সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৯ কার্তিক ১৪৩২

ফেসবুকে মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ফেনীতে ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে ছয় কিশোর আহত

ফেনী প্রতিনিধি | প্রকাশিত: ৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৬:২০

ছবি: সংগৃহীত

ফেসবুকে মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ফেনীতে ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে ছয় কিশোরকে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করা হয়েছে।
রোববার দুপুরে জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার ঘোপাল ইউনিয়নের নিজকুঞ্জরা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম শামীম, ইমরান হোসেন, আরমান হাসান, রাফি, আরাফাত ও অনিক।
অন্যদিকে, অভিযুক্ত রাহাত উদ্দিন ভূঁইয়া, ফেনী মহিপাল সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি এবং ছাগলনাইয়া উপজেলার বাসিন্দা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন আগে আহতরা তাদের এক বন্ধুর জন্মদিনের অনুষ্ঠানের ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করে।
সেখানে রাহাতের ছোট ভাই ও নিজকুঞ্জরা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাহাদ হোসেন আপত্তিকর মন্তব্য করেন।
এ নিয়ে জানতে চাইলে ফাহাদের সঙ্গে তাদের বাগবিতণ্ডা হয়। পরে ফাহাদ বিষয়টি তার বড় ভাই রাহাতকে জানায়।

একপর্যায়ে রাহাত তার সহযোগীদের নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে ছুরি ও চাপাতিসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়।
এ ঘটনায় বিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

পরে সন্ধ্যায় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি, প্রধান শিক্ষক, স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা ও উভয়পক্ষের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে ঘটনাটি টাকার বিনিময়ে মীমাংসার চেষ্টা করা হয়।
সিদ্ধান্ত হয়, প্রত্যেক আহতকে ১০ হাজার টাকা করে চিকিৎসা খরচ দেওয়া হবে এবং থানায় কোনো অভিযোগ করা হবে না।

এক অভিভাবক বলেন, “সভায় আমাদের বলা হয়েছে এটি বিদ্যালয়ের বিষয়, মামলা না করার জন্য অনুরোধ করা হয়।”

আহত শামীম বলেন,

“আমরা শুধু জানতে চেয়েছিলাম কেন ফেসবুকে বাজে মন্তব্য করেছিল। বিষয়টি সমাধানের জন্য প্রধান শিক্ষকের কক্ষে গেলে রাহাত ও ফাহাদসহ কয়েকজন ছুরি-চাপাতি নিয়ে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।”

স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে বারৈয়ারহাট কমফোর্ট হাসপাতাল ও পরে ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক বলেন,

“সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমান শিক্ষার্থীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি থেকে ঘটনাটি ঘটেছে। উভয়পক্ষের অভিভাবক ও পুলিশ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বিষয়টি সমাধান হয়েছে।”

তবে ভুক্তভোগীদের টাকা দেওয়ার শর্তে মীমাংসার বিষয়ে তিনি অবগত নন বলে দাবি করেন।

অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা রাহাত উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন,

“বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে। আমি একাই বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম, কোনো হামলা হয়নি।”

ছাগলনাইয়ার ঘোপাল তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ লুৎফুল কবির বলেন,

“খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”



বিষয়:


পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top