আওয়ামী লীগের তৃণমূলে বড় হচ্ছে বিভেদ দেয়াল

রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:২৭

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের তৃণমূলে বড় হচ্ছে বিভেদ দেয়াল। এ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করেছে দৈনিক সমকাল। শুক্রবার (২৯ মার্চ) গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে:

গেল সংসদ নির্বাচনে নেতাকর্মীর মধ্যে মনোমালিন্যের যে বাঁক বদল হয়েছিল, আসছে উপজেলার ভোটে তা আরও নতুন মাত্রা পাচ্ছে বলে আভাস মিলেছে। আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে যেসব এলাকায় কখনোই মনান্তর ছিল না, সেখানকার নেতাকর্মীরাও হয়ে উঠছেন পরস্পরের চক্ষুশূল।

কোনো কোনো এলাকায় দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) এবং স্বতন্ত্র এমপিরা নিজেদের একক কর্তৃত্ব ধরে রাখতে বিরোধের আগুনে ঘি ঢালছেন। এর সঙ্গে যোগ দিয়েছেন জাতীয় নির্বাচনে দলের মনোনয়নবঞ্চিত গত সংসদের এমপিরা। তারাও দলের ভেতরে নিজেদের বলয় তৈরির কৌশল খুঁজছেন। কোথাও জম্পেশ চলছে ‘দলীয় এমপি বনাম স্বতন্ত্র এমপি’ লড়াই। যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে হেরেছেন, তারাও আছেন গ্রুপিং রাজনীতির অশুভ প্রতিযোগিতায়।

তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, বিএনপির ভোট বর্জনের পটভূমিতে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে গত জাতীয় নির্বাচনে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের উৎসাহ দেওয়ার পর বিবাদে জড়ান স্থানীয় নেতাকর্মীরা। নির্বাচনের পর বেশির ভাগ স্বতন্ত্র এমপি দলে ‘চালকের আসনে’ বসতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এতে করে তাদের সঙ্গে সাবেক এমপিদের লাগছে ঠোকাঠুকি। এ পটভূমিতে দলের দুটি ধারা চলে এসেছে সর্বসমক্ষে।

সাধারণত সংসদের ভোট এলে দলীয় বিরোধ মেটে, এবার হয়েছে উল্টোটা। প্রায় প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় পরিষ্কার দুই বলয়ে, দুই পথে হেঁটেছেন নেতাকর্মীরা। কোনো কোনো এলাকায় ছাইচাপা পুরোনো দ্বন্দ্বও সামনে চলে আসে। বিভিন্ন স্থানে এ বিরোধের অবসান হয় রক্তারক্তি আর খুনাখুনির মতো নির্মমতায়। বিচ্ছিন্ন সংঘাত, হামলা, মামলা-পাল্টা মামলা এখনও চলছে। এ নিয়ে অস্থির, অশান্ত হয়ে আছেন দলের নেতাকর্মীরা।

দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নতুন করে কত যে গ্রুপ তৈরি হচ্ছে, তার কোনো ইয়ত্তা নেই। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যেসব এলাকায় কখনোই বিরোধ ছিল না, সেসব এলাকায়ও গ্রুপিংয়ের রাজনীতি শুরু হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মতো দলের নেতাকর্মীকে ঘায়েল করা হচ্ছে।

সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, কোনোভাবেই দলীয় গ্রুপিং মেনে নেওয়া যায় না। সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, দলের ভেতরে ভুল বোঝাবুঝি ও হাঙ্গামা বাড়ছেই। সংঘাত তৈরি হচ্ছে, এটা কমছে না। রাজশাহীর মেয়র ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ঈদের পর তৃণমূলের সম্মেলন শুরু হবে। আর এর মধ্য দিয়ে নেতাদের মধ্যে দূরত্ব কমে আসবে।

এদিকে গৃহদাহ নিরসনে তৃণমূল নেতাকর্মীরা কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ চাচ্ছেন। এজন্য দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও শুরু করেছেন। জানা গেছে, বিভেদের দেয়াল ভেঙে দলকে সুসংগঠিত ও গতিশীল করতে সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সম্মেলন করার প্রস্তুতি রয়েছে। ঈদের পর এ উদ্যোগ শুরু হতে পারে। পাশাপাশি দেশজুড়ে সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়ানোরও চিন্তা চলছে।

 



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top