কোটালীপাড়ায় নৌকার হাটে করোনার থাবা
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থেকে | প্রকাশিত: ১৪ জুলাই ২০২১, ২৩:০২
নিম্ন জলাভূমি বেষ্টিত গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা। এ উপজেলার বিল অঞ্চলের মানুষের বর্ষা মৌসুমে চলাচলের একমাত্র বাহন নৌকা। তাই প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে এ উপজেলায় নৌকার কদর বেড়ে যায়। আর এই নৌকা বেচাকেনার জন্য এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে নৌকার হাট বসে।
এ সময়ে হাটগুলোতে নৌকা বেচাকেনার ধূম পড়ে যায়। কিন্তু এ বছরের চিত্র ভিন্ন। নৌকা নিয়ে বিক্রেতারা হাটে বসে থাকলেও ক্রেতাদের সমাগম নেই বললেই চলে। করোনার কারণে ক্রেতারা হাটে আসছেন না বলে জানিয়েছেন এ সকল বিক্রেতা।
এ উপজেলার ঘাঘর, কালিগঞ্জ, রামনগর, ধারাবাশাইল, শুয়াগ্রাম, ভাঙ্গারহাট, পিড়ারবাড়িসহ প্রায় ১০/১৫টি ছোট বড় হাটে নৌকা বিক্রি হয়। ছোট বড় মাঝারি নৌকার প্রকারভেদে দাম কম বেশী হয়ে থাকে। অন্যান্য বছর প্রতিটি নৌকার দাম ৫হাজার থেকে ১৫হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এ বছর নৌকার দাম গত বছরের তুলনায় অনেক কম। যার ফলে নৌকা তৈরির কারিগররা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন বলে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
উপজেলার কলাবাড়ি ইউনিয়নের হিজলবাড়ি গ্রামে কৃষক রমেশ হাজরা বলেন, কালিগঞ্জ বাজারে গত বছর যে নৌকাটি ৫হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে এ বছর সেই ধরণের একটি নৌকা ২/৩হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। করোনার কারণে এ বছর ক্রেতা অনেক কম। অপরদিকে এ বছর বিলাঞ্চলে বেশী পানি হয়নি। তাই এ বছর নৌকার কদরও কম।
ঘাঘর বাজারের নৌকার ব্যবসায়ী গোপাল বেপারী ও শ্যামল বেপারী বলেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে নৌকা ক্রয় করে এনে আমরা এই বাজারে প্রায় ২০ বছর ধরে নৌকা বিক্রি করি। এই বাজারে কড়াই কাঠের মাঝারি ধরণের নৌকার চাহিদা বেশী। অন্যান্য বছর আমরা প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫টি নৌকা বিক্রি করি। কিন্তু এ বছর করোনার কারণে ক্রেতা না থাকায় দৈনিক এ বাজারে ৩/৪টি নৌকা বিক্রি হচ্ছে।
তারাকান্দর গ্রামের নৌকার কারিগর সুদেব বিশ্বাস বলেন, এ বছর করোনার কারণে নৌকার চাহিদা অনেক কম। আর এই নৌকার চাহিদা কম থাকার কারণে আমরা নৌকা তৈরি করে বসে আছি। বেপারীরা নৌকা ক্রয় করতেন আসছেন না। দু’এক জন বেপারী যারা আসেন তারা আবার বাকিতে নৌকা নিয়ে যান। অনেক বেপারী আমাদের কাজ থেকে নৌকা নিয়ে বিক্রি না হওয়ার কারণে টাকা দিচ্ছেন না। আমরা অনেক কারিগরই ধার দেনা করে লোহা কাঠ কিনে নৌকা তৈরি করেছি। নৌকা বিক্রি না হওয়ার কারণে অনেক কারিগরই এখন সমস্যায় আছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মাহফুজুর রহমান বলেন, করোনার কারণে যে সকল নিন্ম আয়ের মানুষেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সরকার তাদের জন্য বিশেষ প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছেন। নৌকার কারিগর ও ব্যবসায়ীরা এই প্রণোদনার আওতায় থাকবেন।
এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১
বিষয়: কোটালীপাড়া
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।