শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১
  • ** জাতীয় ** আমরা জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করেছি : শেখ হাসিনা ** আবারও তিন দিনের ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি ** চুয়াডাঙ্গায় হিট স্ট্রোকে দুই নারীর মৃত্যু ** ইউআইইউ ক্যাম্পাসে ‘কৃত্রিম বৃষ্টি’ নিয়ে তোলপাড় সারাদেশ ** সিলেটে মসজিদে যাওয়ার পথে বজ্রপাতে ইমামের মৃত্যু ** নরসিংদীতে হিট স্ট্রোকে যুবকের মৃত্যু ** সব ধরনের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন : https://www.newsflash71.com ** সব ধরনের ভিডিও দেখতে ভিজিট করুন : youtube.com/newsflash71 ** লাইক দিন নিউজফ্ল্যাশের ফেসবুক পেইজে : fb/newsflash71bd **


পাকিস্তানে ভোটগ্রহণ শুরু, মোবাইল পরিষেবা বন্ধ

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ১৪:২৬

ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনের (১৬তম জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচন) ভোটগ্রহণ চলছে। স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় শুরু হয় ভোট গ্রহণ। বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে এই ভোট গ্রহণ। ভোট গ্রহণের জন্য পাকিস্তাজুড়ে ৯০ হাজার ৬৭৫টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। খবর ডনের।

পাকিস্তানে ১৬তম জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে নেটওয়ার্ক সেবা স্থগিত করেছে দেশটির সরকার। নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে করাচি, লাহোর এবং পেশওয়ারে নেটওয়ার্ক সেবা বন্ধ করা হয়েছে।

সব মিলিয়ে ১৭ হাজার ৮১৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এই নির্বাচনে। এর মধ্যে ১২ হাজার ৬৯৫ জন প্রাদেশিক পরিষদের আসনে এবং ৫ হাজার ১২১ জন জাতীয় পরিষদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। প্রার্থীদের ১৬ হাজার ৯৩০ জন পুরুষ, ৮৮২ জন নারী এবং চারজন ট্রান্সজেন্ডার রয়েছেন।

ভোটাররা জাতীয় পরিষদে ২৬৬ জন প্রার্থীকে নির্বাচিত করবেন যারা পরে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের মাধ্যমে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করবেন। পাশাপাশি ভোটাররা তাদের নিজ নিজ প্রাদেশিক পরিষদে প্রতিনিধিও নির্বাচন করবে। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের একই প্রক্রিয়ায় প্রাদেশিক প্রধান নির্বাহীদের নির্বাচন করবে ভোটাররা।দুটি বিধানসভার প্রতিটির জন্য ভোটাররা একটি করে মোট দুইটি ভোট দেবেন।

দেশটিতে মোট নিবন্ধিত ভোটারের সংখ্যা প্রায় ১২ কোটি ৮০ লাখ জন। এর নধ্যে ৩৫ বছরের কম বয়সী ভোটার আছেন ৫ কোটি ৬০ লাখ এবং ৩৬ থেকে ৪৫ বছর বয়সসীমার মধ্যে আছেন ২ কোটি ৯০ লাখ ভোটার। অর্থাৎ, পাকিস্তানের তরুণ প্রজন্ম এই নির্বাচনের ফলাফলকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে, নির্বাচন সামনে রেখে গতকাল বুধবার বেলুচিস্তান প্রদেশে ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রায় ৩০ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিতের অঙ্গীকার করেছে।

নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক অস্থিরতা, ইমরান খানকে সাজা প্রদান, তাঁর দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতাদের আদালতের বারান্দায় ছোটাছুটি ও দলীয় প্রতীক কেড়ে নেওয়া—এমন নানা বিষয় আলোচনায় রয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো সমান সুযোগ (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) পায়নি।

রয়টার্স ও ডন বলছে, কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থিত প্রার্থী ও পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন) প্রার্থীদের মধ্যে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দল গত জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল। তবে এবারের প্রেক্ষাপট পুরো ভিন্ন।

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের দলীয় প্রধান ইমরান খানসহ শীর্ষস্থানীয় অনেক নেতা কারাবন্দী। দলীয় প্রতীকে ভোট করতে পারছে না পিটিআই। এ পরিস্থিতি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের লড়াইয়ে আছেন দলটির নেতারা। আজকের ভোটের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত থাকার ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা। ভোটে হস্তক্ষেপ হতে পারে, সেটা মাথায় রেখেই কৌশল সাজানোর কথাও বলেছেন পিটিআই কর্মী–সমর্থকেরা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনে কে আসলে বিজয়ী হবেন তা স্পষ্ট না হলেও এটি নির্ধারণে পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর ক্ষমতাধর জেনারেলরা বেশ বড় ভূমিকা রাখতে পারেন। স্বাধীনতার পর থেকে গত ৭৬ বছরে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশটিতে আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে। তবে গত বেশ কয়েক বছর ধরে তারা দাবি করে, সামরিক বাহিনী রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করে না।

কলামিস্ট আব্বাস নাসির বলেন, ‘নির্ধারক ফ্যাক্টর হলো শক্তিশালী সামরিক বাহিনী এবং এর নিরাপত্তা সংস্থাগুলো কোন প্রার্থীর দিকে আছে। শুধুমাত্র পিটিআই-এর পক্ষে বিপুল ভোটই ইমরানের এই দলটির ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে।

ইমরান খান বিশ্বাস করেন, তার দলকে অস্তিত্বহীন করার চেষ্টার জন্য চলমান ক্র্যাকডাউনের পেছনে সেনাবাহিনী আছে। অন্যদিকে বিশ্লেষক এবং বিরোধীরা বলছেন, সেনাবাহিনীর জেনারেলরা নওয়াজ শরিফকে সমর্থন করছেন।

পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে মোট আসন ৩৩৬টি। এর মধ্যে ২৬৬ আসনে সরাসরি ভোট হয়। আর ৭০টি আসন সংরক্ষিত। এর মধ্যে ৬০টি আসন নারীদের ও ১০টি আসন অমুসলিম প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত।সরকার গঠন করতে কোনও দল বা জোটকে কমপক্ষে ১৬৯টি আসনে জয় নিশ্চিত করতে হবে।

এ দিকে বুধবার বেলুচিস্তান প্রদেশে দু’টি বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির ইংরেজি ভাষার দৈনিক ডন। এ ঘটনা আজ বৃহস্পতিবার ভোটের দিনের নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। জাতীয় নির্বাচন ঘিরে গত কয়েক মাসে পাকিস্তান জুড়ে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা অনেক বেড়ে গেছে।

বুধবার প্রথম হামলাটি হয় বেলুচিস্তান প্রদেশের পিশিন জেলায় একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কার্যালয়ের কাছে। দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি হয় আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী কিল্লা সাইফুল্লাহ শহরে প্রাদেশিক রাজনৈতিক দল জামিয়াত উলামায়ে ইসলাম (জেইউআই) এর একটি কার্যালয়ের কাছে।

প্রথম হামলায় ১৪ জন নিহত এবং প্রায় ৩০ জন আহত হন বলে জানান পিশিন জেলার ডেপুটি কমিশনার জুম্মা দাদ খান। কিল্লা সাইফুল্লাহর বিস্ফোরণে ১২ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন শহরের ডেপুটি কমিশনার ইয়াসির বাজারি। এখন পর্যন্ত দু’টি হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top