রেকর্ড গড়ে টানা দ্বিতীয় বিপিএল শিরোপা বরিশালের
Nasir Uddin | প্রকাশিত: ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২২:১২
![ছবি: সংগৃহীত](https://www.newsflash71.com/pmanager/barishal-win-20250207221141.jpg)
বিপিএলের গতবারের আসরে তামিম ইকবালের নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ফরচুন বরিশাল। বিপিএলের ১১তম আসরের ফাইনালেও শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে চট্টগ্রামকে হারিয়ে বরিশালের টানা দ্বিতীয় শিরোপা ঘরে তুলে নিল বরিশাল। তামিমের ফিফটি ও মেয়ার্সের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে চিটাগংকে তিন উইকেটে জয় পায় তামিমের দল।
আগে ব্যাট করতে নেমে বরিশালের বিপক্ষে ৩ উইকেটে ১৯৪ রানের বড় সংগ্রহই গড়েছিল বন্দরনগরীর দলটি। আর বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তামিমের ২৯ বলে ৫৪ রানের আগ্রাসী ইনিংসের পর কাইল মায়ার্সের ৪৬ রানের ঝড়ো ইনিংসে জয়ের পথে এগোয় বরিশাল।
বিপিএলের ফাইনালে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডটা এখন বরিশালের। ২০২৩ আসরে সিলেট স্ট্রাইকার্সের ১৭৫ রান ১৯.২ ওভারে তাড়া করেছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। সেটাই ছিল সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড।
এদিন মিরপুরে একটু পর পরই বদলেছে ম্যাচে চরিত্র। কখনও জয়ের পাল্লা ভারী ছিল বরিশালের, আবার কখনও চট্টগ্রামের। তবে শেষ হাসিটা হেসেছে বরিশালই। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে চট্টগ্রামকে হারিয়ে বরিশালের টানা দ্বিতীয় শিরোপা জয়।
ফাইনালে বরিশালের হয়ে আজ ওপেনিংয়ে নামেন তামিম ইকবাল ও তাওহীদ হৃদয়। ব্যাটিংয়ে নেমেই চিটাগংয়ের বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবাল। অন্যপ্রান্তে থাকা তাওহীদ হৃদয় দেখেশুনেই খেলতে থাকেন।
এই জুটিতে ভর করে পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ৫৭ রান তুলে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। রান তাড়ায় নতুন এক রেকর্ড গড়েছেন তামিম ও হৃদয়। ৫.৪ ওভারে জুটির পঞ্চাশ পূরণ করেন তারা দুজন। বিপিএলের ফাইনালে রান তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে এটাই প্রথম পঞ্চাশ রানের জুটি। যেকোন উইকেট বিবেচনায় এটি অষ্টম পঞ্চাশ ছোঁয়া রানের জুটি। ৮.১ ওভারে তামিম ফিরে গেলে জুটি ভাঙে। নয়টি চার ও এক ছক্কায় ২৯ বলে ৫৪ রান করেন তামিম। একইওভারে ডেভিড মালানের উইকেটও হারায় বরিশাল। ২ বলে ১ রান করে লেগবিফোরের ফাঁদে পড়ে ফিরে যান।
কাইল মেয়ার্স আর হৃদয়ের জুটিটাও খুব একটা বড় হয়নি। ১৮ রান যোগ করেই জুটি ভাঙে। দলীয় ৯৬ রানে হৃদয় ফিরে যান। তিন চারে ২৮ বলে ৩২ রান করেন। চতুর্থ উইকেটে মেয়ার্স আর মুশফিকুর রহিম মিলে যোগ করেন ৩৪ রান। ১২.৪ ওভারে ফিরে যান মুশফিক। তিন চারে ৯ বলে ১৬ রান করেন।
১৮তম ওভারে জোড়া উইকেট হারায় বরিশাল। ১৭.৩ ওভারে মেয়ার্সকে ফেরান শরিফুল। তিনটি করে চারও ছক্কায় ২৮ বলে ৪৬ রান করেন ক্যারিবীয় তারকা। ওভারের পঞ্চম বলে দলীয় ১৭৩ রানে মাহমুদউল্লাহকেও ফেরান শরিফুল। ১১ বলে ৭ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। ১৯তম ওভারের শেষ বলে মোহাম্মদ নবিকে ফেরান বিনুরা ফের্নান্দো। নবি ৪ বলে ৪ রান করেন।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য বরিশালের প্রয়োজন ছিল ৮ রান। হুসাইন তালাতের হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক মিঠুন। প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান রিশাদ। দ্বিতীয় বলে সিঙ্গেল নিয়ে স্কোর লেভেল করেন। স্ট্রাইকে এসে প্রথম বল ব্যাটে লাগাতে পারেননি তানভীর। পরের বলও ব্যাটে লাগাতে ব্যর্থ হন। তবে অতিরিক্ত বাউন্সারের কারণে ওয়াইডের সঙ্কেত দেন আম্পায়ার। তাতেই উল্লাসে মাতে বরিশাল।
চিটাগংয়ের হয়ে শরিফুল ইসলাম চারটি উইকেট নেন। নাইম ইসলাম দুটি এবং বিনুরো ফের্নান্দো এক উইকেট নেন।
বরিশালের বিপক্ষে আগে ব্যাট করতে নেমে আজ শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিলেন চিটাগাংয়ের দুই ওপেনার খাজা এবং ইমন। এ দুজন মিলে আজ প্রথম ৬ ওভারেই স্কোরবোর্ডে তুলেন ৫১ রান। বরিশালের বোলারদের পাতা না দিয়ে চার-ছয়ের বন্যা বইয়ে দ্রুত সংগ্রহ বাড়াতে থাকেন এ দুজন। খাজার সঙ্গে আজ ১২১ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন ইমন।
৪৪ বলে ৭ চার আর ৩ ছয়ে ৬৬ রানের আগ্রাসী এক ইনিংস খেলে খাজা আউট হন ইবাদত হোসেনের বলে ক্যাচ তুলে। এদিকে খাজা ফিরলেও আরেক ওপেনার ইমন দলকে পথ দেখিয়েছেন। খাজা ফেরার পর ক্রিজে আসা গ্রাহাম ক্লার্ককে নিয়ে এরপর চিটাগাংকে বড় সংগ্রহ এনে দিয়েছেন ইমন। দুজন মিলে গড়েছিলেন ৭০ রানের জুটি।
দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেওয়ার পথে ৩০ বলে নিজের ফিফটি পূরণ করেন ইমন। বাংলাদেশি এই ওপেনারের মতোই আগ্রাসী মেজাজে ছিলেন ক্লার্ক। তিনিও খেলেছেন ২৩ বলে ২ চার আর ৩ ছয়ে ৪৪ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। এদিকে দলীয় ১৯১ রানে ৪৪ রান করে ক্লার্ক বিদায় নেওয়ার পর ইমনও আউট হন ব্যক্তিগত ৭৮ রানে।
এ দুজন ফেরার পর আর নিজেদের সংগ্রহ খুব বেশি বাড়িয়ে নিতে পারেনি চিটাগাং। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৯৪ রানেই থামে বন্দর নগরীর দলটি।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।