সৈয়দপুরে কিশোরীকে ধর্ষণ বিজিবি সদস্যকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

নীলফামারী থেকে | প্রকাশিত: ১ জুলাই ২০২২, ০৬:০২

সৈয়দপুরে কিশোরীকে ধর্ষণ বিজিবি সদস্যকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

নীলফামারীর সৈয়দপুরের এক কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় বিজিবি সদস্য মো. আকতরুজ্জামানকে চার সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আসামিকে অব্যাহতি দেয়া নিম্ন আদালতের আদেশ ৬ মাসের জন্য স্থগিত করেছেন আদালত। বুধবার (২৯ জুন) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি সাহেদ নুর উদদীনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে কিশোরীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট বদরুন নাহার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।

জানা যায়, গত ১৫ জুন নীলফামারীর সৈয়দপুর থেকে এক কিশোরী তার মাকে সঙ্গে নিয়ে হাইকোর্টে আসে ধর্ষণকারীর বিচার চাইতে। বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি সাহেদ নুর উদদীনের হাইকোর্ট বেঞ্চে সে বিচার দাবি করেন। সেদিন সকালে আদালতের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হলে ওই কিশোরী তার মাকে নিয়ে ডায়াসের সামনে এসে দাঁড়ায়। এ সময় আদালত তার কাছে জানতে চান, কী হয়েছে? আপনি কে? আপনি কী বলতে চান? আপনার সঙ্গে উনি কে? তখন ওই কিশোরী হাইকোর্টকে নিজের পরিচয় দেয়।

ওই কিশোরী আদালতকে বলেন, ‘আমার বয়স ১৫ বছর। উনি আমার মা। আমি ধর্ষণের শিকার। একজন বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) সদস্য আমাকে ধর্ষণ করেছে। কিন্তু নীলফামারীর আদালত তাকে খালাস দিয়েছেন। আমরা গরিব মানুষ, আমাদের টাকা-পয়সা নেই। আমরা আপনার কাছে বিচার চাই।’

এ সময় আদালত ওই কিশোরীর কাছে জানতে চান, তার কাছে কোনো কাগজপত্র আছে কি না? ওই কিশোরী মামলার কাগজ আছে বললে আদালত উপস্থিত আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, এখানে লিগ্যাল এইডের কোনো আইনজীবী আছেন? তখন আদালতে উপস্থিত থাকা লিগ্যাল এইডের প্যানেল আইনজীবী বদরুন নাহার দাঁড়ালে তাকে ওই কিশোরীর মামলাটি সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে নিতে নির্দেশ দেন। পরে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড থেকে কিশোরীর পক্ষে আপিল করা হয়।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২১ নভেম্বর নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের বালাপাড়ার (ব্রাহ্মণপাড়া) ভুক্তভোগি কিশোরীর মা সৈয়দপুর থানায় মেয়েকে ধর্ষনের অভিযোগে প্রতিবেশি বিজিবির ন্যান্স নায়েক মো. আকতারুজ্জামানকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে। অভিযোগে বলা হয়, মেয়েটি তখন স্থানীয় একটি স্কুলের নবম শ্রেনীর ছাত্রী ছিল। ওই বছরের ৯ নভেম্বর রাত থেকে পরদিন কোন এক সময় চেতনানাশক কোন কিছু খাইয়ে তাকে ধর্ষণ করে আকতারুজ্জামান। ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সৈয়দপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাহিদুর রহমান আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে ধর্ষনের কোন আলামত মেলেনি উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও মামলায় তথ্যগত ভূল আছে বলেও আদালতকে জানায় পুলিশ।

এনএফ৭১/আরআর/২০২২




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top