শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

আম বয়ানে শুরু বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব

ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে কখন কারা বয়ান করবেন? জেনে নিন

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ১৭:৩৯

ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুরু হচ্ছে ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। চলবে ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা এরই মধ্যে ইজতেমা ময়দান বুঝে পেয়েছেন। ইজতেমা উপলক্ষে আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। এ ছাড়া ইজতেমা ময়দান পরিষ্কারের কাজ চলছে জোরেশোরে।

এদিকে এবারের ইজতেমায় গতকাল পর্যন্ত মাওলানা সাদ কান্ধলভির অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়নি। তবে গতকাল সন্ধ্যায় ইজতেমা ময়দানে পৌঁছেছেন মাওলানা সাদের তিন ছেলে। তাঁরা হলেন মাওলানা ইউসুফ কান্ধলভি, মাওলানা সাঈদ কান্ধলভি ও মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভি। তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মুসল্লিরা গতকাল বুধবার থেকে ইজতেমা ময়দানে জড়ো হতে থাকেন। এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থেকে দুই হাজারের বেশি মুসল্লি ইজতেমা ময়দানে জড়ো হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়ক মোহাম্মদ সায়েম।

ইজতেমা উপলক্ষে গতকাল বিশেষ ট্রাফিক নির্দেশনা জারি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। নির্দেশনা অনুযায়ী, আখেরি মোনাজাতের দিন ভোর ৪টা থেকে আন্ত জেলা বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও অন্যান্য ভারী যানবাহন আবদুল্লাপুর, ধউর ব্রিজ মোড় পরিহার করে মহাখালী, বিজয় সরণি ও গাবতলী হয়ে চলাচল করবে।

নবীনগর, বাইপাইল ও আশুলিয়া হয়ে উত্তরবঙ্গ থেকে আসা যানবাহন কামারপাড়া এবং আবদুল্লাপুর ক্রসিং পরিহার করে সাভার, গাবতলী দিয়ে চলাচল করবে অথবা ধউর ব্রিজ ক্রসিং হয়ে মিরপুর বেড়িবাঁধ দিয়ে চলাচল করবে।

ঢাকা থেকে বিমানবন্দর সড়ক দিয়ে আসা যানবাহন কুড়িল ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে প্রগতি সরণি হয়ে অথবা বিশ্বরোড ক্রসিং (নিকুঞ্জ-১) দিয়ে ইউ টার্ন করে চলাচল করবে। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাওলা ও বিমানবন্দর দিয়ে নামা যাবে না।

আখেরি মোনাজাতের দিন ভোর ৪টা থেকে ৩০০ ফিট দিয়ে আসা যানবাহন কুড়িল ফ্লাইওভার লুপ-২ (বিমানবন্দরগামী) পরিহার করে প্রগতি সরণি এবং কুড়িল ফ্লাইওভার লুপ-৪ ব্যবহার করবে। কোনোভাবেই বিমানবন্দর সড়ক ব্যবহার করা যাবে না। তবে উত্তরার বাসিন্দা, বিমানযাত্রী, বিমান অপারেশনাল যানবাহন, বিমানের ক্রু বহনকারী যানবাহন, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর গাড়ি ও অ্যাম্বুল্যান্স বিমানবন্দর সড়ক ব্যবহার করতে পারবে।

ঢাকা মহানগর থেকে যেসব মুসল্লি হেঁটে বিশ্ব ইজতেমায় যাবেন, তাঁদের তুরাগ নদের ওপর নির্মিত বেইলি ব্রিজ অথবা কামাড়পাড়া ব্রিজ দিয়ে টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে যাতায়াত করতে হবে। বিদেশগামী যাত্রীদের বিমানবন্দরে আনা-নেওয়ার জন্য আখেরি মোনাজাতের দিন পদ্মা ইউ লুপ এবং কুড়াতলী লুপ-২ থেকে ট্রাফিক উত্তরা বিভাগের ব্যবস্থাপনায় পরিবহনসেবা দেওয়া হবে।

আজ সকালে ইজতেমা আয়োজক কমিটির শীর্ষ মুরব্বিদের পরামর্শক্রমে বৃহস্পতিবার থেকে রোববার পর্যন্ত দেশি-বিদেশি মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে তাবলিগের ৬ উসুল যথা— ইমান, নামাজ, এলেম ও জিকির, একরামুল মুসলিমিন, তাসহিহে নিয়ত, দাওয়াত ও তাবলিগ সম্পর্কে বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক মূল্যবান বয়ান রাখবেন মাওলানাগণ।

বৃহস্পতিবার বাদ জোহর বয়ান করবেন পাকিস্তানের মাওলানা হারুনুর রশিদ। তার বয়ান বাংলায় অনুবাদ করবেন বাংলাদেশের মাওলানা আজিম উদ্দিন। বাদ আসর বয়ান করবেন ইজতেমা আয়োজক কমিটির শীর্ষ মুরব্বি ওয়াসিফুল ইসলাম। বাদ মাগরিব বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা আব্দুস সাত্তার। তার বয়ান বঙ্গানুবাদ করবেন বাংলাদেশের মাওলানা মুফতি জিয়া বিন কাশেম।

আগামীকাল শুক্রবার বাদ ফজর বয়ান করবেন দিল্লির মাওলানা ইলিয়াস বিন সাদ কান্ধলভী। তিনি মাওলানা সাদ আহমেদ কান্ধলভীর বড় ছেলে। তার বয়ান বাংলায় অনুবাদ করবেন বাংলাদেশের মাওলানা মনির বিন ইউসুফ। এর পর সকাল ১০টায় তালিমের বয়ান (মৌজু) করবেন দিল্লির মাওলানা ইলিয়াস বিন সাদ কান্ধলভী।

জুমার আগে জুমার ফাজায়েল সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বয়ান করবেন বাংলাদেশের মাওলানা মনির বিন ইউসুফ। বাদ জুমা আরবি ভাষায় বয়ান করবেন শেখ মোফলে। তার বয়ান বাংলায় অনুবাদ করবেন শেখ আব্দুল্লাহ মনসুর। বাদ আসর বয়ান করবেন বাংলাদেশের মাওলানা মোশাররফ হোসেন। বাদ মাগরিব বয়ান করবেন দিল্লির মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ কান্ধলভী। তার বয়ান বাংলায় তরজমা করবেন মাওলানা জিয়া বিন কাশেম।

শনিবার বাদ ফজর বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা সাঈদ বিন সাদ কান্ধলভী। তার বয়ান বাংলায় অনুবাদ করবেন বাংলাদেশের মাওলানা মুফতি ওসামা ইসলাম। সকাল সাড়ে ১০টায় মোয়াল্লেমদের উদ্দেশ্যে তালিমে হালকায় বয়ান রাখবেন ভারতের মাওলানা আব্দুল আজিম।

বাদ জোহর বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা মোহাম্মদ শরিফ। তার বয়ান বাংলায় তরজমা করবেন বাংলাদেশের মাওলানা মাহমুদুল্লাহ। বাদ আসর বয়ান করবেন পাকিস্তানের মাওলানা ওসমান আলী। তার বয়ান বাংলায় অনুবাদ করবেন মাওলানা আজিম উদ্দিন। বাদ মাগরিব বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা মুফতি ইয়াকুব আলী। তার বয়ান বাংলায় তরজমা করবেন বাংলাদেশের মাওলানা মনির বিন ইউসুফ।

শেষ দিন রোববার বাদ ফজর বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা মুফতি মাকসুদ। তার বয়ান বাংলায় অনুবাদ করবেন বাংলাদেশের মাওলানা শেখ আব্দুল্লাহ মনসুর। এর পরেই হেদায়েতের বয়ান ও দোয়া পরিচালনা করবেন দিল্লির মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ কান্ধলভী। তার হেদায়েতি বয়ানের বাংলা অনুবাদ করবেন বাংলাদেশের মাওলানা মুফতি মনির বিন ইউসুফ। বিষয়টি বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করেছেন বিশ্ব ইজতেমা দ্বিতীয় পর্বের মিডিয়া সমন্বয়কারী মো. সায়েম।

 



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top