১৬ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ হবে অবৈধ মোবাইল হ্যান্ডসেট
নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:৫৬
অবৈধভাবে আমদানি করা বা কর ফাঁকি দিয়ে দেশে আনা মোবাইল হ্যান্ডসেট চলতি বছরের ১৬ ডিসেম্বর থেকে নেটওয়ার্কে বন্ধ করে দেবে সরকার।
কর ফাঁকি রোধ, মোবাইল চুরি ও প্রতারণা দমন এবং স্থানীয় হ্যান্ডসেট উৎপাদন শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
তবে ব্যবহারকারীদের আশ্বস্ত করেছে সংস্থাটি। বর্তমানে ব্যবহৃত অবৈধ ফোনগুলো বন্ধ হবে না; শুধু নতুন করে নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়া অনিবন্ধিত বা নকল ডিভাইসই ব্লক হবে।
এনইআইআর সিস্টেম চালুর ঘোষণা
বুধবার ঢাকায় বিটিআরসির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি–বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
তিনি বলেন,
“সিস্টেমটি চালু হলে এটি অপরাধ দমনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। চুরি যাওয়া বা অপরাধমূলক কাজে ব্যবহৃত ফোন সহজেই শনাক্ত ও ব্লক করা যাবে। এটি নকল হ্যান্ডসেটের ব্যবহারও কমাবে।”
কীভাবে কাজ করবে এনইআইআর
ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (NEIR) মূলত প্রতিটি ফোনের ১৫-সংখ্যার আইএমইআই (IMEI) নম্বরের মাধ্যমে ডিভাইস শনাক্ত করে।
বৈধ ফোনের আইএমইআই নিবন্ধিত থাকলে সেটি নেটওয়ার্কে স্বাভাবিকভাবে কাজ করবে।
অনিবন্ধিত, ডুপ্লিকেট বা নকল আইএমইআইযুক্ত ফোন স্বয়ংক্রিয়ভাবে নেটওয়ার্ক থেকে ব্লক হয়ে যাবে। নতুন ফোন কেনার আগে গ্রাহকরা আইএমইআই যাচাই করতে পারবেন—KYD <স্পেস> [IMEI নম্বর] লিখে নির্দিষ্ট নম্বরে এসএমএস পাঠিয়ে। ফিরতি বার্তায় জানানো হবে ফোনটি বৈধ কি না।
বিদেশ থেকে আনা ফোনের জন্য প্রক্রিয়া
বিদেশ থেকে বৈধভাবে আনা বা উপহার হিসেবে পাওয়া ফোনের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের ডিভাইসের আইএমইআই নম্বর, পাসপোর্ট কপি, ইমিগ্রেশন স্ট্যাম্প ও ক্রয় রশিদ জমা দিতে হবে। যাচাই শেষে ফোনটি নেটওয়ার্কে স্থায়ীভাবে ব্যবহারের অনুমতি পাবে।
সিস্টেমটিতে থাকবে মালিকানা হস্তান্তর ও নিবন্ধন বাতিলের সুবিধাও। ব্যবহৃত ফোন বিক্রি বা উপহার দিলে পুরনো মালিককে অ্যাপ বা ইউএসএসডি কোডের মাধ্যমে নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।
হারানো ফোনে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা
হারানো বা চুরি হওয়া ফোন তাৎক্ষণিকভাবে ব্লক করা যাবে, ফলে সেটি দেশের সব মোবাইল নেটওয়ার্কে আর ব্যবহারযোগ্য থাকবে না।
বছরে ২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি
শিল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র অনুযায়ী, দেশে বিক্রি হওয়া মোবাইল ফোনের প্রায় ৪০ শতাংশই অবৈধভাবে বাজারে আসে, যার ফলে সরকার প্রতি বছর প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারায়।
বিটিআরসি জানিয়েছে, এনইআইআর চালু হলে রাজস্ব ফাঁকি রোধের পাশাপাশি স্থানীয় হ্যান্ডসেট উৎপাদন শিল্পও সুরক্ষা পাবে।বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী বলেন,“আমরা হঠাৎ করে কোনো হ্যান্ডসেট বন্ধ করব না। ব্যবহারকারীদের জন্য পর্যাপ্ত সময় ও নির্দেশনা দেওয়া হবে, যাতে কেউ ভোগান্তিতে না পড়েন।”
নিফ্লা৭১/ওতু
বিষয়:

পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।