রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘ শাটডাউনে টানা দ্বিতীয় দিনে ১,৪০০ ফ্লাইট বাতিল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিত: ৯ নভেম্বর ২০২৫, ১১:২৬

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘ সরকারি অচলাবস্থা বা শাটডাউনের প্রভাবে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো শনিবার (৮ নভেম্বর) বাতিল হয়েছে ১ হাজার ৪০০টিরও বেশি ফ্লাইট। এছাড়া আরও কয়েক হাজার ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

রোববার (৯ নভেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অচলাবস্থা দ্বিতীয় দিনে গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে ১ হাজার ৪০০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং সাইট ফ্লাইটঅ্যাওয়ার জানিয়েছে, ওইদিন আরও প্রায় ৬ হাজার ফ্লাইট বিলম্বিত হয়। শুক্রবার বিলম্বিত ফ্লাইটের সংখ্যা ছিল ৭ হাজারের বেশি।

এর আগে সপ্তাহের শুরুতে মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) জানিয়েছিল, বেতন ছাড়াই কাজ করা বিমান নিয়ন্ত্রকদের ক্লান্তি দেখা দেওয়ায় দেশের সবচেয়ে ব্যস্ত ৪০টি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো হবে।

গত ১ অক্টোবর শুরু হওয়া এই অচলাবস্থা এখনো অব্যাহত রয়েছে। কংগ্রেসে অর্থায়ন নিয়ে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের দ্বন্দ্ব এখনো মেটেনি। শনিবার ছিল মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘ অচলাবস্থার ৩৯তম দিন।

এরই মধ্যে শাটডাউনের অবসান ঘটিয়ে সরকার পুনরায় চালু করতে সিনেটররা সপ্তাহান্তেও আলোচনায় ব্যস্ত রয়েছেন। এদিকে খাদ্য সহায়তা, বিমান চলাচল ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় এর প্রভাব সাধারণ আমেরিকানদের জীবনেও পড়ছে।

শনিবার এক বিবৃতিতে আমেরিকান এয়ারলাইনস ওয়াশিংটনের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে,

“অচলাবস্থা শেষ করতে অবিলম্বে সমাধানে পৌঁছান।”

বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শাটডাউনের মধ্যে নিউ জার্সির নিউয়ার্ক লিবার্টি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে দেখা গেছে সবচেয়ে দীর্ঘ অপেক্ষার সময়। স্থানীয় সময় শনিবার বিকেল পর্যন্ত সেখানে ফ্লাইটগুলো গড়ে চার ঘণ্টার বেশি দেরিতে পৌঁছাচ্ছিল, আর ছেড়ে যাওয়া ফ্লাইটগুলোও দেরি করছিল প্রায় দেড় ঘণ্টা।

সবচেয়ে বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে

  • শার্লট/ডগলাস ইন্টারন্যাশনাল,

  • নিউয়ার্ক লিবার্টি ইন্টারন্যাশনাল,

  • এবং শিকাগো ও’হেয়ার ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে।

এফএএ জানিয়েছে, শনিবার বিকেল পর্যন্ত জন এফ কেনেডি ইন্টারন্যাশনাল, হার্টসফিল্ড-জ্যাকসন আটলান্টা ইন্টারন্যাশনাল ও লা গার্ডিয়া এয়ারপোর্ট থেকে ফ্লাইট ছাড়তে যথাক্রমে তিন ঘণ্টা, আড়াই ঘণ্টা ও এক ঘণ্টা দেরি হয়েছে।

পরিবহন মন্ত্রী ডাফি এক্স-এ লিখেছেন,

“ব্যস্ত বিমানবন্দরগুলোয় ব্যক্তিগত জেটের সংখ্যা কমানো হয়েছে। তাদের ছোট বিমানবন্দর ব্যবহার করতে বলা হয়েছে, যাতে বাণিজ্যিক ফ্লাইটের চাপ কিছুটা কমে।”

এফএএ জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিনে পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যেতে পারে। পরিকল্পনা অনুযায়ী

  • শুক্রবার ৪ শতাংশ,

  • ১১ নভেম্বর ৬ শতাংশ,

  • ১৩ নভেম্বর ৮ শতাংশ,

  • এবং ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত ১০ শতাংশ ফ্লাইট বাতিলের পরিকল্পনা রয়েছে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, এই কাটছাঁট নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয়। বেতন ছাড়া কাজ করায় বিমান নিয়ন্ত্রকদের মধ্যে ক্লান্তি ও অনুপস্থিতি বেড়েছে। অনেকে অসুস্থতার অজুহাতে ছুটি নিচ্ছেন বা নিত্যপ্রয়োজন মেটাতে অতিরিক্ত কাজ করছেন।

এছাড়া ট্রান্সপোর্টেশন সিকিউরিটি এজেন্সি (টিএসএ)-এর ৬৪ হাজার কর্মীরও বেশিরভাগ বেতন পাচ্ছেন না, যা বিমানবন্দর নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলছে।
২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রশাসনের সময়কার অচলাবস্থায় টিএসএ কর্মীদের প্রায় ১০ শতাংশ বেতন ছাড়া কাজ না করে ঘরে অবস্থান করেছিলেন।



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top