সান্তাহারে সেচের পানির দাম বেশি চাওয়ায় বিপাকে কৃষকরা

প্রতিনিধি, আদমদীঘি | প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৫:৫৩

সান্তাহারে সেচের পানির দাম বেশি চাওয়ায় বিপাকে কৃষকরা

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহারে সেচের পানির দাম বেশি চাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। নীতিমালার থেকে বিঘা প্রতি চাহিদা করছে দ্বিগুণ। ফলে পানি নিয়ে সংশয়ে চাষীরা।

উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের মালশন ও পাথরকুটা গ্রামের ফসলি মাঠে সেচ পাম্পের দায়িত্বরতদের নামে এমন অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টির দ্রুত পদক্ষেপের জন্য ভুক্তভোগীরা আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।


জানা যায়, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় আমন ও ইরি মৌসুমে চাষাবাদ করেন প্রান্তিক কৃষকরা। এই চাষাবাদের মাধ্যমে তারা জীবিকা নির্বাহ করেন। এ জন্য উপজেলা কৃষিদপ্তর থেকে তাদের নামে তালিকা করে সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয়।

অথচ সেচের পানি ব্যবস্থা নিয়ে কমিটির তেমন গুরুত্ব দেখা যায় না। গুরুত্বহীনতায় পাম্পের মালিকদের নীতিমালা প্রয়োগ করাতে বার্থ্য হন তারা। এ কারনে প্রতি বছর কৃষক পানির মূল্য নিয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হন। জোর পূর্বক নির্ধারিত মূল্যের থেকে ৫০০ টাকা বেশি আবার কখনো দ্বিগুণ টাকা দাবী করেন সেচ পাম্পের দায়িত্বরতরা।

ফলে চাষাবাদ শেষে লাভের মুখ দেখতে পান না কৃষকরা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে সরজমিনে পরিদর্শন করে উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়ন, সদর ইউনিয়ন, সান্তাহার ইউনিয়ন ও সান্তাহার পৌরসভা এলাকায় এমন চিত্র দেখা যায়। সান্তাহার পাথরকুটা গ্রামের বছির উদ্দিন ও আফাজ উদ্দীন জানান, মাঠের জমিতে ইরি মৌসুমে আবাদ করার জন্য সেচের পানি দিতে বলি পাম্বের পরিচালক জনি ও সাজুকে। পানি দেওয়ার আগে বিঘা প্রতি ২৫০০ টাকা দাবী করেন।

অর্থাৎ প্রতি শতকে ৭৬ টাকা নিবে। এর কম হলে পানি দিবে না মর্মে জানিয়ে দেয়। তার কথায় আমরা চিন্তিত হয়ে পড়ি। অথচ গত বছরে প্রতি শতকে ৪২ টাকা করে ১৪০০ টাকা ছিলো। এ বছরে বিঘা প্রতি ১০০০ হাজার টাকা দাম বাড়িয়েছে পাম্প পরিচালকরা। কারন জানতে চাইলে জিনিসপত্র দাম সহ নানা অজুহাত দেখান। সরকার বিধি অনুসারে শতক প্রতি ৪২ টাকা ধরা হয়েছে। কিন্তু কে মানে কার কথা। এমন স্বেচ্ছাচারী আচরণে হতবাক সকলেই।


একই সুরে কৃষক জুলফিকার আলী জানান, চাষাবাদ করে সংসার চলে। বীজ, সার, কীটনাশক ও শ্রমিক খরচ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরপর সেচের বিঘা প্রতি ২৫ শত থেকে ২৭ শত টাকা নেওয়া হচ্ছে। এর আগে ১৫ শত ছিলো। দিন দিন এদের চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে। তাদের চাহিদা মতো টাকা না দিলে জমিতে পানি দিবে না বলেছে। বিকল্প উপায় না থাকায় পানির জন্য এ রকম জিম্মি চাষীরা। এ জন্য আবাদ করতে বিলম্ব হয়।


সেচ পাম্পের পরিচালক জনি ও সাজু জানান, বিদ্যুৎ বিল আসে অনেক। তাছাড়া শ্রমিক খরচ রয়েছে। তাদের বলেছি বিঘা প্রতি ২ হাজার টাকা দিলে লাভ তো দূরের কথা গায়ে গায়ে যাবে। লোকসান করে তো আর পানি দিতে পারি না।


এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজ জানান, সরকারি ভাবে সেচের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এর বেশি নেওয়া যাবে না। কয়েকটি এলাকা থেকে অভিযোগ পেয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top