বরগুনার ‘মিন্নি’র পর দিনাজপুরের ‘ইয়াসমিন’ হচ্ছেন অভিনেত্রী মিম

রাজিউর রাহমান | প্রকাশিত: ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ০৯:৪১

বিদ্যা সিনহা মিম

নজরকাড়া গ্ল্যামারে শোবিজ মাতিয়ে চলেছেন অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিম। বর্তমানে তার আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা। পরপর দুটি সিনেমায় অভিনয় করে খ্যাতি পেয়েছেন। ‘পরাণ’র পর ‘দামাল’ সিনেমাটিও জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছে। সিনেমা দুটোতে অভিনয়ের জন্যই ব্যাপক আলোচনায় আসেন মিম। যা তার ক্যারিয়ারে ঘুরিয়ে দেয় নতুন মোড়।

২০১৯ সালে বরগুনার বহুল আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের ছায়া অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে ‘পরাণ’ সিনেমাটি। রায়হান রাফির পরিচালনায় মিন্নির আদলে অনন্যা চরিত্রে বাজিমাত করেন হালের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা বিদ্যা সিনহা মিম। যা এরইমধ্যে দর্শকহৃদয়ে দাগ কেটেছে। মিন্নির পর এবার দিনাজপুরের ইয়াসমিন হয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবেন এই অভিনেত্রী।

নতুন এই সিনেমার নাম ‘আমি ইয়াসমিন বলছি’। সত্য ঘটনা অবলম্বনে সিনেমাটি নির্মাণ করছেন সুমন ধর। যেখানে মূল চরিত্রে অভিনয় করবেন মিম। সম্প্রতি এতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন এই নায়িকা।

আগামী এপ্রিলে শুরু হতে পারে সিনেমার শুটিং। আর গল্পের প্রয়োজনে দিনাজপুরে হবে এর দৃশ্যধারণ। ঢাকাতেও হবে এর কিছু অংশের কাজ। নতুন এই সিনেমা নিয়ে মিমের বক্তব্য, এই সিনেমার গল্পটা পড়ে কেঁদে ফেলেছিলাম আমি। এমন হৃদয়স্পর্শী, নৃশংস ঘটনা। সেজন্যই এতে যুক্ত হওয়া।’

পরিচালক সুমন ধর বলেন, ইয়াসমিনের পরিবারের কাছ থেকে গল্পটির অনুমতি নিতে প্রায় দুই বছর লেগেছে। প্রথমে তারা রাজি ছিলেন না। সিনেমার মাধ্যমে ইয়াসমিন বেঁচে থাকবে, বিষয়টি বোঝানোর পর অনুমতি দেন ইয়াসমিনের মা। পরিবারের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিয়ে চিত্রনাট্যের কাজ শুরু করেছি।

কী আছে ছবির গল্পে? ফিরে যেতে হবে ২৭ বছর আগে। ১৯৯৫ সালের ২৪ আগস্ট। তার বয়স ছিল আনুমানিক ১৬ বছর। দীর্ঘদিন পর মাকে দেখার জন্য আকুল হয়ে ঢাকা থেকে দিনাজপুরে বাড়ি ফিরছিল ইয়াসমিন। দিনাজপুরের কোচে না উঠতে পেরে পঞ্চগড়গামী কোচে ওঠেন তিনি।

কোচের লোকজন তাকে দিনাজপুরের দশমাইলে নামিয়ে দিয়ে সেখানকার এক চায়ের দোকানে বসতে বলেন। নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ইয়াসমিনকে দিনাজপুর শহরে মায়ের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য খুব ভোরে পুলিশের হাতে তুলে দেয় এলাকাবাসী।

পথে কয়েকজন পুলিশ সদস্য কিশোরী ইয়াসমিনকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের পর হত্যা করে। এরপর তারা ইয়াসমিনের মরদেহ দিনাজপুর শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে দিনাজপুর সদর উপজেলার ব্র্যাক অফিসের পাশে রাস্তায় ফেলে চলে যান।

পরদিন ঘটনা জানাজানি হলে কয়েক হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা দিনাজপুর শহরের রাস্তায় নেমে আসে। সেসময় পুলিশ প্রশাসন এই ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে উল্টো ইয়াসমিনকে ‘যৌনকর্মী’ হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এতে আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন দিনাজপুরের প্রতিবাদী জনতা। বিক্ষোভে ফেটে পড়েন দিনাজপুরের সর্বস্তরের মানুষ। সেসময় শহরের বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ। ফলে সামু, কাদের ও সিরাজসহ নাম না জানা ৭ জন নিহত হন। আহত হয় ৩০০’র বেশি মানুষ। ফলে প্রতিবাদের ফুলকি ছড়িয়ে যায় গোটা দেশে।




পাঠকের মন্তব্য

মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Top