মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

নোবেল পুরস্কার জয়ের কল পেয়ে অধ্যাপক অ্যানি যা বললেন !

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৪ অক্টোবর ২০২৩, ১৮:১২

ছবি: সংগৃহীত

ইলেকট্রন গতিবিদ্যার অধ্যয়নে ‘অ্যাটোসেকেন্ডে আলোর স্পন্দন’ বের করার ফর্মুলা আবিষ্কারের জন্য এবছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিনজন। মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) রয়েল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্স তাদের নাম ঘোষণা করেছে। তাদের মধ্যে একজন সুইডেনের লুন্ড ইউনির্ভাসিটির প্রফেসর অ্যান ল'হুইলিয়ার। এই পদার্থবিজ্ঞানীর জন্ম ১৯৬৪ সালে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে। ফ্রান্সের পিয়েরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৬ সালে পিএইচডি অর্জন করেন তিনি।

মঙ্গলবার নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে অ্যানকে যখন কল দেওয়া হয় তখন তিনি ক্লাসে ব্যস্ত ছিলেন। একাধিক কল দেয়ার পরেও ক্লাস চলাকালীন কল রিসিভ করেননি তিনি। ক্লাস বিরতিতে আবার কল এলে তিনি রিসিভ করেন। নোবেল কর্তৃপক্ষ থেকে অ্যাডাম স্মিথ নামের এক ব্যক্তি অপর প্রান্ত থেকে কথা বলার জন্য সময় চান।

অ্যান জানান, আমি একটু ব্যস্ত, ক্লাস নিচ্ছি। কল দেয়া সেই ব্যক্তি তার কাছ থেকে দুই থেকে তিন মিনিট সময় দেয়ার অনুরোধ জানালে কথা বলার সম্মতি দেন প্রফেসর অ্যান ল'হুইলিয়ার। পরে তাকে অভিনন্দন জানিয়ে নোবেল পুরষ্কার জয়ের সংবাদ দেন কলদাতা অ্যাডাম স্মিথ। প্রতিউত্তরে অ্যান ল’হুলিয়ার তাকে ধন্যবাদ জানান।

অ্যাডাম স্মিথ অ্যানের কাছে জানতে চান যে, ক্লাসে শিক্ষার্থীদের তিনি এই সুখবরটি দেবেন কিনা। তখন অ্যান বলেন, তাদেরকে অবশ্যই জানাবো। তারা জানলে আশা করি অনেক খুশি হবে। এটা অবশ্যই তাদের জন্য অনেক মজাদার বিষয় হবে। তবে অ্যান জানান, শিক্ষার্থীদের খবর দেওয়ার পর দ্রুত আবার লেকচারে ফিরে যেতে হবে।

বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছে নোবেল প্রাইজ কর্তৃপক্ষ। নোবেল প্রাইজ নামক ভেরিফাইড পেজে অ্যানি এল’হুলিয়ারের ফোনে কথা বলার একটি ছবি পোস্ট দিয়ে বলা হয়েছে, একজন নিবেদিত প্রাণ শিক্ষকের গল্প!

পদার্থবিজ্ঞানে ২০২৩ সালের নোবেল পুরস্কার পাওয়া অ্যানি এল’হুলিয়ারকে তার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আলাদা করা যায়নি। যখন আমাদের নতুন পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ীকে কল দেয়া হয় তখন তিনি লুন্ড ইউনিভার্সিটিতে লেকচারে ব্যস্ত ছিলেন।

পরবর্তীতে এক পর্যায়ে তিনি লক্ষ করেন তার ফোনে একাধিক মিস কল রয়েছে। অতঃপর ক্লাস বিরতিতে ফোন রিসিভ করেন তিনি। তবে পুরস্কারের খবরের পর, এল’হুলিয়ার পুনরায় তার শিক্ষার্থীদের কাছে ফিরে যান।

এছাড়াও, অ্যানি এল’হুলিয়ারকে পুরস্কারের সংবাদ দেয়ার সেই ফোন কলের রেকর্ডটিও ফেসবুকে পাবলিশ করেছে নোবেল প্রাইজ কর্তৃপক্ষ। যেখানে শোনা যায় তিনি ক্লাসের জন্য নিজের ব্যস্ততা প্রকাশ করছেন।

অ্যান হুইলিয়ার হল পঞ্চম মহিলা যিনি পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। হুইলিয়ারের আগে ১৯০৩ সালে মেরি কুরি, ১৯৬৩ সালে মারিয়া গোয়েপার্ট মেয়ার, ২০১৮ সালে ডোনা স্ট্রিকল্যান্ড এবং ২০২০ সালে আন্দ্রেয়া গেজ পদার্থ বিজ্ঞানে পুরস্কার জেতা নারী।

রয়েল সুইডিশ অ্যাকাডেমির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মানবতাকে পরমাণু ও অণুর ভেতরে ইলেক্ট্রনের জগত অন্বেষণের জন্য নতুন রসদ জুগিয়েছে এই তিনজনের গবেষণা। যেখানে ইলেক্ট্রনগুলো চলে বা শক্তি পরিবর্তন করে, সেখানে আলোর অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত স্পন্দন তৈরি করার একটি উপায় তারা উদ্ভাবন করেছেন, যা দ্রুত প্রক্রিয়াগুলো পরিমাপে ব্যবহার করা যেতে পারে। পুরস্কার হিসাবে বিজয়ী তিনজন পাচ্ছেন মোট এক কোটি ১০ লাখ ক্রোনার (৯ লাখ ৮৬ হাজার মার্কিন ডলার)।

১৯০১ সাল থেকে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল দেওয়া হচ্ছে। এরপর থেকে ১১৬ বার এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২২২ জন পদার্থবিজ্ঞানী সম্মানজনক এই পুরস্কার জিতেছেন।

 

 




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top