ইসরায়েলি হামলায় আরও ৭০ ফিলিস্তিনি নিহত, দুর্ভিক্ষের মুখে গাজা
Nasir Uddin | প্রকাশিত: ১১ জুন ২০২৫, ১১:০১

অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এক দিন আরো অন্তত ৭০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজার চিকিৎসা সূত্রে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে মঙ্গলবার (১০ জুন) ভোর থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত চালানো হামলায় তারা নিহত হয়। এতদের মধ্যে ক্ষুধার্ত ত্রাণ প্রত্যাশীরাও রয়েছেন। জাতিসংঘ বলছে, দুর্ভিক্ষ গাজার পুরো জনগণকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।
মঙ্গলবার গাজার কেন্দ্রীয় অংশে ইসরায়েলনিয়ন্ত্রিত নেতসারিম করিডোরের কাছে ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের মানুষের ওপর গুলি চালায় ইসরায়েলি সেনারা। গাজা সরকারের তথ্য অফিস জানায়, এতে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২০০ জন। নিহতদের মধ্যে ১২ বছরের এক শিশুও রয়েছে। শিশুটির নাম মোহাম্মদ খলিল আল-আথামনেহ।
এই ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রগুলো পরিচালনা করছে ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ) নামের একটি বিতর্কিত সংস্থা, যার কার্যক্রম ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে চলছে এবং এটি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রিত এলাকায় কাজ করছে।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় জনগণ এই বিতরণ কেন্দ্রগুলোকে ‘মানব কসাইখানা’ বলে অভিহিত করেছেন। জিএইচএফ কার্যত একটি ‘মরণ ফাঁদে’ পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ।
গাজা সরকারের তথ্য অফিস এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জিএইচএফ এখন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক ভয়ঙ্কর হাতিয়ার। যারা ত্রাণ দেওয়ার নামে নিরস্ত্র ও ক্ষুধার্ত মানুষদের টেনে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে সেখানে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এসব হামলা চালানো হয়েছে বিভিন্ন দিক থেকে। ড্রোন, ট্যাংক ও স্নাইপার ব্যবহার করে এসব বিচ্ছিন্ন ত্রাণকেন্দ্রে অভিযান চালাচ্ছে ইসরাইলি সেনারা। আজ্জুম বলেন, যা হচ্ছে, তা মূলত মানবিক সহায়তা ব্যবস্থাকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করার এক প্রক্রিয়া।
অন্যদিকে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ মঙ্গলবার আবারও সতর্কবার্তা দিয়ে জানিয়েছে, গাজায় মানবিক সংকট ‘অভূতপূর্ব হতাশার পর্যায়ে’ পৌঁছেছে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, গত মে মাসের শেষ সপ্তাহে পাঁচ বছরের কম বয়সি অন্তত দুই হাজার ৭০০ শিশুকে চরম অপুষ্টিতে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। আর তাই দ্রুত মানবিক সহায়তা পুনরায় শুরু করার আহ্বানও জানিয়েছে তারা।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে ইসরাইল গাজায় কার্যত কঠোর অবরোধ আরোপ করে রেখেছে। জিএইচএফের মাধ্যমে অল্প কিছু সাহায্য ঢুকলেও, বহু অভিজ্ঞ আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় ত্রাণ সংস্থাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে যেসব সংস্থা এক দশকেরও বেশি সময় ধরে গাজার লাখো মানুষের কাছে সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছিল, তাদের কাজ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।