নির্বাচনে যত দেরি হবে, ষড়যন্ত্র তত বাড়বে : তারেক রহমান
রায়হান রাজীব | প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:২৩
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, নির্বাচন যত বিলম্বিত হবে, ষড়যন্ত্র তত বাড়তে থাকবে। তাই দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। আজ শনিবার (২৩ নভেম্বর) চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভার্চুয়ালি তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘দেশের নির্বাচন যত দেরি হবে, ততই ষড়যন্ত্র বৃদ্ধি পাবে। জনগণের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারকে হটিয়ে দেওয়া হয়েছে। যার বিরুদ্ধে দেশের লক্ষকোটি মানুষ এক যুগের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করেছে, সেই স্বৈরাচার কিন্তু বসে নেই। সেই স্বৈরাচার তাদের দেশি-বিদেশি প্রভুদের সাথে মিলে ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘নির্বাচন যত দেরিতে হবে, এই দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসুবিধা, এই দেশের ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাব্যবস্থা, এই দেশের কৃষকদের সমস্যা, এই দেশের ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সমস্যা, এই দেশের বিচারব্যবস্থার সমস্যা, এই দেশের প্রশাসনের সমস্যা, যতগুলো সমস্যা এই স্বৈরাচার করে গিয়েছে, তা আরও বৃদ্ধি যাবে। একমাত্র একটি নির্বাচনের মাধ্যমেই সম্ভব ধীরে ধীরে দেশের সমস্যাগুলোর সমাধান করা।’
বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকার নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে সক্ষম মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, তারা (অন্তর্র্বতী সরকার) একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে সক্ষম হলেই প্রকৃত ব্যক্তিগুলো নির্বাচিত হয়ে আসতে পারবেন। যাঁরা সত্যিকার অর্থেই জনগণের কথা বলবেন, জনগণের স্বার্থ নিয়ে চিন্তা করবেন। প্রতিটি সেক্টরের সমস্যা সমাধানের বিষয়ে চিন্তা করবেন। একটি প্রকৃত নির্বাচনের মাধ্যমে যদি প্রকৃত জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হন, তাহলেই একমাত্র সম্ভব।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘দেশবাসী বিএনপিকে দায়িত্ব দিতে চায়। দায়িত্ব নিতে হলে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। দায়িত্ব নেওয়ার মতো নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে।
আগামী দিনে চুয়াডাঙ্গায় কারা নেতৃত্ব দেবেন, সেই নেতা যেমন বাছাই করে নেব, তেমনি আসুন আজ সকলে মিলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই, আমরা যে যেই পর্যায়ের নেতা বা কর্মী হয়ে থাকি না কেন, সেটা বড় কথা না। আপনি একজন বিএনপির কর্মী, আপনি একজন শহীদ জিয়ার সৈনিক। তাই সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। আপনাকে বুঝতে হবে আপনার কাছে আপনার এলাকার মানুষের প্রত্যাশা কী এবং তা অনুধাবন করে কাজ করতে হবে।’
বিএনপির শীর্ষ এই নেতা আরও বলেন, ‘আজকে আমাদের সংগঠনকে গড়ে তুলতে সম্মেলন যেমন প্রয়োজন, প্রকৃত নেতৃত্ব ও ভবিষ্যতের নেতৃত্ব গড়ে তুলতে সম্মেলন যেমন প্রয়োজন, একইভাবে বাংলাদেশকে যদি গড়ে তুলতে হয়, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের যদি পরিবর্তন করতে হয়, সেই কাজ যদি শুরু করতে হয়, আবার যদি আমাদের খাল খনন কর্মসূচি শুরু করতে হয়, আবার যদি শিল্পবিপ্লব শুরু করতে হয়, আবার যদি আমাদের কৃষকের সমস্যার সমাধান করতে হয়, অবশ্যই দরকার প্রকৃত জনপ্রতিনিধি।
যারা দেশের স্বার্থে কথা বলবে, মানুষের কথা বলবে এবং তার জন্য প্রয়োজন নির্বাচন। এই কথাটা পরিষ্কারভাবে আজকে আমাদের তুলে ধরতে হবে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের কাছে। তুলে ধরতে হবে বাংলাদেশের মানুষের কাছে। কারণ, পৃথিবীতে যেসকল গণতান্ত্রিক দেশ আছে, তারা এই গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যমেই ধীরে ধীরে তাদের দেশের অনেক সমস্যার সমাধান করেছে।’
সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন শেষে বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। মহাসচিবসহ নেতারা মঞ্চে আসন গ্রহণের পর জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) পরিবেশনায় দলীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।
উদ্বোধনী বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শেখ মুজিব এ দেশে প্রথম ফ্যাসিবাদের সূচনা করেন। শেখ মুজিব গণতন্ত্রকে হত্যা করেন। আওয়ামী লীগ মানেই চুরি-দুর্নীতি। বিগত আওয়ামী লীগের শাসনামলে একদিকে সন্ত্রাস, অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় বাহিনী পুলিশকে দিয়ে খুন, গুম করা হয়েছে। ছাত্র-জনতার হাত ধরে এ দেশে নতুন সূর্য উঠেছে। সেই সূর্যের আলোয় আলোকিত হতে হবে। এ দেশের মানুষের চাওয়া আর বিএনপির চাওয়া এক। আমরাও চাই তরুণদের হাতে থাকবে রাষ্ট্রের নেতৃত্ব। এ জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
বিষয়:
পাঠকের মন্তব্য
মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।