ইরান জাতিসংঘের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি স্থগিত করল

ওলিউল্লাহ তুহিন | প্রকাশিত: ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৩:৩১

সংগৃহীত

জাতিসংঘের পরমাণু প্রকল্প পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ)-এর সঙ্গে পরমাণু সহযোগিতা চুক্তি স্থগিত করেছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচি গত রোববার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

‎আরাগচি বলেন, “আমরা আইএইএ-এর সঙ্গে পরমাণু সহযোগিতা চুক্তি স্থগিত করেছি। তবে জাতিসংঘ যদি এমন কোনো প্রস্তাব দেয় যা ইরানের অধিকার ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সহায়ক হয়— আমরা আবার আলোচনায় ফিরতে প্রস্তুত।”

‎উল্লেখ্য, ১৯৬৮ সালে পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (NPT)-তে স্বাক্ষর করেছিল ইরান। সে সময় দেশটির নেতৃত্বে ছিলেন রাজা মোহাম্মদ রেজা পাহলভী। এই চুক্তির আওতায় ইরান প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তারা কখনও পরমাণু অস্ত্র তৈরি করবে না এবং তাদের পরমাণু কর্মসূচিতে আইএইএকে সহযোগিতা করবে।

‎তবে গত কয়েক মাসে ইরানের সঙ্গে আইএইএ-সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্পর্ক মারাত্মকভাবে অবনতি ঘটেছে। গত ৬ জুন এক বিবৃতিতে আইএইএ জানায়, ইরানের কাছে ৪০০ কেজি ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত রয়েছে, যা ৯০ শতাংশ বিশুদ্ধতায় উন্নীত করলে পরমাণু অস্ত্র তৈরির উপযুক্ত হবে।

‎এই বিবৃতির এক সপ্তাহের মধ্যেই ১২ জুন রাতে ‘দ্য রাইজিং লায়ন’ নামক এক বিমান অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। অভিযানে ইরানের বহু সামরিক ও পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। ১২ দিনের সংঘাতে নিহত হন ইরানের সেনাপ্রধান, সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও কমপক্ষে ১২ জন জ্যেষ্ঠ পরমাণু বিজ্ঞানী। তেহরানের দাবি, তাদের পরমাণু স্থাপনাগুলোরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

‎অবশ্য অভিযানের পর এখন পর্যন্ত ৪০০ কেজি ইউরেনিয়ামের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি, যা নিয়ে জাতিসংঘসহ পশ্চিমা দেশগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

‎‎এই সংঘাত শেষে আইএইএ ইরানের সঙ্গে সংলাপে আগ্রহ দেখালেও, তেহরান জানিয়ে দেয়— তারা আলোচনায় বসতে রাজি হলেও, পরমাণু স্থাপনাগুলো দেখানোর কোনো বাধ্যবাধকতা তারা মানবে না।

‎পরবর্তীতে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকেও ইরান অনড় অবস্থান ধরে রাখে, ফলে আলোচনা ব্যর্থ হয়। এরপর জাতিসংঘ ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

‎রোববারের সাক্ষাৎকারে ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে নতুন করে আলোচনার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আব্বাস আরাগচি বলেন, “আমরা তার প্রয়োজন দেখছি না। ইউরোপের সঙ্গে বৈঠকের আর কোনো ভিত্তি নেই।”

‎বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান-আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সম্পর্কের এই অবনতি মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতায় গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।

‎ইরান জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএ-এর সঙ্গে পরমাণু সহযোগিতা চুক্তি স্থগিত করেছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাগচি জানিয়েছেন, যদি জাতিসংঘ ইরানের স্বার্থরক্ষা করে এমন কোনো প্রস্তাব দেয়, তবে তারা আলোচনায় ফিরবে।

‎এর আগে আইএইএ জানায়, ইরানের কাছে ৪০০ কেজি ৬০% বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে, যা ৯০% বিশুদ্ধতায় পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহার করা সম্ভব। এরপরই ইসরায়েল ‘দ্য রাইজিং লায়ন’ নামে হামলা চালায়, যেখানে ইরানের বহু বিজ্ঞানী ও সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন এবং পরমাণু স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

‎তবে ওই ইউরেনিয়ামের হদিস এখনও মেলেনি।

‎পরবর্তীতে ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে বৈঠক ব্যর্থ হলে জাতিসংঘ ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। আরাগচি জানিয়েছেন, এখন ইউরোপের সঙ্গে আলোচনার আর কোনো প্রয়োজন নেই।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top