নাইজারে সামরিক অভ্যুত্থান, দেশজুড়ে কারফিউ
রাজিউর রাহমান | প্রকাশিত: ২৮ জুলাই ২০২৩, ০৩:২৯
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। একইসঙ্গে সেনা সদস্যরা দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমকে আটক করেছে। এছাড়া দেশব্যাপী রাত্রিকালীন কারফিউও জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যম জানায়, নাইজারের সৈন্যরা সামরিক অভ্যুত্থানের কথা ঘোষণা করেছে। তারা সংবিধান ভেঙে দিয়েছে, এবং পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটির সীমান্তও বন্ধ করে দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাজুমকে বুধবার সকাল থেকে প্রেসিডেন্ট গার্ডের সৈন্যরা আটক করে রেখেছে।
বুধবার নয়জন ইউনিফর্মধারী সৈন্যকে সাথে নিয়ে টিভিতে অভ্যুত্থানর ঘোষণা দেন নাইজারের সেনাবাহিনীর কর্নেল মেজর আমাদু আবদ্রামানে। সেখানে তিনি বলেন, আমরা, প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা বাহিনী দেশের চলমান শাসনের অবসান ঘটাতে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি বলেন, নিরাপত্তা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি এবং দুর্বল অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুশাসনের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঘটনার পরেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন বিশ্বনেতারা। আফ্রিকার দেশগুলির সংগঠনের পক্ষ থেকে নাইজেরিয়া এই ঘটনার কড়া নিন্দা করেছে। তাদের বক্তব্য, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে জেতা সরকারকে সরিয়ে যেভাবে সেনা ক্ষমতা দখল করেছে, তা অন্যায়। দ্রুত প্রেসিডেন্টের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করেছে তারা। বস্তুত, নাইজেরিয়া নাইজারের প্রতিবেশী। তারা প্রেসিডেন্টকে দ্রুত ছেড়ে দেওয়ার দাবিও করেছে।
আমেরিকাও একই দাবি করেছে। দ্রুত প্রেসিডেন্টের মুক্তির কথা লিখেছেন মার্কিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। টুইটে তিনি লিখেছেন, বিদ্রোহের খবর প্রথম ছড়ানোর পরে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার ফোনে কথা হয়েছে। ব্লিংকেনের হুমকি, কেবলমাত্র গণতান্ত্রিক নাইজারের সঙ্গেই সম্পর্ক রাখবে আমেরিকা।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিক জোসেপ বরেল লিখেছেন, আফ্রিকার দেশগুলি যে বিবৃতি দিয়েছে, ইইউ তার সঙ্গে সহমত। দ্রুত প্রেসিডেন্টের মুক্তির দাবি করেছেন বরেল।
নাইজারে একাধিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আছে। আইএস সন্ত্রাসীরাও সেখানে নিয়মিত হামলা চালায়। খুন, অপহরণ, বিস্ফোরণের ঘটনা সেখানে চলতেই থাকে। ফলে ন্যাটোর শান্তিবাহিনী সেখানে মজুত আছে। বেশ কিছু জার্মান সেনা আছে সেখানে। সেনা বিদ্রোহের পর শান্তি বাহিনীর অবস্থান নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। শান্তি বাহিনী আপাতত তাদের ঘাঁটিতে আছে। নাইজারের বিদ্রোহী সেনা তাদের সঙ্গে কী করবে, তা নিয়ে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।