখলের জন্য আক্রমণ শুরু করেন। তিনি একটি ছোট নৌকা নিয়ে মহনন্দা নদী পার হয়ে রেহাইচর গ্রামে অবস্থান
গ্রহণ করেন এবং শত্রুদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করতে করতে সামনের দিকে এগুতে থাকেন। ১৪ ডিসেম্বর রাতের আধার পুরোপুরি কেটে যাওয়ার আগেই সম্মুখযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর একটি বুলেট ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরের কপালে বিদ্ধ হলে ঘটনাস্থলেই তিনি শহীদ হন।
বিজয় দিবসের একদিন আগে চলে যান তিনি না ফেরার দেশে। পরে মুক্তিযোদ্ধাদের সাঁড়াশি অভিযানের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয় পাক সেনারা। ১৫ ডিসেম্বর হাজারো মুক্তিযোদ্ধার অশ্রুশিক্ত ভালোবাসা ও শ্রদ্ধায় বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরকে তার অন্তিম ইচ্ছে অনুযায়ী সমাহিত করা হয় ঐতিহাসিক ছোট সোনামসজিদ প্রাঙ্গণে। পরে তার বীরত্বগাঁথার জন্য রাষ্ট্র তাকে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে সম্মানিত করে।
১৪ ডিসেম্বর রাতেই পাকিস্তানিরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছেড়ে চলে গেলে ১৫ ডিসেম্বর ভোরে মুক্তিযোদ্ধারা দলে দলে শহরে প্রবেশ করে। এর মধ্য দিয়েই শত্রুমুক্ত হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ। ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় বিজয় দিবস।
এনএফ৭১/জেএস/২০২০
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।