সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

মা-বাবা ও স্ত্রীর নামে কসম করলে কী হয়?

ধর্ম ডেস্ক | প্রকাশিত: ৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৫৪

সংগৃহীত

মানুষের জীবন নানা উত্থান–পতনে ভরা। সুখ–দুঃখের প্রতিটি মোড়ে সত্য ও সততার গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি। ইসলামও মুসলমানদের সত্যবাদিতার ওপর জোর দিয়ে এসেছে। আল কোরআনে বলা হয়েছে— “তোমরা সৎ থাকলে আল্লাহ তোমাদের জন্য পথ করে দেবেন এবং অবস্থা ভালো করবেন।” (সুরা আত-তাহরিম: ২)

আরেক আয়াতে আল্লাহ বলেন, “তোমরা সত্য কথা বল, আল্লাহ তোমাদেরকে সরল পথ দেখাবেন।” (সুরা আহজাব: ৭০–৭১)

তবে বাস্তবে অনেক সময় মানুষ নিজেদের বক্তব্যকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করতে মা–বাবা, স্ত্রী বা পরিচিতজনের নামে কসম করে থাকে। কিন্তু ইসলামি শরিয়তে এ ধরনের কসম কতটা গ্রহণযোগ্য—তা নিয়ে দ্বিধা রয়েছে।

এ বিষয়ে রাজধানীর জামিয়া ইকরা মাদ্রাসার ফাজিল মুফতি ইয়াহইয়া শহিদ কালবেলা জানান, ইসলামে কসম বা শপথ শুধু আল্লাহর নামেই করা বৈধ। আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে বা কোনো কিছুকে সামনে রেখে কসম করা হারাম এবং ছোট শিরকের অন্তর্ভুক্ত।

তিনি বলেন, “অনেকে মা–বাবা কিংবা অন্য কারও নামে কসম করেন। আবার অনেক রাজনৈতিক দল দেশের মাটির কসম দেয়। এসবই শরিয়তসম্মত নয়। কসম হবে শুধু আল্লাহর নামে।”

নবীজির নির্দেশনা

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, একবার তিনি তার পিতার নামে কসম করলে নবীজি (সা.) তাকে সতর্ক করে বলেন— “আল্লাহ তোমাদের বাপ–দাদার নামে কসম করতে নিষেধ করেছেন। কেউ কসম করলে আল্লাহর নামে করবে, নতুবা চুপ থাকবে।” (বোখারি: ৬১০৮)

আরেক হাদিসে এসেছে—

“যে আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর নামে কসম করল, সে শিরক করল।” (আবু দাউদ: ৩২৫১)

কসম ভাঙলে করণীয়

মুফতি ইয়াহইয়া শহিদ বলেন, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও নামে কসম করলে তা ইসলামে কসম হিসেবেই গণ্য হয় না, তাই তা ভাঙলে কাফফারা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে এটি যেহেতু শিরক ও নিষিদ্ধ কাজ, তাই অজ্ঞাতসারে কেউ এ ধরনের কসম করলে তাকে তাওবা করতে হবে।

অন্যদিকে, আল্লাহর নামে করা কসম ভঙ্গ হলে কাফফারা দিতে হয়—

১০ জন দরিদ্রকে দুই বেলা পরিতৃপ্তিসহ খাবার খাওয়ানো, অথবা

১০ জন দরিদ্রকে পোশাক প্রদান

—এ দুইটির কোনোটি করতে না পারলে লাগাতার তিন দিন রোজা রাখতে হবে।

কোরআনে বলা হয়েছে—

“আল্লাহ তুচ্ছ কসমের জন্য তোমাদেরকে দায়ী করবেন না; কিন্তু যেসব কসম দৃঢ়ভাবে করা হয়, তিনি সেগুলোর জন্য দায়ী করবেন।” (সুরা মায়িদা: ৮৯)

 

এনএফ৭১/ওতু



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top