পদ্মসেতুর নিরাপত্তা রক্ষায়

ফেরী ঘাট সরিয়ে ফেলার দাবী দক্ষিণাঞ্চলবাসীর

মাদারীপুর থেকে | প্রকাশিত: ১৭ আগষ্ট ২০২১, ২২:৫৭

স্বপ্নের পদ্মসেতু নিরাপদ রাখা ও যাত্রীদের দুর্ভোগ কমানোর জন্য ফেরী ঘাট সরিয়ে ফেলার দাবী দক্ষিণাঞ্চলবাসীর

দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের স্বপ্নের পদ্মাসেতুর পিলার সাথে ৪ দফায় ফেরীর ধাক্কা লাগার কারণে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথটি আলোচনায় উঠে এসেছে।

স্থানীয়রা বলছেন, মাদারীপুরের বাংলাবাজার থেকে ফেরীঘাটটি শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার মাঝিরকান্দি অথবা নাওডোবাতে সরিয়ে নিলে সবচেয়ে নিরাপদ থাকবে পদ্মাসেতু। পাশাপাশি নৌপথের দূরত্ব কমে গিয়ে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমে যাওয়ার পাশাপাশি ফেরীর তেল খরচও অর্ধেকে নেমে আসবে। এতে সরকারের বেচে যাবে কোটি কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছর মাদারীপুরের শিবচরের কাঁঠালবাড়ি থেকে ফেরীঘাটটি আরো এক কিলোমিটার পথ পেছনে এনে বাংলাবাজারে স্থাপন করা হয়। এতে আগের চেয়ে এই নৌপথটির দৈর্ঘ্য বেড়ে যায়। কিন্তু মানুষ পদ্মা সেতুর কাজ দ্রুত গতিতে চলায় নতুন ঘাটে দূরত্ব বাড়লে এই ঘাটটি ব্যবহার করেই দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ পদ্মা পাড়ি দেয়।

কিন্তু গত এক মাসে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতুর পিলার সাথে ৪ দফায় বিভিন্ন ফেরীর ধাক্কা লাগার কারণে এই নৌপথটি নতুন করে আলোচনায় উঠে আছে। তাই পদ্মা সেতুকে নিরাপদ রাখার জন্য ঘাটটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সম্ভাব্য নতুন নৌপথ পরিদর্শন করেন।

প্রাথমিক ভাবে মাদারীপুরের বাংলাবাজার থেকে ঘাটটি সরিয়ে শরীয়তপুরেরর জাজিরা উপজেলার মাঝিরকান্দিতে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে আসে। স্থানীয়রা বলছেন, পদ্মাসেতু নিরাপদ রাখতে অতিদ্রুত বাংলাবাজার থেকে ঘাট সরিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন। যতই দেরী হবে, ততোই ঝুঁকির মুখে থাকবে পদ্মা সেতু।

মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মাসুদ পারভেজ বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের সেতুর এই পদ্মা সেতু। সেতুটি যাতে নিরাপদ থাকে, তার জন্য আরো আগেই এই ঘাটটি সরিয়ে ফেরী উচিত ছিল। ঘাটটি মাঝির কান্দি অথবা নাওডোবায় স্থানান্তর করে শিমুলিয়া হয়ে ফেরী পারাপার করা হয়; তাহলে নৌপথের দূরত্ব বর্তমান দূরত্বের চেয়ে অর্ধেকে নেমে আসবে। আর ফেরীর তেল খরচও কমে যাবে অর্ধেক। এতে সরকারের প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা খরচ কম হবে। আমি দাবী করছি, দেরী হলেও যখন প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে, ঘাট সরিয়ে ফেলার; তাই আর দেরী না করে সরিয়ে ফেলা হোক।

মাদারীপুর সচেতন নাগরিক কমিটির সদস্য এম.আর.মুর্তজা বলেন, ফেরী ঘাটটি গতবছরই কাঠালবাড়ি থেকে সরিয়ে আরো এক কিলোমিটার পেছনের দিকে সরিয়ে না এনে পদ্মা সেতুর পূর্বপাশে কোন একটি স্থানে নিলে খুব ভালো হতো। এতে সেতু নিরাপদ থাকতো, যাত্রীদের দুর্ভোগ কমতো এমনকি ফেরীর জ্বালানি খরচও কমে যেত। তারপরও সরকারের উচিত পদ্মা সেতুর নিরাপত্তা ও যাত্রীদের পথ কমে আসবে কোন স্থানে ঘাট নিলে সেই ব্যবস্থা করা।

বাংলাবাজার ফেরী ঘাটের বিআইডব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ঘাট সরিয়ে নেওয়ার এখনো অফিসিয়ালি কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে পদ্মা সেতু নিরাপদ রাখতে ঘাট সরিয়ে ফেলার আলোচনা চলছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যেখানে ভাল মনে করবে, সেখানেই ঘাট হবে। আমরা সেখান থেকেই ফেরী চলাচল করাবো। তবে ঘাট সরানোর সিদ্ধান্ত এখনো অফিসিয়ালি আমি শুনিনি। তবে ঘাট সরানোর আলোচনা চলছে বলে মন্তব্য করেন৷ তিনি।

এনএফ৭১/এনজেএ/২০২১




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top