উত্তরাঞ্চলে পেট্রল পাম্প ধর্মঘট

Nasir Uddin | প্রকাশিত: ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৫:৪৬

ফাইল ছবি

উত্তরবঙ্গের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে অনির্দিষ্টকালের জন্য পেট্রোল পাম্পে ধর্মঘট শুরু হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ বিনা নোটিশে বিভিন্ন পেট্রল পাম্প উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে এই ধর্মঘট ডেকেছে বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য এ ধর্মঘট শুরু হয়। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। 

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউটর্স, এজেন্টস অ্যান্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাপেওএ) এর রাজশাহী বিভাগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব  মো. মিজানুর রহমান রতন।

এতে করে জ্বালানি তেল না পাওয়ার কারণে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে মোটরসাইকেল চালকরা পড়েছেন বিপাকে। যারা ধর্মঘটের খবরে আগাম জ্বালানি তেল সংগ্রহ করেছিলেন তারাই কেবল এখন মোটরসাইকেল চালাতে পারছেন।

মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউটরস, এজেন্টস অ্যান্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন রাজশাহী বিভাগের সভাপতি মো. মিজানুর রহমান রতন ও সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল জলিল স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের পেট্রোল পাম্প মালিকদের জ্বালানি তেল উত্তোলন ও বিপণন বন্ধের আহ্বান জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিনা নোটিশে ও কোনো আনুষ্ঠানিক চিঠি ছাড়া সওজ বিভাগ আকস্মিক উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে। এতে পেট্রোল পাম্প মালিকদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে বৈধ লাইসেন্স মেনে এবং নিয়মিত রাজস্ব প্রদান করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। অথচ এমন আকস্মিক উচ্ছেদ অভিযান অতীতে কখনো দেখা যায়নি। এতে ব্যবসায়ী সমাজের মধ্যে উদ্বেগ ও ভীতি সৃষ্টি হয়েছে।’

নওগাঁর সান্তাহারে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই দুটি পেট্রোল পাম্প উচ্ছেদের প্রতিবাদে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের পেট্রোল পাম্পগুলোতে এ ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের পেট্রোল পাম্প মালিকদের এই ধর্মঘট সফল করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানানো হয়।

রাজশাহী জেলা পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির সভাপতি মনিমুল হক জানান, “ঘোষণা ছাড়া হঠাৎ করেই নওগাঁতে দুটি পেট্রোল পাম্প উচ্ছেদ করা হয়েছে। এতে মালিক সমিতির মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।  যেকোনো সময় আমরা উচ্ছেদের আতঙ্কে রয়েছি।”

তিনি বলেন, “বড় গাড়িগুলো আমাদের কাছ থেকে তেল নেয়। এজন্য সড়কের পাশের সরকারি কিছু জায়গা আমাদের পাম্পের সামনে থাকে। তা লিজ নেওয়া থাকে। কিন্তু ঘোষণা ছাড়াই উচ্ছেদ অভিযান চালালে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো।”

বাপেওএ-র সভাপতি মো. মিজানুর রহমান রতন অভিযানের সমালোচনা করে বলেন, “দেশের জ্বালানি খাত যখন স্থিতিশীল, তখন এ ধরনের অভিযান ব্যবসায়ী সমাজের মধ্যে ভীতি তৈরি করছে। সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার ষড়যন্ত্র চলছে বলে আমাদের আশঙ্কা।”

এদিকে, পেট্রোল পাম্প বন্ধ থাকায় সকাল থেকে অনেক মোটরসাইকেল চালক পাম্পে এসে তেল না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

তারা বলছেন, ঘোষণা ছাড়াই এমন ধর্মঘটে তারা ভোগান্তিতে পড়েছেন।

এনায়েত রহমান নামের এক মোটর সাইকেল চালক বলেন, “আমরা জানতাম না পেট্রোল পাম্প মালিকদের ধর্মঘট চলছে। পেট্রোল পাম্পে এসে দেখি পাম্প বন্ধ। তেল দেওয়া হচ্ছে না। এখন তেল ছাড়া আমরা কীভাবে চলি! আগে জানানো হলে, তাও সেভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যেতো।”




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top